নিজস্ব প্রতিবেদন : দীর্ঘ সেই প্রতীক্ষার অবসান। অবশেষে চাঁদের মাটিতে পা রাখছে চন্দ্রযান ৩ এর (Chandrayaan 3) ল্যান্ডার বিক্রম (Lander Vikram)। চাঁদের মাটিতে সফলভাবে পা রাখতে পারলেই ল্যান্ডার বিক্রম থেকে বেরিয়ে আসবে রোভার প্রজ্ঞান। এই অপেক্ষাতেই বসে রয়েছেন আপামর ভারতবাসী থেকে শুরু করে বিশ্বের বাসিন্দারা। কেননা চন্দ্রযান ৩ সফল হওয়া মানেই ভারতের সামনে যেমন ইতিহাস তৈরীর হাতছানি রয়েছে ঠিক সেইরকমই বিশ্বের সামনে দরজা খুলছে নতুন কিছু পাওয়ার।
১৪ জুলাই অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরি কোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে সফলভাবে চন্দ্রযান ৩ উৎক্ষেপণের পর রকেটের গতিতে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছে চন্দ্রযান। কিন্তু সেই গতি নিয়ে তো আর চাঁদের মাটিতে অবতরণ করা সম্ভব নয়। কেননা গতির একটুখানি হেরফের হলেই ঘটে যেতে পারে ২০১৯ সালের ঘটনার পুনরাবৃত্তি। যে কারণে সফট ল্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো গতি।
এই মুহূর্তে ভারত ইতিহাস রচনা করার ঠিক আগের মুহূর্তে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ঠিক সন্ধ্যা ৬:০৪ মিনিটে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করবে বিক্রম। অবতরণের সময় মহাকাশযানটির গতি একেবারেই কমিয়ে আনা হবে। ল্যান্ডিংয়ের আগের কয়েকটি মুহূর্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আর সেই নিয়েই ইসরোর বিজ্ঞানীরা এখন অতি তৎপর। তবে আবার এমনও নয় যে মহাকাশযানটির গতিবেগ এতটাই কমানো হবে না, যাতে করে সেটি শূন্যে ভেসে না যায়।
এমনকি যে গতিতে lander বিক্রমকে চাঁদের মাটিতে নামানো হবে সেই গতি যথেষ্টই। যে গতিতে বিক্রম চাঁদের মাটিতে নামবে সেই গতিতে যে কারোর হাড়গোড় ভেঙে যেতে পারে। অর্থাৎ যদি চাঁদে মানুষ থাকতো আর তাদের উপর বিক্রম এই গতিতে এসে পড়তো তাহলে হাড়গোড় ভেঙে যেতে পারত। গতিশূন্য অবস্থাতেও এমন অবস্থা! তাহলে ঠিক কত গতিবেগ থাকবে অবতরণের সময় ল্যান্ডার বিক্রমের?
এই বিষয়ে ইসরো সূত্রে জানা যাচ্ছে, যে সময় চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করবে ল্যান্ডার বিক্রম সেই সময় তার গতিবেগ থাকতে পারে সেকেন্ডে ৩ মিটার। ন্যূনতম এই গতিবেগের হিসাব ঘন্টায় দাঁড়ায় ১০.৮ কিলোমিটার। এই গতিবেগে যদি বিক্রম অবতরণ করতে সক্ষম হয় তাহলে বিক্রম এবং প্রজ্ঞান কারো কোনো ক্ষতি হবে না। ইসরো প্রধান এস সোমনাথ জানিয়েছেন, যে গতিতে ল্যান্ডার বিক্রম চাঁদের মাটিতে নামছে, সেই গতিতে মানুষের হাড়গোড় ভেঙ্গে গেলেও চন্দ্রযান ৩ সমস্ত ধাক্কা সামলে নিতে সক্ষম।