নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারতের নাম বিশ্বের দরবারে স্বর্ণাক্ষরে লিখেছে চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan 3)। ইসরোর (ISRO) তৃতীয়বারের চন্দ্রাভিযান শুধু ভারতকে চতুর্থ দেশ হিসাবে চাঁদের মাটিতে সফলভাবে অবতরণ করিয়েছে এমন নয়, এর পাশাপাশি ভারতকে প্রথম দেশ হিসাবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করিয়েছে। এমন কৃতিত্ব অর্জন সত্যিই গর্বের।
চন্দ্রযান-৩ উৎক্ষেপণের পর গত ২৩ আগস্ট চাঁদের মাটিতে সফলভাবে অবতরণ করে ল্যান্ডার বিক্রম (Lander Vikram) এবং রোভার প্রজ্ঞান (Rover Pragyan)। এরপর তারা পরিকল্পনা অনুযায়ী নিজেদের কাজ চালাই এবং ২ সেপ্টেম্বর প্রথম স্লিপ মোডে পাঠানো হয় প্রজ্ঞানকে। পরে ৪ সেপ্টেম্বর স্লিপ মোডে যায় বিক্রম। মূলত চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অন্ধকার নেমে আসায় তাদের স্লিপ মোডে পাঠানো হয়। তবে ইসরোর বিজ্ঞানীরা পুনরায় তাদের ঘুম থেকে তোলার পরিকল্পনা আগেই নিয়েছিলেন।
ইসরোর বিজ্ঞানীদের সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে তাদের ঘুম ভাঙ্গানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। বিক্রম এবং প্রজ্ঞানকে যদি ঘুম থেকে তোলা সম্ভব হয় তাহলে তা ভারতীয় মহাকাশ গবেষণাগারের বিজ্ঞানীদের কাছে ডবল প্রফিট হয়ে দাঁড়াবে। কেননা এর ফলে নতুন করে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হবে এবং আরও অনেক তথ্য ইসরোর হাতে আসবে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত বিক্রম এবং প্রজ্ঞানকে ঘুম থেকে তোলা সম্ভব হয়নি। এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে আদৌ কি তাদের ঘুম থেকে তোলা যাবে? এই নিয়েই এবার মুখ খুললেন ইসরো প্রধান এস সোমনাথ (S. Somanath)।
ইসরো প্রধান এস সোমনাথ জানিয়েছেন, “চন্দ্রযান-৩ কে পুনরায় জাগিয়ে তোলার ক্ষেত্রে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আর সেই সকল সীমাবদ্ধতা জড়িয়ে রয়েছে এর যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে। এই মুহূর্তে সেটি জেগে উঠবে কিনা তা নির্ভর করছে যন্ত্রপাতিগুলির ক্ষমতার উপর। হপ এক্সপিরিমেন্টের মাধ্যমে এই মিশন থেকে দ্বিগুণ লাভবান হয়েছি আমরা। অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে এসেছে। আমরা সব সময় অন্যদের থেকে আলাদা পথে হেঁটেছি এবং নতুন নতুন জিনিস অন্বেষণ ও পরীক্ষা করেছি।”
এর পাশাপাশি তিনি পুনরায় ঘুম থেকে তোলার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন রেখেই দিয়েছেন এবং জানিয়েছেন, “ফের জেগে ওঠার ক্ষেত্রে বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। জ্বালানি বেঁচে যাওয়ার অর্থ এই নয় যে আবার হপ এক্সপেরিমেন্ট করা যাবে। কারণ দক্ষিণ মেরুতে যেভাবে ঠান্ডা পড়ে তাতে জ্বালানি বেঁচে থাকলেও তা জমে যেতে পারে এবং তাকে পুনরায় তরলে পরিণত করার ক্ষেত্রে প্রচুর পরিমাণ শক্তির প্রয়োজন। অনেক সময় তা করা সম্ভব হয়না। প্রোপালশন সিস্টেম ফেল করে যেতে পারে। ইলেকট্রনিক সার্কিটগুলি প্রচন্ড ঠান্ডায় জমে যেতে পারে এবং সেগুলির ক্ষতি হতে পারে। আবার ব্যাটারি কর্মক্ষম অবস্থায় নাও থাকতে পারে।