“পশ্চিমবঙ্গে ৪০০ কোটি টাকার ক্ষতি, দায়ী মমতা ব্যানার্জি”, কৈলাশ বিজয় বর্গীয়

অমরনাথ দত্ত : পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে, যার জন্য দায়ী কেবল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ২০১৯ নাগরিকত্ব প্রদানের জন্য, দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য নয়। আগে আইনটি সম্পর্কে জানুন তারপরে আন্দোলন করুন।

এভাবেই বুধবার বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কৈলাশ বিজয় বর্গীয় তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ২০১৯ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে সমস্ত রকম ক্ষয়ক্ষতি ও আন্দোলনের জন্য দায়ী করেন। তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের যা অরাজকতা হয়েছে তার জন্য দায়ী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ১৩ তারিখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছিলেন নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে তিনি মিছিল করবেন। ঠিক তারপর ১৪ তারিখ থেকে যে সকল জায়গায় বেশি অনুপ্রবেশকারী রয়েছে সেখানে পরিকল্পনা করে কেন্দ্রীয় সরকারের সম্পত্তির উপর আক্রমণ শুরু করে। পশ্চিমবঙ্গের রেলওয়ে সম্পত্তি ৪০০ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। আর পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ তা হাত গুটিয়ে দেখছিল। আর এগুলি সব মমতা ব্যানার্জি জেনে-বুঝে করিয়েছেন।”

“এই রাজ্যে এমন জায়গা রয়েছে, যেখানে আবার সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী আলাদা একজন। যেমন বীরভূম। যেখানকার মুখ্যমন্ত্রী অনুব্রত মণ্ডল। তিনি এসপির চেয়ারে বসেন, থানাতে নির্দেশ দেন, ভারতীয় জনতা পার্টির কর্মীদের উপর মিথ্যা অভিযোগ করার নির্দেশ দেন। পুরো রাজ্যে অরাজকতা চলছে।” এমনও কথা শোনা যায় আজ এই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মুখ থেকে।

এছাড়াও তিনি বলেন, “রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা মুখ্যমন্ত্রীর হাতে। কিন্তু যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজেই চান রাজ্যে আগুন জ্বলুক, তাকে নিয়ে তো আমার বলার কিছু নেই।” পাশাপাশি তিনি এ অভিযোগও করেন, “সংসদে তৈরি হওয়া আইনকে মানবো না তেমন কোন কথা মুখ্যমন্ত্রী বলতে পারেন না। ভারতবর্ষে গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে নাগরিকত্ব দেওয়া কেন্দ্রের একটি আর যা সংবিধান বলছে। রাজ্য সরকারের এখানে কোন রকম ভূমিকা নেই।”

এরপরেই তিনি হুংকার দিয়ে বলেন, “মমতা ব্যানার্জির এই আইন মানা বা না মানায় কিছু এসে যায় না। যে আইন পাশ হয়েছে সেই আইন নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন। এই আইন কারোর নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য নয়। মমতা ব্যানার্জি, কংগ্রেস যে সকল দল রয়েছে যারা মোদিজীর কাছে হেরে যান তারা জনতাকে বিভ্রান্ত করতে শুরু করেন। যে আইন তৈরি হয়েছে সেই আইনে যারা ভারতবর্ষের বাসিন্দা তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হচ্ছে না, নতুন করে নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য এই আইন তৈরি করা হয়েছে। আগে এই আইনের বিষয়ে পড়ুন তারপর আন্দোলন করুন।”

রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে রাষ্ট্রপতি শাসনের জল্পনা দিন কয়েক ধরে ঘোরাফেরা করলেও এদিন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কৈলাস বিজয়বর্গীয় অবশ্য জানান, “রাজ্য যে পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে চলছে তাতে রাষ্ট্রপতি শাসন হতেও পারে, তবে তা কেন্দ্র সরকার এবং রাজ্যপালের উপর নির্ভর করছে। তবে আমার এখনই মনে হয়না রাষ্ট্রপতি শাসনের প্রয়োজন আছে।”

প্রসঙ্গত, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কৈলাশ বিজয় বর্গীয় এবং বাঁকুড়ার সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের নেতৃত্বে বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল বুধবার সকালে মুর্শিদাবাদ যাওয়ার আগে বোলপুরের একটি টুরিস্ট লজে এসে উপস্থিত হন। সেখানেই তাঁরা বীরভূম জেলার দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ আলোচনা করেন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও সাংসদকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন বীরভূম জেলা বিজেপি সভাপতি শ্যামাপদ মন্ডল।