লাল্টু : বীরভূমের দুবরাজপুর ব্লকের অন্তর্গত লক্ষ্মী নারায়ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কুড়ালজুড়ি গ্রামের ভুবন বাদ্যকর এখন অন্যতম জনপ্রিয় ব্যক্তি। তার কাঁচা বাদাম গান ভাইরাল হওয়ার পর তিনি এই জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন।
তবে বিপুল এই জনপ্রিয়তা লাভ করলেও তার পরিবারের হাল একেবারেই নিম্নবিত্ত। তিনি যখন মোটরবাইকে কাঁচা বাদামের বস্তা চাপিয়ে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে কাচা বাদাম বিক্রি করতেন সেই সময় তার গড় আয় ছিল রোজ ২০০ টাকা। স্বাভাবিকভাবেই এই রোজগারে তেমন কিছু করতে পারেননি তিনি। বাড়ির অবস্থা খারাপ, ত্রিপল দিয়ে ঢাকা, একটি ঘরেই বসবাস করেন তিনি। যেখানেই হয় রান্নাবান্না থেকে অন্যান্য কাজকর্ম।
সরকারিভাবে সরকারি প্রকল্প থেকে তিনি একটি ঘর পেয়েছেন, তবে সেই ঘর এখনো সম্পূর্ণ হয়নি। অর্ধনির্মিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে সেই ঘর। মূলত অর্থের অভাবেই তার সেই ঘর অর্ধনির্মিত। এই প্রসঙ্গে ভুবন বাদ্যকর জানিয়েছেন, লকডাউন চলাকালীন অনেক জমানো টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। সরকারিভাবে ঘরের টাকা পাওয়া এবং নিজের সঞ্চিত অর্থ লাগিয়েও এখনো ঘর সম্পূর্ণ করতে পারা যায় নি।
অন্যদিকে ভুবন বাদ্যকর তার কাচা বাদাম গানের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর তার এই গান সোশ্যাল মিডিয়ার বহু ভিডিও ক্রিয়েটাররা বিভিন্ন ভাবে তৈরি করে অর্থ উপার্জন করছেন। এর পরিবর্তে ভুবন বাদ্যকর অবশ্য কিছু পান নি। পাশাপাশি বেশ কয়েকজনকে লক্ষ্য করা যায় তাঁর গানকে কাজে লাগিয়ে রয়্যালটি পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছেন। এসবের বিরুদ্ধে ভুবন বাদ্যকর একসময় থানার দ্বারস্থও হয়েছিলেন।
তবে এসবের পরও ভুবন বাদ্যকর কোন রকম ভাবে আশাহত হননি। তিনি জানিয়েছেন তার পরিবারের হাল ফেরাতে তিনি তার প্রতিভাকে কাজে লাগাতে চান। পাশাপাশি বহু সেলিব্রিটিরা তার এই গান উপভোগ করছেন তাদেরকেও তিনি আপ্লুত। এছাড়াও তিনি জানিয়েছেন, শুটিং এবং বিভিন্ন গান রেকর্ডিং করতে তিনি কলকাতায় যান। সেখানে তাকে যেভাবে সম্মান দেওয়া হয় তাতে তিনি চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি।
নিজের সংসারের হাল ফেরানোর জন্য তিনি অকপটভাবে বলেছেন, “এখন ভেবে ভালো লাগে যে আমার পরিচয় কেবলমাত্র বাদাম বিক্রেতা নই। মানুষ আমাকে এখন একজন শিল্পী হিসেবেও দেখছেন। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে আশা করছি পরিবারের ভবিষ্যৎটুকু সুরক্ষিত করতে পারব আমার এই প্রতিভার জোরে।”