নিজস্ব প্রতিবেদন : বারংবার দেশের নেতা
মন্ত্রীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে নানান প্রশ্ন উঠতে দেখা গিয়েছে সামাজিক স্তরে। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষদের বারংবার অভিযোগ, যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও কেবলমাত্র রাজনৈতিক ক্ষমতার বলে ভারতের বহু নেতা মন্ত্রী দেশের গুরুত্বপূর্ণ পদ দখল করে বসে আছেন। আর এই ঘটনার কারণে বহু ক্ষেত্রেই ব্যাহত হচ্ছে উন্নয়ন। ঠিক তেমনই যখন শোনা যায় দেশের এক শিক্ষামন্ত্রী মাধ্যমিক পাশ তখন সত্যিই হতাশ হতে হয়। যদিও বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেন, অনেক ক্ষেত্রে মন্ত্রিত্ব চালানোর জন্য শিক্ষার থেকে দক্ষতা অনেক দামি হয়ে ওঠে।
বর্তমানে তেমনি এক শিক্ষামন্ত্রী প্রসঙ্গ দেশে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। তিনি হলেন ঝাড়খণ্ডের শিক্ষামন্ত্রী জগরনাথ মাহাতো। জগরনাথ মাহাতো কেবলমাত্র মাধ্যমিক পাশ হয়েই শিক্ষামন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রিত্ব সামলাচ্ছেন ঝাড়খন্ডে। তবে তিনি বর্তমানে মাধ্যমিকের পর বাকি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে ইচ্ছুক, যা কিনা চমক ও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। যে কারণে সম্প্রতি তিনি নিজের বিধানসভায় এলাকার দুমরির অন্তর্গত একটি সরকারি ইন্টার-কলেজে ক্লাস ইলেভেনে ভর্তি হয়েছেন। আর তার নতুন করে পড়াশোনা করার জন্য ভর্তি হওয়াও একটা চমক।
৫৩ বছর বয়সী এই শিক্ষামন্ত্রী জগরনাথ মাহাতো প্রায় ২৫ বছর পর পুনরায় স্কুলে ভর্তি হলেন। ১৯৯৫ সালে তিনি মাধ্যমিক পাশ করেছিলেন। এরপর গত সোমবার বোকারো জেলার নবডিহর দেবী মাহাতো ইন্টার কলেজে একাদশ শ্রেণীতে পুনরায় ভর্তি হন। এক সময় নানান সমস্যার কারণে তিনি মাধ্যমিক পাশ করার পর আর পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি। এরপর তিনি গত নির্বাচনে ঝাড়খন্ডে নির্বাচিত হন এবং ঝাড়খণ্ডের শিক্ষামন্ত্রীর মন্ত্রিত্ব পান।
নতুন করে স্কুলে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা চালানোর বিষয়ে মন্ত্রী জগরনাথ মাহাতো জানিয়েছেন, “আমি যেদিন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে শপথ নি সেদিন অনেকেই বলেছিলেন একজন মাধ্যমিক শিক্ষা মন্ত্রী কিভাবে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি করবেন। সেই সকল মানুষদেরই আমার জবাব, আমার লেখাপড়া শেষ করব। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে মানুষের সেবা করা, চাষাবাদ করার পাশাপাশি প্রতিদিন ক্লাস করব। লেখাপড়ার কোনও বয়স হয় না। যে কারণে আমি বাকিদেরও বলবো এইভাবে আবার নতুন করে পড়াশোনা শুরু করতে এবং তা চালিয়ে যেতে।”
তবে শুধু এই মন্ত্রী নন, ঝাড়খণ্ডের শেষ নির্বাচনের তথ্য অনুযায়ী ঝাড়খন্ড বিধানসভায় ৮১ জন জয়ী জনপ্রতিনিধির মধ্যে ৩০ জন বিধায়ক রয়েছেন যারা নিজেদের শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসাবে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পাশ বলে জানিয়েছেন। ৪৯ জন বিধায়ক রয়েছেন যারা নিজেদের শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসাবে স্নাতক বলে জানিয়েছেন আর কেবল মাত্র একজন বিধায়ক নিজেকে ডিপ্লোমা ধারক বলে জানিয়েছেন।