নিজস্ব প্রতিবেদন : শিল্প সব সময় মানুষকে আনন্দ দান করে। তাই একজন শিল্পীর শিল্পকর্ম মুহূর্তের মধ্যেই মানুষের মন ছুঁয়ে যায়। আর তার থেকেও বেশি হৃদয়কে ছুঁয়ে যায় যখন একজন শিল্পী অপরজন শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য জ্ঞাপন করেন।
আসলে একই জগতের একজন মানুষ যখন অপরজন মানুষকে মর্যাদা দান করেন, তখন শিল্পের মর্যাদা বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মর্যাদারদানকারীর ও মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। আর যিনি মর্যাদা পেলেন তাকেও শ্রদ্ধার্ঘ্য জ্ঞাপন করা হয়।
উনিশ শতকের বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী একজন গায়ক ছিলেন। তাকে কেউ লালন ফকির বলতেন, কেউ মহাত্মা লালন বলতেন, আবার কেউ বলতেন লালন সাঁই। তিনি একাধারে গীতিকার, সুরকার ও গায়ক। সংগীতজগতের পাশাপাশি তিনি ছিলেন মানবতাবোধে উজ্জ্বল একজন বাউল সাধক ও দার্শনিক। তার জীবনের দর্শন তার সমাজ সংস্কারী দৃষ্টিভঙ্গি ও মানবতাবাদী অসাম্প্রদায়িক উদার মনোভাব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম সহ বহু খ্যাতনামা কবি, সাহিত্যিক ও দার্শনিক, বুদ্ধিজীবীদেরকে প্রভাবিত করেছে।
তার এই মানবতাবাদী চরিত্রের জন্যই তাকে গান্ধীজীর ও ২৫ বছর আগে মহাত্মা উপাধি দেওয়া হয়। তিনি অসংখ্য বাউল গান রচনা করেছেন ও গেয়েছেন। তার গাওয়া এই সকল বাউল গান অন্তরকে ছুঁয়ে যাওয়ার পাশাপাশি আমাদের আধ্যাত্মিক ভাবনায় সমুজ্জ্বল করে তোলে। তাই তাকে বাউল সম্রাটও বলা হয়। আধ্যাত্মিক বাউল সাধক হয়েও সমাজ সংস্কারে ও একই সঙ্গে সংগীত জগতে তার অবদান অনেকখানি। আজও এই মানুষটির গাওয়া অসংখ্য গান আমাদের ভাবতে শেখায় নতুন করে।
লালন ফকিরকে সম্মান জানিয়ে জনপ্রিয় গায়ক কৈলাশ খের গাইলেন লালন ফকিরের একটি বিখ্যাত গান। এ যেন এক শিল্পীকে আর এক শিল্পীর শ্রদ্ধার্ঘ্য জ্ঞাপন। স্বাভাবিকভাবেই ভিডিওটি মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে গেছে। মন ছুঁয়েছে আপামর বাঙালির। ২১ হাজারের বেশি মানুষ শেয়ার করেছেন ভিডিওটি। ১ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ ভিডিওটি দেখে ফেলেছেন ইতিমধ্যেই।
ভাইরাল ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, কৈলাস খের লালন ফকিরের ‘মিলন হবে কত দিনে’ গানটি গেয়েছেন। এই অসাধারণ ভিডিওটি যারা দেখে উঠতে পারেননি তারা এক অসাধারণ শিল্পের থেকে বঞ্চিত হয়ে গিয়েছেন।