ভারতে রয়েছে এমন একটি রেলপথ, যা আজও ব্রিটিশদের অধীনে, ইংরেজদের দিতে হয় টাকা! এটা কী সত্যি

নিজস্ব প্রতিবেদন : রেল পরিষেবার উপর নির্ভর করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা ছুটে চলেছে বিশ্বের উন্নত দেশগুলির মানুষেরা। তবে রেল পরিষেবার কথা মাথায় রাখলে ভারতীয় রেল (Indian Railways) পরিষেবার কথা সবার প্রথমেই মনে পড়ে। কেননা এই রেল পরিষেবার ওপর নির্ভর করেই প্রতিদিন দেশের হাফ কোটি মানুষ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়াত করে থাকেন।

ভারতীয় রেলের সূত্রপাত হয়েছিল ব্রিটিশদের হাত ধরে। তবে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সেই রেল পরিষেবা ভারত সরকারের হাতে হস্তান্তরিত হয়। ১৯৫২ সালে রেলের জাতীয়করণ করার সময় দেশের সমস্ত জায়গার রেল নেটওয়ার্ক ভারতীয় রেলের হাতে এলেও একমাত্র একটি রেলপথ ভারতীয় রেলের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। সেই রেলপথ এখনো ব্রিটেনের একটি সংস্থার হাতেই নিয়ন্ত্রিত। এমনই দাবি করা হয় একাধিক প্রতিবেদনে।

দাবি করা হয়, ভারতীয় রেল ব্রিটেনের একটি প্রাইভেট সংস্থা ভারতের ওই রেলপথ এখনো নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। ওই রেলপথটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ভারত সরকারকে টাকাও দিতে হয়। কেননা ঐ রেলপথের উপর দিয়ে এখনো বহু মানুষ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা যাতায়াত করে থাকেন। তবে ভারত সরকার টাকা দিলেও ওই রেলপথের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়।

ভারতের মাটিতে ব্রিটিশ প্রাইভেট সংস্থার হাতে থাকা ওই রেলপথটি হল শকুন্তলা রেলওয়ে (Shakuntala Railway)। এটি একটি ন্যারোগেজ রেল লাইন। এই রেল লাইনটি চলে গেছে মহারাষ্ট্রের অমরাবতী থেকে মুর্তজাপুর পর্যন্ত। এই রেললাইন তৈরি হয়েছিল ১৯১৬ সালে। এই রেল লাইনের উপর দিয়ে এখনো একটি ট্রেন চলাচল করে আর তার নাম হলো শকুন্তলা এক্সপ্রেস (Shakuntala Express)।

এই রেল লাইনের দৈর্ঘ্য ১৯০ কিলোমিটার হলেও এখন অচলপুর ও জবতমালের মধ্যে একটি প্যাসেঞ্জার ট্রেন দৌড়ায়। এই লাইনের উপর দিয়ে ১০০ বছরের পুরাতন একটি স্টিম ইঞ্জিন যাতায়াত করতো। যদিও ৫ কোচের ওই ট্রেনটির ইঞ্জিন ১৯৯৪ সালে বদলে ডিজেল ইঞ্জিনে রূপান্তরিত করা হয়। এই রেললাইন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ভারত সরকারকে প্রতিবছর ১২ কোটি ২০ লক্ষ টাকার রয়্যালটি নিতে হয় বলে জানা যাচ্ছে। তবে তার পরেও ৬০ বছর ধরে রেললাইনে কোন মেরামতি না হওয়ায় ট্রেন ২০ কিলোমিটারের বেশি গতিবেগ তুলতে পারে না। আবার এই লাইন ভারতীয় রেল নিজেদের আওতায় আনার একাধিকবার চেষ্টা করলেও তা সফল হয়নি।

বিভিন্ন প্রতিবেদনে দাবি করা এই সকল তথ্যের বিষয়টিকে অবশ্য ভারতীয় রেল সম্পূর্ণভাবে খারিজ করে দিয়েছে। খারিজ করে দেওয়ার পাশাপাশি ভারতীয় রেলের তরফ থেকে দাবী করা হয়েছে, শকুন্তলা রেলওয়ে এই মুহূর্তে কোন ট্রেন চলাচল করে না এবং এই লাইনের জন্য ব্রিটিশদের কোনরকম টাকা দিতে হয় না।