নিজস্ব প্রতিবেদন : বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে (Cyclone) পরিণত হবে তা মোটামুটি দিন কয়েক আগে থেকেই টের পাওয়া গিয়েছিল। তবে এই ঘূর্ণিঝড় এখন আরও বেশি শক্তি সঞ্চয় করে রূপ নিয়েছে তীব্র ঘূর্ণিঝড়ের (Severe Cyclone)। হাওয়া অফিসের তরফ থেকে যে পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে তাতে মনে করা হচ্ছে মঙ্গলবার দুপুর বেলাতেই এই ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়বে তামিলনাড়ু এবং অন্ধ্রপ্রদেশে।
ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম (Michuang) এর প্রভাব ইতিমধ্যেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে দেশের দক্ষিণের বিভিন্ন অংশে। সোমবার থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে তামিলনাড়ু এবং অন্ধ্রপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গায়। শুধু বৃষ্টি নয়, ভারী বৃষ্টির সঙ্গে চলছে দমকা হাওয়া। এই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে ইতিমধ্যেই সতর্কবার্তা দিয়েছে মৌসম ভবন। তবে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কেবলমাত্র তামিলনাড়ু এবং অন্ধ্রপ্রদেশের উপরেই সীমাবদ্ধ নয়। পরোক্ষভাবে হলেও এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গে।
ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের পরোক্ষ প্রভাবে সোমবার সকাল থেকেই কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ জেলা মেঘে ঢাকা পড়েছে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পারদ ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া, কলকাতা সহ ১১ জেলায় বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। মূলত মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দফাই দফাই দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টির দেখা মিলবে।
এই যে ঘূর্ণিঝড় ভারত ভূখণ্ডে আছড়ে পড়তে চলেছে সেই ঘূর্ণিঝড়ের নাম কোন দেশ রাখল? এই নামের অর্থই বা কি? ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ প্রসঙ্গে বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হয় বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (WMO) বা ESCAP-এর অন্তর্ভুক্ত ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ওমান, ইরান, কাতার, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহী বঙ্গোপসাগর, ভারত মহাসাগর, আরব সাগর সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড়গুলির নামকরণ করে থাকে। নামকরণ করার কারণ হলো প্রত্যেক জায়গায় যাতে একই নামে ঘূর্ণিঝড়ের পরিচিতি পাওয়া যায়।
সম্প্রতি যে ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তে চলেছে এর নামকরণ করা হয়েছে মায়ানমারের তরফ থেকে। মিগজাউম নামটির অর্থ হল শক্তি বা প্রতিরোধ। ২০২৩ সালে এখনো পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে চারটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে ভারত মহাসাগরে উদ্ভূত ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা ধরলে এই ঘূর্ণিঝড় হলো ষষ্ঠ। তবে বর্তমান আবহাওয়ার দিকে নজর রাখলে এটিই চলতি বছরের শেষ ঘূর্ণিঝড় হতে চলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।