Snake Tongue: সাপের জিভে কি সত্যিই বিষ থাকে, নাকি পুরোটাই গুজব

Prosun Kanti Das

Updated on:

Advertisements

Snake Tongue: সাপের জিভে কি সত্যিই বিষ থাকে? জেনে নিন আসল সত্য। সাপ এক ধরনের সরীসৃপ প্রাণী। এরা নিজেদের শরীরের একটি বিশেষ অংশে বিষ ধারণ করে। আর সেই কারণে মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে আতঙ্ক। সাপের নাম শুনলেই আতঙ্কে কেঁপে ওঠেন সকলে। সব সাপের মধ্যে কিন্তু বিষ থাকে না। বিশেষ কিছু প্রজাতির সাপই বিষ ধারণ করতে সক্ষম। কিন্তু সাপ শরীরের কোন অংশে বীষ ধারন করে? সাপের জীভের (Snake Tongue) স্পর্শে কি মানুষের মৃত্যু হতে পারে? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেতে গেলে বৈজ্ঞানিক কারণগুলো ভালো করে জানা দরকার। আজকের প্রতিবেদনে সেই সম্পর্কে কিছুটা আলোচনা করা হলো।

Advertisements

এখন বর্ষার সময়। আশপাশে বেশ কয়েক প্রজাতির সাপ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। সারা শীতকাল সাপের দেখা মেলে না, শীত ঘুমে কেটে যায় কয়েকটা মাস। কিন্তু গরমকাল থেকে সাপের দেখা পাওয়া যায় এদিক-ওদিক। আর বর্ষাকালে তো কথাই নেই, সাপের উপদ্রব যেন একলাফে অনেকটা বেড়ে যায়। সাপ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আজও একাধিক ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। যে সমস্ত এলাকায় সাপের উপদ্রব খুব বেশি, পুরো বর্ষাকাল সেখানকার মানুষজন আতঙ্কেই কাটিয়ে দেন। সাপের জীভ (Snake Tongue) অন্যান্য প্রাণীদের চেয়ে একটু আলাদা। বেশিরভাগ মানুষের ধারণা ওই জিভেই বিষ বহন করে সাপ। আর জীভের ছোঁয়া লাগলে যে কোন মানুষের মৃত্যু হতে পারে।

Advertisements

সাপের জিভ (Snake Tongue) গঠনগত দিক থেকে একটু আলাদা। জীভের সামনের অংশে কিছুটা কাটা থাকে। ঘন ঘন জিভ বের করতে দেখা যায় সাপকে। আর এই ঘটনা থেকে মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে ভ্রান্ত ধারণাটি। অনেককে বলতে শোনা যায় সাপের জিভে বিষ থাকে বলেই তারা জীবটাকে বেশিক্ষণ ভেতরে রাখতে পারে না। এই সমস্ত কথার আদতে কোন ভিত্তি নেই। সাপের জীভের সাথে বিষ ধারণ করার আদতে কোন সম্পর্কই নেই। প্রথমত সব সাপ বিষ ধারণ করে না। যারা ধারণ করে তাদের শরীরে আলাদা গ্রন্থি রয়েছে বিষ ধারণ করার জন্য। দ্বিতীয়ত সাপের দাঁতের মাধ্যমে এই বিষ অন্য প্রাণীর শরীরে পৌঁছায়। সেই ক্ষেত্রে সাপের দাঁতকে বিষাক্ত বলা যেতে পারে। কিন্তু জীভ বা শরীরের অন্য কোনো অংশ থেকে বিষ ছড়ানোর কোনো রকম সম্ভাবনা নেই।

Advertisements

আরো পড়ুন: বর্ষায় সাপের উপদ্রব থেকে রেহাই পাবেন এই কয়েকটি জিনিস কাছে রাখলে

সাপের বিষেরও তিনটি প্রকারভেদ রয়েছে।
  1. নিউরোটক্সিক: এই বিষ কোন প্রাণীর শরীরে প্রবেশ করলে সরাসরি সেই প্রাণীটির স্নায়ুতন্ত্রের উপর প্রভাব ফেলে। আহত ব্যক্তির পক্ষাঘাতের সম্ভাবনা দেখা যায়।
  2. হেমোটক্সিক: এই বিষ কোন প্রাণীর শরীরে ঢুকলে তা তৎক্ষণাৎ রক্ত ক্ষরণ বৃদ্ধি করে। এবং রক্তের কোষগুলিকে ধ্বংস করতে থাকে। অর্থাৎ একদিক থেকে রক্তক্ষরণ হবে, অন্যদিকে উৎপাদিত রক্ত নষ্ট হতে থাকবে।
  3. সাইটোটক্সিক: এই বিষটি আহত প্রাণীটির কোষগুলিকে প্রভাবিত করে। প্রত্যেকটি টিস্যুকে ধ্বংস করে দেয় এই বিষ।
    তিন ধরনের বিষের মধ্যে যেকোনো একটি প্রবেশ করলেই আহত প্রাণীটির মৃত্যু হতে পার। সাপের বিষ দ্রুতগতিতে আহত প্রাণীর দেহে ছড়াতে থাকে। তাই কখনো যদি সাপের কামড়ে আহত হয়ে থাকেন তাহলে কোন প্রকার ঘরোয়া টোটকা ব্যবহার না করে নিকটবর্তী হাসপাতাল অথবা কোন বিশেষজ্ঞের সহায়তা নিন।
সাপকে নিয়ে একাধিক ভুল ধারণা রয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। এইসব কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে আসা উচিত বৈজ্ঞানিক যুক্তির মাধ্যমে।
  1. সাপের শরীরে বিষ থাকে বলে আমরা সাপ দেখলেই ভয় পাই, কিন্তু সব সাপের শরীরে বিষ থাকে না। তাই সাপ দেখলেই ভয় পাওয়ার কারণ নেই।
  2. সাপ হঠাৎ করে কাউকে আক্রমণ করে না। প্রাণ বাঁচাতে শত্রুপক্ষের উপর ঝাপিয়ে পড়ে।
  3. সাপের জিভ (Snake Tongue) বা শরীর স্পর্শ করলেই মৃত্যুর কোন প্রকার সম্ভাবনা নেই।

এই সমস্ত ভ্রান্ত ধারণা গুলি ঝেড়ে ফেলে বৈজ্ঞানিক তথ্য অনুযায়ী এগিয়ে চলা উচিত আমাদের।

Advertisements