লকডাউন না মানলে ২ বছরের জেল, ধরপাকড়ের নির্দেশ কেন্দ্রের

নিজস্ব প্রতিবেদন : সত্য সেলুকাস কী বিচিত্র এই দেশ! যাদের সুরক্ষা প্রদান করতে রাস্তায় নেমেছে পুলিশ। যাদের সুস্থ করতে জীবন বাজি রেখেছে ডাক্তার, নার্স সহ সকল স্বাস্থ্য কর্মীরা, তাদেরকেই অত্যাচারিত হতে হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালের দিকে জানা গেলো ইন্দোরের ডাক্তার, নার্সদের উপর পাথর ছুঁড়ে মারা হয়েছে। তাদের অপরাধ? তারা তাদের কাছে আসা খবরের সত্যতা যাচাই করতে গিয়েছিলেন। স্বাস্থ্য দফতরের কাছে খবর ছিল যে ইন্দোরের একটি এলাকায় কোভিড ১৯ এ আক্রান্ত একরোগী আছেন। এই সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে তারা আহত হলেন। বেঙ্গালুরুতে ‘আশা’ প্রকল্পের কিছু স্বাস্থ্যকর্মীকে হেনস্থা শিকার হতে হয় জনতার দ্বারা।

এখানেই শেষ নয় উত্তর প্রদেশে পুলিশের উপর ছোঁড়া হয়েছে পাথর। লকডাউন কার্যকর করতে গিয়ে, জমায়েত ভাঙতে, চায়ের ঠেক ভাঙতে গিয়ে তারাও হচ্ছেন আহত। অবশ্য ব্যতিক্রম ঘটনাও আছে। মঙ্গলবার সকালে পাঞ্জাবের পাতিয়ালা জেলার নাভা শহরের দুই সাফাইকর্মীকে টাকার মালা পরিয়ে সম্মান জানানো হয়। কিন্তু এই ব্যতিক্রমগুলি হাতে গোনা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানুষের রোষের মুখে পড়ছেন ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্য কর্মী সহ পুলিশরাও।তাই গত বুধবারই হায়দরাবাদে এক হাসপাতালে দুই ডাক্তারকে হেনস্থা করা হয়। কারণ ঐ হাসপাতালে কোভিড ১৯ আক্রান্ত একজন রোগী মারা গেছেন। এর শেষ কোথায়! এই পরিস্থিতিকে কড়া হাতে সামাল দিতেই বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রিসভার সচিব রাজীব গৌবা রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে যে, লকডাউন কার্যকর করতে কড়া হতেই হবে। কেউ যদি ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী অথবা অন্যান্য সরকারি অফিসারদের কাজে বাধা দেয় তাহলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী তাকে শাস্তি দিতে হবে। তার একবছর কারাদণ্ড হতে পারে। আর এই কাজে যদি কারো মৃত্যু হয় তাহলে দুইবছর কারাদণ্ড হবে।

পুরো দেশে যেখানে লকডাউন চলছে। আগামী ১৪ই এপ্রিল পর্যন্ত মানুষের ঘরবন্দী থাকার কথা সেখানে দুধের দোকানে আজও পড়ছে লম্বা লাইন! চায়ের দোকানে আজও চলছে আড্ডা! মাংসের দোকানের লাইন দেখে মনে হচ্ছে ইন্ডিয়া যেন বিশ্বকাপ জিতেছে! করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে নিজেকে সেভ রাখতেই মানুষকে ঘরবন্দী থাকতে হবে এই অনুরোধ বারংবার করছেন কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার, কিন্তু মানুষের হুঁশ ফিরছেনা‌। এই হুঁশ ফেরাতেই তাই কড়া আইন চালু করা হচ্ছে।

এ ছাড়া রাজ্যগুলিকে আরও বলা হয়েছে যে, লকডাউন ভাঙা ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার। কেউ যদি লকডাউনের এই সময় সুযোগ বুঝে মানুষকে ঠকায়, তাহলে তারও দুই বছর অবধি জেল হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে গুজব রটালে বা আতঙ্কের সৃষ্টি করলে এক বছর জেল হতে পারে। এই ভাবে কঠোর আইনের সাহায্য নিয়েই পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে। কারণ ঐ লকডাউন যে মেনে চলতেই হবে। লকডাউন কার্যকর করা ছাড়া তো আর কোনো উপায় নেই আমাদের হাতে। তাই ঘরে থাকুন সুস্থ থাকুন। অযথা আতঙ্কিত হবেন না। পুলিশ প্রশাসন ও ডাক্তার নার্সদের সাথে সহযোগিতা করুন।