নিজস্ব প্রতিবেদন : জাপানের তাকিকাওয়া শহরের মানুষের প্রাণ জংলি ভল্লুকের জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। বিগত পাঁচ বছর ধরে অনেকবার জংলি ভল্লুক হানা দিয়েছে এই শহরে, জখমও অনেক। তাদের জীবন সংকটাপন্ন হয়েছিল। সাক্ষাৎ মৃত্যুর সাথে লড়াই করে তারা বেঁচে ফিরেছেন।
দিনে-রাতে যখন তখন জংলি ভল্লুকের এই হানা নিয়ে তাকিকাওয়া শহরের মানুষের পাশাপাশি প্রশাসনও অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। কিন্তু প্রশাসন সেই ভাবে কোন পদক্ষেপ নেয়নি।
ভল্লুকের হানা থেকে রক্ষা পেতে কার্যত গৃহবন্দি হয়ে থেকছেন মানুষেরা। সেখানকার মানুষেরা প্রয়োজনের বাইরে খুব একটা বাড়ির বাইরে বেরোতেন না। এমনকি ভয়ে বাচ্চাদের স্কুল পাঠানোও বন্ধ করে দিয়েছিলেন কিছু অভিভাবক। গোটা শহর যেন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল, এরকম একটা পরিস্থিতিতে সকলেই সরকারি হস্তক্ষেপের আশা করেছিলেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও সরকার কোন রকম ভাবে ভল্লুকের হানা থেকে রক্ষা পাওয়ার ব্যাপারে কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। তাই স্থানীয় বাসিন্দারাই ভল্লুকের হাত থেকে বাঁচার জন্য এক অভিনব পন্থা বার করেন।
ভল্লুকের হাত থেকে বাঁচবার জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা দুটি নেকড়ে নিয়ে এলেন। তবে নেকড়ে দুটি আসল নয় এ দুটি নেকড়ে আসলে রোবট।হ্যাঁ রোবট, জাপানে গত দুই বছর ধরে এই নকল নেকড়ে বা রোবট নেকড়ে ৭০টির কাছাকাছি বিক্রি হয়েছে।
জাপানে এমনিতেই রোবটের চাহিদা তুঙ্গে। হোটেলে খাবার পরিবেশন থেকে শুরু করে ভারী মালপত্র তোলা সকল কাজে জাপানিরা রোবটের ব্যবহার করে থাকেন। আর এই রোবট নেকড়েটি ওটা সেইকি নামের একজন ২০১৮ সাল থেকে বানানো শুরু করেন। নকল নেকড়ে হলেও দেখে চেনার উপায় নেই। সেই নেকড়ের চেহারা যেমন, তেমনই লাল লাল চোখ। এমনকি ৬০ টি ভিন্ন আওয়াজে গর্জন ও করতে পারে এই রোবট। সেই সঙ্গে এদিক-ওদিক ঘাড় ঘুরিয়ে দেখতেও পারে। এই রোবট থেকে এলইডি লাইটের আলো চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। আর এই নেকড়েটি দেখেই ভয় পেয়ে গেছে জংলি ভল্লুকের দল।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায় নেকড়ে আনার পর থেকে জংলি ভল্লুকের দল আর শহরে আসেনি। সম্মিলিত ভাবে করা কাজ সব সময় সফল হয়, গ্রামবাসীদের এই যৌথ প্রয়াস ও জংলি ভল্লুক তাড়ানোর কাজে সফল হয়েছে।