২১ হাজার টাকা নিয়ে দেশের অন্যতম শিল্পপতি, জামশেদজি টাটার অজানা কাহিনী

নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারতের শিল্প ক্ষেত্রে যে সকল শিল্পপতিরা নজির তৈরি করেছেন তাদের মধ্যে একজন হলেন জামশেদজি টাটা। দেশের বিখ্যাত এই শিল্পপতি ১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দের ৩ মার্চ জন্মগ্রহণ করেছিলেন দক্ষিণ গুজরাতের একটি ছোট্ট শহর নাভিসারিতে। বাবা ছিলেন নাসরওয়ানজি টাটা এবং মা ছিলেন জীবনবাই।

জামশেদজি টাটা যখন এই শহরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তখন শহরটি ছিল বরোদা রাজ্যের অংশ। জামশেদজি টাটার বাবা ছিলেন পার্সি পুরোহিত। বংশপরম্পরায় তাদের পেশা ছিল পৌরোহিত্য। জামশেদজি টাটার বাবা পর্যন্ত ২৫ প্রজন্ম এই পেশায় যুক্ত ছিলেন। কিন্তু পরবর্তীকালে তারা ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নেন এবং সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা চলে আসেন বোম্বেতে।

তাদের এই ব্যবসা শুরু হয়েছিল জামশেদজি টাটার বাবা নাসরওয়ানজি টাটার হাত ধরে। ছোট ব্যবসায়ী হিসেবে ব্যবসা শুরু করেছিলেন তিনি। জামশেদজির বয়স যখন মাত্র ১৩ বছর সেই সময় তাকে বোম্বেতে একটি স্কুলে ভর্তি করা হয়। ২৯ বছর বয়স পর্যন্ত জামশেদজি তার বাবার ব্যবসার সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন।

এরপর ১৮৬৮ সালে ২১০০০ টাকা মূলধন নিয়ে ট্রেডিং কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন জামশেদজি। জানা যায়, জামশেদজি অত্যন্ত ধনী হলেও তার হাবভাব চালচলন ছিল একেবারে সাধারণ মানুষের মতো। মুম্বইতে তার বাড়ি, এসপ্ল্যানেড হাউস সব ক্ষেত্রেই তার বন্ধু-বান্ধব এবং দূরের আত্মীয়দের জন্য অবাধ প্রবেশ ছিল। তিনি সন্তানদের সঙ্গে সব সময় নম্র ব্যবহার করতেন এবং তাদের নম্র হতে শিখিয়েছিল। কখনোই সময় অথবা অর্থ অপচয় করতে দিতেন না। এমনকি বিত্তশালী হয়ে সমাজের অন্যান্য মানুষদের সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে কখনো মদ অথবা অন্য কোন নেশা করেন নি।

অন্যদিকে জামশেদজি টাটার এহেন আচরণ এবং শিল্প ক্ষেত্রে তাঁর কৃতিত্বের জন্য জহরলাল নেহেরু তাকে আধুনিক ভারতের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বলে আখ্যা দিয়েছেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার ব্যবসা থাকলেও তিনি লৌহ ইস্পাত শিল্পের জন্য অমর হয়ে রয়েছেন। তার নামেই গড়ে উঠেছে জামশেদপুর শহর। এই মহান শিল্পপতি নিজের অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য ১৯০০ খ্রিস্টাব্দে জার্মানি সফরে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দের ১৯ মে প্রয়াত হন।