নিজস্ব প্রতিবেদন : ২৪-এর প্রধানমন্ত্রীর সিংহাসনের লড়াইয়ে নিজেদের অন্যতম বিকল্প হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল। একুশে তারা অপ্রত্যাশিতভাবে জয়লাভ করার পর বিভিন্ন রাজ্যে শক্তি বৃদ্ধি করতে শুরু করেছে। তাদের পদক্ষেপ দেখে রাজনৈতিক মহলের বিশেষজ্ঞরা স্পষ্টত দাবি করেছেন, কংগ্রেসের বিকল্প হিসাবে দেশে তৃণমূল কংগ্রেসকে তুলে ধরাই হলো তাদের লক্ষ্য।
কিন্তু সম্প্রতি বেশ কিছু ক্ষেত্রে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ধাক্কা খেতে হচ্ছে তৃণমূলকে। কারণ একক অস্তিত্ব প্রমাণের লড়াইয়ে নেমে ক্রমেই মমতাকে বন্ধু হারাতে দেখা যাচ্ছে, এমনই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের বিশেষজ্ঞরা। উদ্ধব ঠাকরেরা আগেই মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছিলেন। আর এবার পড়শী রাজ্য ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা জানিয়ে দিয়েছে, তৃণমূলের থেকে কংগ্রেসকেই তাঁরা বেশি পছন্দ করবেন। আসন্ন ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাহুল-সোনিয়াদের সঙ্গেই থাকবেন হেমন্ত সোরেন।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, একক অস্তিত্ব প্রমাণের লড়াইয়ে নেমে ক্রমেই কি বন্ধু হারাচ্ছেন মমতা? ঝাড়খন্ডে শেষ বিধানসভা নির্বাচনে ইউপিএ-র শক্তি হিসাবে কংগ্রেস, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা এবং আরজেডি জোট বদ্ধ ভাবে বিজেপিকে হারিয়েছিল। এখানে এই তিন দলের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী হলো ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে সমর্থন করেছিল এই ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা। কথা দিয়ে হেমন্ত সরেন পশ্চিমবঙ্গের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় কোন প্রার্থী দেন নি।
অন্যদিকে আবার শেষ বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস জোট বেঁধেছিল বামেদের সঙ্গে। তবে এখন এই বিধানসভা নির্বাচনের জোটের অঙ্ক বা সমর্থনের অঙ্ক শেষ। আসন্ন চব্বিশের লড়াইয়ে কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে মমতা ও তার দল তৃণমূল যখন সমান্তরাল বোঝাপড়ার কথা বলছেন সেই সময় অবশ্য এ নিয়ে খুব একটা আগ্রহী নয় ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বিভিন্ন রাজ্যের শক্তি বৃদ্ধি করার পাশাপাশি বিভিন্ন রাজ্যের আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে জোট বেঁধে নতুন সমীকরণ তৈরি করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে এই সমীকরণ তৈরি লড়াইয়ে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা আলাদাভাবে তৃণমূলের পাশে দাঁড়াবে না বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের বিশেষজ্ঞদের একাংশ।