বুলেট ট্রেন তৈরিতে ছিল কঠিন সমস্যা, অবাক লাগলেও সমাধান করে মাছরাঙা

Antara Nag

Updated on:

Advertisements

বুলেট ট্রেন জাপানে শুরু হয়েছিল ১৯৬৪ সালে। সে সময় জাপানে অলিম্পিক উদ্বোধনের প্রায় ১০ দিন আগে জনসমক্ষে উদ্বোধন করা হয় এক বিশেষ ট্রেন, যার নাম বুলেট ট্রেন। বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ট্রেনটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে জাপানের এক অন্যতম প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়। বন্দুকের বুলেটের গতিতে তীব্র স্পিডে মাউন্ট ফুজিকেও অতিক্রম করে ছুটে চলা এই বুলেট ট্রেন জাপানের গর্ব বলে পরিচিত।

Advertisements

যদিও যুগ বদলানোর সাথে সাথে বদলেছে প্রযুক্তির ধরন-ধারণ। উন্নত প্রযুক্তির হাত ধরে বুলেট ট্রেনও আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সকলের কাছে। এমত অবস্থায়, এক নতুন সমস্যা এসে করাঘাত করেছে। বুলেট ট্রেনের নতুন সমস্যাটির নাম ‘সনিক বুম’, যার বাংলা প্রতিশব্দ হলো – শব্দাঘাত।

Advertisements

মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে, সনিক বুম কি? এটি হলো শব্দের ফলে উদ্ভূত বিস্ফোরক। এর অর্থাৎ যখন কোন বস্তু শব্দের থেকেও বেশি গতি বেগে ছুটে চলে, তখন সংঘর্ষণের ফলে এক অদ্ভুত তীব্র শব্দের উৎপত্তি হয়। বুলেট ট্রেন সর্বোচ্চ গতির ট্রেন হলেও, তা শব্দের থেকে নিশ্চয়ই বেশি নয়। আর তার ফলেই তৈরি হয় সনিক বুম।

Advertisements

জাপানের একটি ব্যস্ততম রেল স্টেশন হলো টোকাইডো শিনকাসেন। এই রেললাইন দিয়েইসমস্ত বুলেট ট্রেনে চলাচল করে। স্টেশন ছাড়ার পর প্রত্যেকটি বুলেট ট্রেন সুরঙ্গের মধ্য দিয়ে যাতায়াত করে এবং যাতায়াতের সময়ে বিভৎস ডেসিবেলের শব্দের উৎপন্ন হয়। যার ফলে রেললাইন পারিপার্শ্বিক এলাকা গুলিতে খুবই সমস্যা সৃষ্টি হয়। এই কারণে সেখানকার অধিবাসীরা দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ জানিয়ে চলেছেন।

বৈজ্ঞানিকরা প্রথমে প্যানটোগ্রাফিকে দায়ী বলে মনে করেছিলেন। তো স্বভাবতই তারা ১৯৯৪ সালের মধ্যে প্যান্টোগ্রাফি-এর (pantography) ডিজাইন পরিবর্তন করে প্যাচার ডানার আকৃতি দেন। কিন্তু এতেও কোন সুরাহা হয়নি। এর ফলে দলের একজন অভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার সুরঙ্গের ভেতর বায়ু চাপের পরিবর্তনের ফলে এই ধরনের শব্দের উৎপত্তি সম্ভব বলে অনুমান করেন।

পক্ষী বিশেষজ্ঞ জানান যে, এই সমস্যার সমাধান একমাত্র মাছরাঙ্গা পাখির হাতে। কারণ মাছরাঙ্গা পাখির প্রয়োজনমতো বায়ুর চাপের পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়। কারণ এরা যখন শিকার ঋর খোঁজে নিম্নচাপ থেকে উচ্চচাপ অঞ্চলে প্রবেশ করে, তখন তারা সাধ্যমত বায়ুর চাপের পরিবর্তন ঘটিয়ে নেয়।

এই কথা মাথায় আসার সাথে সাথেই তারা বিভিন্ন রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা শুরু করেন। অবশেষে যে ডিজাইনটি কার্যকরী বলে মনে হয় সেটির প্রথম ভাগ সত্যিই মাছরাঙ্গা পাখির মতো দেখতে। এইভাবে ট্রেনের গতিবেগ ডিজাইন সম্পর্কে পরিবর্তিত হয় তথা বৃদ্ধিও পায়।

Advertisements