নিজস্ব প্রতিবেদন : বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া গভীর নিম্নচাপের ফলে গত সপ্তাহে টানা বৃষ্টি বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে নামিয়ে এনেছে প্লাবন। তবে এমন প্লাবনের জন্য বৃষ্টির জল যত টানা দায়ী তার থেকে বেশি দায়ী DVC থেকে শুরু করে পাঞ্চেত, মাইথন সহ বিভিন্ন জলাধার। অন্ততপক্ষে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে রাজ্য সরকারের প্রশাসনিক মহল এমনটাই দাবি করছেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের বিভিন্ন বন্যা প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করতে গিয়ে এই প্লাবনকে ম্যান মেড বন্যা বলে দাবি করার পাশাপাশি ডিভিসির উপর এক প্রকার সমস্ত দোষ চাপিয়ে দেন। এরই সঙ্গে সঙ্গে ডিভিসির সঙ্গে সমস্ত রকম সম্পর্ক ছিন্ন করার হুঁশিয়ারিও দেন। আর এরপরেই প্রশ্ন উঠছে, ডিভিসির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলে রাজ্যের লাভ না ক্ষতি? রাজ্যের বাসিন্দারা উপকৃত হবেন না সমস্যায় পড়বেন?
ডিভিসি প্রসঙ্গে বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হয় এটি হলো স্বাধীন ভারতের প্রথম কোন ভ্যালি প্রজেক্ট। এর পুরো নাম হল দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন। দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন হলো একটি স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। এই কর্পোরেশন তৈরি করা হয়েছিল মূলত বিহার ও বাংলার বন্যার কথা মাথায় রেখে। যদিও যে অংশ আগে বিহারের অন্তর্গত ছিল তা এখন ঝাড়খণ্ডের অন্তর্গত। এর আরও অনেক ইতিহাস রয়েছে।
আরও পড়ুন : Cusec Meaning: লাখ লাখ কিউসেক জল ছাড়ছে বিভিন্ন জলাধার, কিন্তু জানেন কী ১ কিউসেক মানে কত লিটার জল
দামোদর নদ বন্যাপ্রবণ নদ হওয়ার কারণে প্লাবন ঠেকানোর জন্যই একাধিক বাঁধ নির্মাণ করে তৈরি করা হয়েছিল দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন। যে কর্পোরেশনের আওতায় মোট চারটি বাঁধ রয়েছে। যেগুলি হল পাঞ্চেৎ, মাইথন, কোনার ও তিলাইয়া। বাঙালি বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহা ছিলেন এই কর্পোরেশনের রূপকার।
এখন প্রশ্ন হল ডিসিসির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হলে লাভ না ক্ষতি? ডিভিসিকে বর্ষাকালে অতিরিক্ত জল ছেড়ে দিতে হয় ঠিকই তবে তাদের তরফ থেকে জল ধরে রেখে সারা বছর ধরে চাষাবাদের জন্য জল সরবরাহ করার পাশাপাশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজে লাগানো হয়। এক্ষেত্রে ডিভিসি যদি সারা বছর জল সরবরাহ না করে থাকে তাহলে চাষাবাদের পাশাপাশি বিদ্যুৎ থেকে শুরু করে অন্যান্য বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত জল পেতে ভুগতে হবে বাংলাকে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, ডিভিসির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলে রাজ্যের আটটি জেলার বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যাবে। অন্ধকারে ডুবে যাবে সব এলাকা।