Howrah Station: হাওড়া স্টেশনের ইতিহাস, এক বাঙালির উদ্যোগেই সেদিন বসেছিল বড় ঘড়ি

Prosun Kanti Das

Published on:

Advertisements

Howrah Station: এক বাঙালির উদ্যোগে হাওড়া স্টেশনে বসানো হয়েছিল বড় ঘড়ি। হাওড়া স্টেশনের ইতিহাস জানেন না অনেকে। ভারতের বৃহত্তম এবং ব্যস্ততম স্টেশনগুলির তালিকায় নাম রয়েছে হাওড়া স্টেশনেরও (Howrah Station)। এই স্টেশনটি তৈরি করা হয়েছিল ১৮৫৪ সালে। ১৮৫৪ সালের ১৫ ই আগস্ট থেকে স্টেশনটিকে রেল পরিষেবার অন্যতম মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। স্টেশনটি তৈরি করেছিলেন ব্রিটিশ আর্কিটেক্ট হ্যালসি রিকার্ডো। প্রায় ১৭০ বছরের পুরনো এই রেলস্টেশনের সাথে জড়িয়ে রয়েছে অনেক ইতিহাস। এমন অনেক অজানা তথ্য রয়েছে যা হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা।

Advertisements

ভারতে অবস্থিত রেল স্টেশনগুলির মধ্যে সর্বাধিক প্ল্যাটফর্ম যুক্ত রেলস্টেশন হল হাওড়া রেলস্টেশন (Howrah Station)। মোট ২৩ টি প্লাটফর্ম রয়েছে এই ষ্টেশনটিতে। প্রত্যেকদিন প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ ব্যবহার করে এই রেলস্টেশনটিকে। প্রত্যেকদিন প্রায় ১০৭ টি দূরপাল্লার ট্রেন এবং ৪৫০ টি সাবার্বান ট্রেন চলাচল করে এখান থেকে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাত ধরে ১৮৫৪ সালের ১৫ই আগস্ট যে রেল স্টেশনের যাত্রাপথ শুরু হয়েছিল তা আজও অবিরাম একইভাবে এগিয়ে চলেছে। হাওড়া থেকে হুগলি পর্যন্ত ৯১ মিনিটের রেলপথ অতিক্রম করে শুরু হয়েছিল হাওড়া স্টেশনের যাত্রা।

Advertisements

হাওড়া থেকে হুগলি পর্যন্ত প্রথম যে ট্রেনটিকে চালানো হয়েছিল ৯১ মিনিটের এই রেলপথে ছিল মাত্র ৩ টি স্টপেজ। বালি, শ্রীরামপুর এবং চন্দননগর। হাওড়া স্টেশনের জিরো মাইল থেকে হুগলির উদ্দেশ্যে যাত্রা করে এই ট্রেনটি। ভারতীয় রেল পরিষেবার ক্ষেত্রে একটি অভিযোগ সব সময় ওঠে। ট্রেন লেট হওয়ার অভিযোগ। তবে এই ঘটনা কিন্তু নতুন নয়, প্রথমদিন থেকেই চলছে এই সমস্যা। হাওড়া স্টেশন (Howrah Station) থেকে প্রথম ছাড়া ট্রেনটিও ২ ঘন্টা লেট করেছিল। প্রথমে ঠিক হয়েছিল সকাল ৮:৩০ টায় হাওড়া স্টেশন থেকে ছেড়ে হুগলি ঘুরে আবার দুপুর ২ টোর মধ্যে হাওড়ায় ফিরে আসবে এই ট্রেন। কিন্তু ২ ঘন্টা লেট হওয়ার কারণে সময়সীমায় পরিবর্তন আনতে হয়।

Advertisements

আরো পড়ুন: রাজ্যে চালু হলো নতুন বাস রুট, দেখে নিন স্টপেজ থেকে ভাড়ার খুঁটিনাটি

হাওড়া স্টেশনের (Howrah Station) মূল আকর্ষণ এখানকার বড় ঘড়িটি। প্রায় ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই ঘড়িটি সময় দেখাচ্ছে হাওড়া স্টেশনে আসা প্রত্যেক যাত্রীকে। এই বিশাল আকৃতির ঘড়িটিকে তৈরি করেছিল এক বিদেশি সংস্থা যার মালিকানা ছিল এডওয়ার্ড জন ডেন্টের কাছে। ঘড়িটিকে তৈরিও করা হয়েছিল লন্ডনে বসেই। সেখান থেকেই ভারতে নিয়ে আসা হয় এই ঘড়ি। ৩ ফুট ৯ ইঞ্চির ডায়ালযুক্ত এই ঘড়িটি হাওড়া স্টেশনে বসানো হয়েছিল ১৯২৬ সালে। প্রথমে এই ঘড়িটি মেকানিক্যাল ঘড়ি হিসেবেই তৈরি করা হয়েছিল। ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত সেভাবেই কাজ করেছে ঘড়িটি। এরপর ১৯৭৫ সালে ঘড়িটিকে ইলেক্ট্রো-মেকানিক্যালে পরিণত করা হয়। এখন বর্তমানে এই ঘড়িটি ব্যাটারি চালিত ঘড়ির মতন কাজ করছে যাকে রিচার্জ করা সম্ভব।

তবে হাওড়া স্টেশনের (Howrah Station) এই বড় ঘড়িটি তৈরি করার দায়িত্ব কিন্তু সরাসরি লন্ডনের হাতে দিয়ে দেওয়া হয়নি। ঘড়িটি তৈরি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ভারতের তথা কলকাতার বিখ্যাত ঘড়ি ব্যবসায়ী দেবপ্রসাদ রায়কে অর্থাৎ তার সংস্থা রায় ব্রাদার্সকে। এরপর তিনি লন্ডনের সহযোগিতায় এই ঘড়ি ভারতে নিয়ে আসেন। ধীরে ধীরে হাওড়া স্টেশনের এই ঘড়িটি হাওড়ার একটি অন্যতম ল্যান্ডমার্ক হিসেবে পরিচিত হতে থাকে। ১৮৫৪ সালে হাওড়া থেকে হুগলির মধ্যে ট্রেন পরিষেবা চালু করে যে ইতিহাস তৈরি হয়েছিল হাওড়া স্টেশন ঘিরে, সেই ইতিহাসের পাতায় যুক্ত হয় আরও একটি কাহিনী।

Advertisements