এক চার্জে ৭০ কিমি, হাইফাই ই-সাইকেল বানিয়ে নজির নদিয়ার যুবকের

শর্মিষ্ঠা চ্যাটার্জী : দীর্ঘ দু’বছর যাবৎ লকডাউনের কারণে একদিকে মানুষের রুজিরোজগার হ্রাস পেয়েছে সাথে সাথে অন্যদিকে পেট্রোপণ্যের ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে মধ্যবিত্তের পকেটে টান পড়ছে। কেউ কেউ তো বিকল্প হিসেবে মোটর সাইকেল বাদের খাতায় রেখে সাইকেলেই কাজ চালাচ্ছেন। একদিকে নেই রোজগারের আশা আর তারসাথে মূল্যবৃদ্ধি, জেরবার মানুষজন। কিন্তু এই মুশকিল আসান করতে নদীয়ার শুভময়ের তৈরি ই-সাইকেল বহুলাংশে কাজে দেবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

নদীয়ার বগুলা নামের এক গ্রামের ছেলে যাঁকে ভাবিয়ে তুলেছিল এই বর্তমান পরিস্থিতি তার যেমন ভাবা তেমন কাজ। মধ্যবিত্তকে একটু পেট্রোপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি থেকে রেহাই দিতে তিনি নিজের প্রযুক্তিগত বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে তৈরি করে ফেলেছেন ই-সাইকেল। শুভময় আবার তাঁর নিজের তৈরি এই সাইকেলের নাম দিয়েছেন সুপার ক্রাফড্ সোলার ইলেকট্রিক বাইক। এরপর জেনে নেওয়া যাক এই সোলার বাইকের প্রধান বিশেষত্ব গুলি কি কি।

সৌরশক্তি চালিত এই সাইকেলের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো একবার চার্জ আর চিন্তা নেই একেবারে ৭০ কিমি পর্যন্ত রাস্তা অনায়াসে যাওয়া যাবে এই সাইকেলে। শুভময়ের তৈরি এই সাইকেলে ইতিমধ্যেই তাঁর চেনা পরিচিতরা চেপেছেন এবং তাঁরা সবাই খুব সন্তুষ্ট। পেটেন্টের আবেদনও করে ফেলেছেন শুভময়।

টপ গ্রেডেড লিথিয়াম সেল দিয়ে তৈরি এই ই সাইকেলটি। এছাড়াও রয়েছে মোটা সুপার ক্রাফড টায়ার যা সাইকেল টিকে রাস্তার সাথে জোর করে আঁকড়ে ধরে রাখবে। ফ্রন্ট অ্যাক্সিলারেশন সিস্টেমের মাধ্যমে ৭ টি গিয়ার রয়েছে ফলে প্রতি ঘন্টায় ৪৫ কিমি বেগে চালানো যায় এই সাইকেল। সাইকেলের সামনের ভাগে হাতলে রয়েছে কতকগুলি সুইচ ও মিটার। ডিজিটাল মিটার এবং স্পিডোমিটার দুই রকমের মিটার রয়েছে এই সাইকেলে। এছাড়াও সৌরশক্তিতে যেহেতু চার্জ হয় তাই ব্যাটারির অবস্থান নির্ণয়ে রয়েছে ব্যাটারি ইন্ডিকেটর। টেম্পারেচার মিটার এবং সেকেন্ডারি স্পিড ইন্ডিকেটর রয়েছে। সবথেকে আকর্ষনীয় জিনিসটি হলো পেছনে রয়েছে ব্লু টুথ ব্যাক লাইট যেটি সাইকেল কে লেজার দিয়ে দিক নির্দেশ করতে সাহায্য করবে। রানিং লাইটের সাথে একটি মজবুত হেড লাইটের ব্যবস্থা রয়েছে। ক্রুজ মোডের দ্বারা গতিবেগ মেপে অ্যাক্সিলেটর চেপে লাল সুইচ টিপলেই একই বেগে চলার ক্ষমতা রয়েছে এই সাইকেলের।

সাইকেলের এত সব বিশেষত্ব থাকার কারণে শুভময়ের আশা যারা সাইক্লিং করে থাকেন তাদের জন্য যথেষ্ট সহায়ক হবে এই সাইকেল। এছাড়াও এই সাইকেলে সিটি মোড, নরম্যাল মোড এবং স্পিড মোড রয়েছে।

এবারের আচার্য সত্যেন্দ্রনাথ বসু স্মারক স্মৃতি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা ২০২২ এ ৮৪ টি অন্যান্য জিনিসের সাথে শুভময় তাঁর এই সাইকেল নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। তবে শুভময়ের স্বপ্ন অন্য তাঁর ইচ্ছে কর্মসংস্থানের জন্য নদিয়াতে একটি ই সাইকেল হাব বানানো গেলে অনেকের কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়া যেত। তিনি আশাবাদী, ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি ঠিকই কাজে আসবে।