Brunei Tax System: বিশ্বে এমন কিছু দেশ আছে যেখানে বসবাস করলে আপনাকে কখনওই আয়কর দিতে হবে না! এমনই এক আশ্চর্য দেশ হলো ব্রুনেই। এখানে নেই কোনও আয়কর, নেই ভ্যাট বা জিএসটির ঝামেলা। চাকরি বা ব্যবসা করলেও এক টাকাও কর দিতে হবে না। এমনকি দৈনন্দিন কেনাকাটায়ও করের কথা ভাবতে হয় না। ব্রুনেই (Brunei Tax System) যেন এক অর্থনৈতিক স্বর্গরাজ্য। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই দেশের অর্থনীতি কীভাবে চলে? এর পেছনে লুকিয়ে আছে এক চমকপ্রদ গল্প।
ব্রুনেইয়ের (Brunei Tax System) অর্থনৈতিক মডেল সম্পূর্ণ আলাদা। দেশের মূল আয়ের উৎস হলো তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস। বিশ্বের অন্যতম তেল সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে, ব্রুনেইয়ের অর্থনীতি নির্ভর করে তেল থেকে আসা বিশাল আয়ের উপর। এই তেল ও গ্যাস শিল্পের বড় বড় কোম্পানিগুলিই কেবল কর প্রদান করে। আর সেই করের মাধ্যমে দেশের সরকার সব ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ চালিয়ে যায়। ব্রুনেইয়ের মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনগুলো তাদের সম্পত্তি ভাড়া দিয়ে রাজস্ব আয় করে, ফলে সাধারণ মানুষকে কোনও ধরনের করের বোঝা বইতে হয় না। শুধু কর্পোরেট সংস্থাগুলিই এখানে কর দেয়।
বিশ্বে এমন আরও কিছু দেশ আছে, যেখানে আয়কর নেই। সৌদি আরব, আরব আমিরশাহি, বাহরিন, বাহামা, ভানুয়াতুর মতো দেশগুলোও আয়কর মুক্ত। কিন্তু ব্রুনেই বাকিদের থেকে আলাদা কারণ এখানে আয়করের পাশাপাশি পরোক্ষ করেরও তেমন কোনও উপস্থিতি নেই। যদিও একটি ব্যতিক্রম রয়েছে— বেতনভুক্ত কর্মীদের ৫ শতাংশ টাকা সেন্ট্রাল সিকিউরিটি ফান্ডে জমা দিতে হয়। এর ৩০ শতাংশ খরচ হয় পরিকাঠামো উন্নয়নে, আর বাকি ৭০ শতাংশ পেনশন ফান্ড হিসেবে লগ্নি করা হয়। অবসরের পর নাগরিকরা পেনশন পান, যা তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
আরো পড়ুন: ব্রুনাইয়ের সুলতান হাসনাল বলকিয়ার সম্পত্তির পরিমাণ শুনলে ভিমরি খাবেন
ব্রুনেইয়ের (Brunei Tax System) মতো তেল সমৃদ্ধ দেশের জন্য এই করমুক্ত ব্যবস্থা বজায় রাখা সহজ, কিন্তু ভারতের মতো দেশে এটি ভাবাই যায় না। ভারতে নাগরিকদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কমপক্ষে ১৭ ধরনের কর দিতে হয়। তবে ব্রুনেইয়ের মতো তেলের সমৃদ্ধি থাকলে হয়তো ভারতের মতো দেশেও কর ছাড়াই একটি মজবুত অর্থনীতি তৈরি করা সম্ভব হতো। অবাক করা বিষয় হলো, এই দেশগুলো তাদের প্রাকৃতিক সম্পদকে এমনভাবে ব্যবহার করে, যাতে তাদের জনগণকে কোনও কর দিতে না হয়, অথচ তারা সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা সবকিছুই পেয়ে থাকে।
এর ফলে ব্রুনেই সহ সৌদি আরব, আমিরশাহি, বাহরিনের মতো দেশগুলো বিশ্বের বৃহত্তম বিনিয়োগ ফান্ডগুলোরও মালিক। এগুলির মাধ্যমে তারা বিশ্ব অর্থনীতির একটা বড় অংশে বিনিয়োগ করে, যা তাদের নিজস্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে আরও শক্তিশালী করে তোলে। ব্রুনেইয়ের এই মডেল থেকে অনেক দেশই শিখতে পারে যে, প্রাকৃতিক সম্পদের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে কর ছাড়াই একটি দেশের জনগণকে স্বাচ্ছন্দ্যময় ও নিরাপদ জীবন দেওয়া সম্ভব।