Bishu Doctor: অবসর নেওয়ার সুযোগ নেই, ৯৬ বছরেও চিকিৎসা করে যাচ্ছেন ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ের ছাত্র তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বিশু ডাক্তার’

Madhab Das

Updated on:

Advertisements

নিজস্ব প্রতিবেদন : বয়স প্রায় ৯৬, যে বয়সে অধিকাংশ মানুষেরা তাদের কর্মজীবন থেকে অবসর নিয়ে থাকেন, সেই বয়সেও মানুষের সেবায় বিশু ডাক্তার (Bishu Doctor), যার ভালো নাম সুকুমার চন্দ্র। এমবিবিএস পাশ করার পর তিনি বাইরে চাকরি পেয়েছিলেন, চাকরি পেয়ে সবকিছু গোছগাছ করে চলে যাওয়ার জন্য রেডি। কিন্তু কথাসাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক কথাতেই গ্রামে থেকে যান আর তারপর থেকেই গ্রামের মানুষদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করে চলেছেন।

Advertisements

বিশু ডাক্তার তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিকিৎসক। তিনি আবার ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়ের ছাত্র। এমন একজন ডাক্তার কেবলমাত্র তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বিশু তুই বাইরে যাস না… গ্রামে গিয়ে চিকিৎসা কর’ এই কথাতেই আজও থেকে গিয়েছেন লাভপুরে। তার বাড়ি কথা সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি ধাত্রী দেবতা থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে। সুকুমার চন্দ্রের বাবা ছিলেন তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের বন্ধু।

Advertisements

সুকুমার চন্দ্র ১৯৫৩ সালে এমবিবিএস পাস করেছিলেন এবং তারপর ডক্টর অফ গাইনোকোলজিস্ট পাস করেন। পরবর্তীতে তিনি দক্ষিণ পূর্ব রেলের গোপালপুরে চাকরি পেয়েছিলেন। চাকরি পাওয়ার পর সমস্ত কাগজপত্র, বাক্স গুছিয়ে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রণাম করতে গিয়েছিলেন। আর সেই সময় তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে গ্রামে গিয়ে গ্রামের মানুষদের চিকিৎসা করার পরামর্শ দেন, যাতে করে গ্রামের মানুষেরা উপকৃত হন।

Advertisements

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই কথা ফেলে দিতে পারেনি সুকুমার চন্দ্র। কথা সাহিত্যিকের এক কথাতেই তিনি গ্রামে ফিরে এসে গ্রামের মানুষদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। আর তারপর থেকে আজও তিনি একইভাবে গ্রামের মানুষদের চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রায় ৯৬ বছরে এসেও এখনো সকাল বিকেল রুটিন করে ৫০ টির বেশি রোগী দেখে থাকেন। তিনি এখন লাভপুরের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলির মানুষদের কাছে ভগবানতুল্য। অনেকেই রয়েছেন যারা এই চিকিৎসককে ভগবান সমান মনে করেন এবং তার ছোঁয়া পেতে ছুটে আসেন তার বাড়িতে।

আরও পড়ুন : Birbhum News: শিক্ষিকাদের লড়াই, ধর্না, মাঝে পড়ে পড়াশুনা লাটে উঠল পড়ুয়াদের

সুকুমার চন্দ্র ওরফে বিশু ডাক্তার রোগীদের প্রথমেই কোনরকম টেস্ট করার কথা না বলে তাকে নিজেই প্রথমে খুব ভালোভাবে দেখে তারপর প্রয়োজনমতো ওষুধ দেন। তার চেম্বারে দেখাতে আসা রোগীদের থেকে জানা গিয়েছে, তিনি যেভাবে চিকিৎসা করেন তাতে খরচ অনেক কম হয় এবং রোগীও খুব তাড়াতাড়ি সেরে ওঠেন। তার অভিজ্ঞতার দাম কতটা তা এলাকার মানুষেরা খুব ভালোভাবেই জানেন। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো ডাক্তার বিধানচন্দ্র রায়ের ছাত্র হিসাবে বিশু ডাক্তার আজও নিজের সুনাম বজায় রেখেছেন।

শুধু চিকিৎসা ক্ষেত্রে নয়, পাশাপাশি তিনি রোগীদের দেখেই টের পান কার টাকা দেওয়ার ক্ষমতা নেই অথবা ওষুধ কেনার সামর্থ্য নেই। সেই রোগীকে তিনি নিজে থেকেই জানিয়ে দেন কোনরকম ফি অথবা ওষুধের দাম দিতে হবে না। আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা বহু রোগীদের ক্ষেত্রে তিনি বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার কাজও চালান।

Advertisements