নিজস্ব প্রতিবেদন : নিয়োগ দুর্নীতি কান্ডে সিবিআই এবং ইডি আধিকারিকরা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছেন। তাদের এই তল্লাশিতে উঠে আসছে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য, গ্রেপ্তার হচ্ছেন একের পর এক প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। তবে জানেন কি এই দুর্নীতিগ্রস্তদের বাড়ি, ফ্ল্যাট অথবা গেস্ট হাউস থেকে বিভিন্ন নথি সংগ্রহ করার জন্য হুগলিতে সাহায্য করছেন এক যুবক। ওই যুবক এখন এলাকায় ‘দ্য কি ম্যান’ নামে খ্যাতি লাভ করতে শুরু করেছেন
আসলে ইডি আধিকারিকদের তদন্তের জন্য যে কারো বাড়িতে হানা দেওয়ার অধিকার থাকলেও তারা কিন্তু তালা এবং বিভিন্ন ধরনের লকার খুলতে সক্ষম নন। কারণ সেই সকল তালা বা লকারের চাবি তাদের কাছে থাকে না। কিন্তু এই সব লকার বা তালার চাবি এখন হুগলির রবি। আর ওই রবিই হয়ে উঠেছেন হুগলির ‘দ্য কি ম্যান’।
রবি পাল একজন সাধারণ ফুটপাত ব্যবসায়ী, যিনি প্রতিদিন চুঁচুড়ার ঘড়ির মোড় এলাকায় তালা চাবি নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন খোলা আকাশের নিচে। তবে এই সাধারণ একজন ব্যবসায়ী গত শনিবার অসাধারণ হয়ে ওঠেন যখন ইডি আধিকারিকরা অয়ন শিলের বাড়িতে হানা দেন। সেখানে তারা একটি অত্যাধুনিক লকার দেখতে পান, কিন্তু ওই লকার খোলার চাবি তাদের কাছে ছিল না।
সেই সময় ইডি আধিকারিকরা রবি পালের দারস্ত হন এবং রবি পাল ওই লকার অনায়াসে খুলে দেন। লকার খুলে দেওয়ার পরই সেখান থেকে বেরিয়ে আসে গুরুত্বপূর্ণ নথি। এরপর এখন রবির ঘাড়ে দায়িত্ব শান্তনু, অয়ন সহ ঘনিষ্ঠদের ফ্ল্যাট, বাড়ি এবং আবাসনে অত্যাধুনিক লকার খোলার।
ফুটপাতে বসে ব্যবসা করার সময় রবির ঘরে রোজগার হতো ১২০ থেকে কিছু এদিক ওদিক। কিন্তু এখন রবি নতুন দায়িত্ব পাওয়ার পর তার রোজগারও একলাফে বেড়ে গিয়েছে। সারাদিনে ছয় সাতটি তালা খোলার পরিবর্তে কাজের শেষে তদন্তকারী আধিকারিকরা তার হাতে তুলে দিয়েছেন ১৪০০ টাকা। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হানা যখন নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্তদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সেই সময়ই রবির যেন পোয়াবারো। একেই বলে কারো ‘পৌষ মাস কারো সর্বনাশ’।