নিজস্ব প্রতিবেদন : বুধবার সাতসকালে সকলের ঘুম ভাঙার আগেই জানা যায় সঙ্গীত জগতের অন্যতম ব্যক্তিত্ব বাপ্পি লাহিড়ী আর নেই। বাপ্পি লাহিড়ীর ৬৯ বছর বয়সে প্রয়াণে স্বাভাবিকভাবেই শোকোস্তব্ধ হয়ে পড়ে গোটা দেশ। লতা মঙ্গেশকর, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় এবং তাদের পর এই ভাবে বাপ্পি লাহিড়ীর চলে যাওয়া সঙ্গীত জগতে তৈরি করল এক বড় শূন্যস্থান।
চিকিৎসকদের তরফ থেকে জানা গিয়েছে, বাপ্পি লাহিড়ী প্রাণ হারিয়েছেন অ্যাবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে। মাস খানেক ধরেই তিনি মুম্বইয়ের ক্রিটিকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এরপর তাকে সুস্থ করে বাড়ি ফেরানো হলেও ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এরপর মঙ্গলবার মধ্যরাতে তিনি এই রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন।
বাপ্পি লাহিড়ী যখন মুম্বইয়ে সকলকে ছেড়ে চলে গেলেন সেই সময় হলিউড ও বলিউডের অন্যতম সঙ্গীত পরিচালক জিৎ গাঙ্গুলী পরিবারের সঙ্গে রয়েছেন শান্তিনিকেতনে। তিনি বাপ্পি লাহিড়ীর এইভাবে চলে যাওয়াকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না এবং বাকরুদ্ধ হয়ে জানিয়েছেন ‘বাবাকে হারানোর মতই’।
জিৎ গাঙ্গুলী জানিয়েছেন, “তিন বছর আগে আমি বাবাকে হারিয়ে ছিলাম। বাবাকে হারিয়ে যে যন্ত্রণা পেয়েছিলাম সেই একি যন্ত্রনা পেলাম বাপ্পি লাহিড়ীকে হারিয়ে। তিনি ছিলেন আমার শিক্ষাগুরু। আমাকে সব সময় গাইড করতেন। তার এই ভাবে চলে যাওয়াটা আমার কাছে অপূরণীয় ক্ষতি। আশিকি ২ গান যখন রিলিজ হল তখন প্রথম বাপি দার ফোন। ফোন করেই জানান, :বাঙালি লড়ে যাও’।”
এর পাশাপাশি তিনি বাপ্পি লাহিড়ী সম্পর্কে জানিয়েছেন, “বাপ্পিদা মুম্বইয়ের থাকলেও তিনি ছিলেন খাঁটি বাঙালি। তিনি কখনোই ভারতবর্ষ এবং বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় গায়ক ও কম্পোজার হয়ে বাঙালিকে এবং বাংলাকে ভুলে যাননি। বাপ্পিদা মনেপ্রাণে বাঙালি ছিলেন। আর আমরা যারা বোম্বেতে থাকি তাদের তিনি বাঙালি হিসাবে একটি বড় শিক্ষা দিয়েছেন, তা হল ‘যেখানেই থাকো বাংলাকে ভুলে যেও না।’ তিনি সবসময়ই বাংলাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছিলেন যতদিন বেঁচে ছিলেন।”