করোনা যুদ্ধে ম্যাজিক দেখানো কেরালাও এখন ব্যাকফুটে, এক সপ্তাহেই বাড়লো সংক্রমণ

নিজস্ব প্রতিবেদন : মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে প্রতিটি রাজ্য যখন করোনাকে নিয়ে রীতিমতো জেরবার হয়ে যাচ্ছিলো তখন দৈত্যকুলের প্রহ্লাদের মত একা কুম্ভ রক্ষা করেছিলো কেরল রাজ্য। করোনা মোকাবিলায় এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল এই রাজ্য, ম্যাজিক দেখিয়েছিল তারা। অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় এই রাজ্যে করোনাতে মৃত ও সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল উল্লেখযোগ্যভাবে কম, যা এককথাই রেকর্ড।

কেরলে করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল মাত্র ৩। এখন বেড়ে ৭। এমনকি সংক্রমণ দ্বিগুণ হওয়ার হার ছিল ১০০ দিনের বেশি। সংক্রমিত রোগীদের মধ্যে ৯০% রোগী সেরে উঠেছিলেন কেরলে। অন্যান্য রাজ্যের কাছে করোনা মোকাবিলায় একটি নজির স্থাপন করেছিল এই রাজ্য। বেশ অনেকদিন কেরল থেকে নতুন কোন সংক্রমিতের খবরও পাওয়া যায়নি। স্বস্তিতেই ছিলেন কেরলের বাসিন্দারা। কিন্তু গত এক সপ্তাহে কেরলের পরিস্থিতি একেবারেই বদলে গেছে। এই এক সপ্তাহে ৩০০-এর বেশি নতুন সংক্রমণের খোঁজ মিলেছে কেরলে।

এক সপ্তাহ আগে কেরল রাজ্যে যে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬৬৬ সেই সংখ্যাটা এখন হয়ে গেলো ১০৮৮। যেখানে করোনা সংক্রমণ দ্বিগুণ হওয়ার জাতীয় হার ১৪ দিন সেখানে কেরলে ১২ দিনেরও কম সময়ে সংক্রমণের হার দ্বিগুণ হয়েছে। অর্থাৎ জাতীয় হারের তুলনায় দ্রুত হারে কেরলে করোনা সংক্রমণ ঘটছে যা অত্যন্ত চিন্তা ও উদ্বেগের বিষয়।

কিন্তু কেরল যখন করোনাকে প্রায় নিয়ন্ত্রণে এনে ফেলেছিল তখন হঠাৎ করে এইরকম দ্রুত হারে সংক্রমণ বৃদ্ধি কেন?

আসলে সংক্রমিত বাড়ার এই ঘটনা চিন্তার হলেও অস্বাভাবিক নয়। এমনটা যে হবে তা আগেই আশঙ্কা করা গেছিল। বিভিন্ন রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরা নিজের নিজের রাজ্যে ফিরে আসার পর থেকেই সংক্রমিতের সংখ্যাটা বেড়েই চলেছে। এই কারণেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তার রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য আলাদা নির্দেশিকা বার করেন। দীর্ঘ দুইমাসেরও বেশি সময় লকডাউনের ফলে করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিলো কেরলে। কিন্তু যখন বিভিন্ন রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরা ফিরে আসতে শুরু করলো তখন সব রাজ্যের মতো কেরলেও সংক্রমণ দ্রুত হারে বাড়তে শুরু করে।