নিজস্ব প্রতিবেদন : আরজি কর কাণ্ডের ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার ছাত্রসমাজের তরফ থেকে যে নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছিল, সেই অভিযানের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠেন এক বৃদ্ধ। হাওড়া ব্রিজের দাঁড়িয়ে পুলিশের জল কামানকে তোয়াক্কা না করে পুলিশকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়াই তিনি মাত্র কয়েক ঘণ্টাতেই হিরো হয়ে ওঠেন। ঐ বৃদ্ধ হিরো হয়ে ওঠার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে নিয়ে একের পর এক ভিডিও ভাইরাল হতে শুরু করে।
ভাইরাল হওয়া ওই সকল ভিডিওতে দাবি করা হচ্ছে, হাওড়া ব্রিজে জল কামানের সামনে দাঁড়িয়ে ওই বৃদ্ধ পুলিশকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে হাতে চুড়ি পরার নিদান দিয়েছেন। এমন বিষয়টি ভাইরাল হওয়ার পর আবার কয়েক ঘন্টার মধ্যে হিরো হয়ে ওঠা ওই বৃদ্ধকে ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। হাতে চুড়ি পরার নিদান দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকেই দাবি করছেন, ‘মহিলাদের সম্মান দিতে জানে না তারাই আবার আরজিকর কাণ্ডে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে আন্দোলনে নেমেছেন।’
এরপরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে ওই বৃদ্ধ কি সত্যিই পুলিশকে হাতে চুড়ি পরার নিদান দিয়েছিলেন? সম্প্রতি সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। নবান্ন অভিযানে হিরো হয়ে ওঠা ওই বৃদ্ধ হলেন বলরাম বসু (Balaram Basu)। তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। তিনি একজন শিবভক্ত এবং সনাতন ধর্মাবলম্বী। তিনি আর চার পাঁচটা তরতাজা যুবকের থেকে নিজেকে আলাদা করে হাওড়া ব্রিজে পুলিশের জল কামানের সামনে দাঁড়িয়ে পত পত করে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছিলেন।
এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলরাম বসু জানিয়েছেন, জল কামানের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি পুলিশকে হাত নাড়িয়ে বলেছিলেন, হাতকড়া ছাড়িয়ে বেরিয়ে আসতে এবং তাদের সঙ্গে পা মিলিয়ে নবান্ন অভিযানে নামতে। আর যদি তা না করতে পারেন তাহলে আরও এত পরিমাণে জল ছোঁড়া হোক যাতে করে অভিযানে নামা সবাই ভেসে যায়।
#WATCH | Kolkata: Balram Bose, who took part in the 'Nabanna Abhiyan' march yesterday, says, "The agitation was called by students but it was said that one individual from every household should join it. I too have women in my house. So, we should be concerned for their safety.… https://t.co/25ejt95Dd8 pic.twitter.com/trqbGREtGa
— ANI (@ANI) August 28, 2024
তার এমন সাক্ষাৎকারের পর স্পষ্ট, তিনি কিন্তু পুলিশকে চুড়ি পরার নিদান দেননি। পুলিশকে হাতে চুড়ি পরার নিদান কেউবা কারা নিজেদের মতো করে বানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে। যদিও এইভাবে ভাইরাল করার পরিপ্রেক্ষিতেই কিন্তু বলরাম বসু হিরো হয়ে উঠেছেন। অন্যদিকে বলরাম বসু দাবি করেছেন, তিনি মহিলাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য আন্দোলনে নেমেছিলেন। তার এই আন্দোলনে নামার পিছনে কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই এবং তিনি চান না এই আন্দোলনে রাজনীতির রং লাগুক। ছাত্র সমাজের তরফ থেকে প্রত্যেক বাড়ি থেকে একজনকে অভিযানে আসার আহ্বান জানানো হয়েছিল আর তারই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ওই অভিযানে গিয়েছিলেন। কারণ তারও বাড়িতে মেয়েরা রয়েছে।