গত অগস্ট মাসে সুভদ্রা নামের ওই মহিলার স্বামী মারা যান। এরপর থেকেই আর্থিক সমস্যায় পরেন তিনি। তার তিন সন্তান। তার মধ্যে এক জন সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত।সম্প্রতিই তার অর্থ সঙ্কট এতটাই বেড়ে যায় যে তিনি বাধ্য হয়ে তার ছেলের শিক্ষিকা গিরিজা হরিকুমারের কাছে ৫০০ টাকা ধার চেয়ে বসেন।
ওই পরিবারের আর্থিক অবস্থা দেখার পর গিরিজা হরিকুমার নামের ওই শিক্ষিকা সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেন। এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সাহায্য চান ওই পরিবারের জন্য। তিনি ক্রাউডফান্ডিং শুরু করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। তার ওই পোস্টেই তিনি সুভদ্রার ব্যাঙ্কের একাউন্ট ডিটেইলসও দিয়ে দেন। যার মাধ্যমে সরাসরি সব টাকা পৌঁছে যায় সুভদ্রার কাছে। ওই পোস্টটি এতটাই ভাইরাল হয়ে যায় যে, এক রাতেই জমা হয় মোট ৫১ লক্ষ টাকা।
প্রথম থেকেই সুভদ্রার ‘নুন আনতে পান্তা ফুরায়’ অবস্থা। তার উপর সে তার স্বামীকে হারানোর পর তার অর্থ সঙ্কট চরমে ওঠে। এক বেলার খাবার জোগাড় করা দুঃসাধ্য হয়ে ওঠে। তার উপর তার এক সন্তান সেরিব্রাল পালসি আক্রান্ত। সে নিজে কোনো কাজ করতে পারে না। তাকে একা বাড়ীতে রেখে কাজ খুঁজতেও যেতে পারেন না সুভদ্রা। কিন্তু বেচেঁ থাকতে গেলে দুবেলা দুমুঠো অন্নের তো প্রয়োজন, তাই বাধ্য হয়ে টাকা ধার করতে যায় সুভদ্রা।
ওই শিক্ষিকা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়ে লেখেন, তার এক ছাত্রের মা খুব অসহায় হয়ে তার কাছে পাঁচশ টাকা চাইতে আসে, সমস্যা বুঝে তিনি একহাজার টাকা দেন। আর সকলকে তাদের সামর্থ মত সাহায্য করতেও বলেন তিনি। ওই শিক্ষিকা আরো জানান যে, তিনি সুভদ্রার বাড়ীতেও যান। গিয়ে দেখেন সুভদ্রার কথা এক বিন্দুও মিথ্যা না। তার সত্যিই সাহায্যের প্রয়োজন। নাহলে না খেয়ে পেয়ে হয়তো মারা পরবে ওই পরিবারটি।
এই বিষয়ে সুভদ্রা জানান, চাইতে গিয়েছিলেন মাত্র পাঁচশ টাকা, দুইদিন পর তিনি দেখেন তার ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে এসেছে ৫১ লক্ষ টাকা। তিনি ভাবেন হয়তো ভুল করে হয়েছে। তারপর শিক্ষিকার কাছে জানতে পারেন পুরো বিষয়টি। এই ঘটনাটি ঘটেছে কেরলের পালাক্কডে। ৪৬ বছর বয়সী সুভদ্রা নামের ওই মহিলা বলেন, তার ছেলের শিক্ষিকার কাছে সে চিরকাল ঋণী হয়ে থাকবে এই সাহায্যের জন্য।