আম্বানি-আদানি-টাটা ফেল! রোজগারের ৯০% দান করে ইনিই ভারতের সেরা দাতা

নিজস্ব প্রতিবেদন : শুধু টাকা থাকলেই হয় না, সঙ্গে থাকতে হয় বড় মন। গুণীজনরা বারবার এই কথা বলে আসছেন। তবে গুণীজনদের এই কথা কতজন আর মেনে চলতে সক্ষম। তবে আম্বানি-আদানিদের মত বড় বড় শিল্পপতিরা গুণীজনদের এই কথা মাথায় রেখে নিজেদের আয়ের ছোট্ট একটি অংশ দান ধ্যানের কাজে লাগান। যদিও এই তালিকায় সবার উপরে রয়েছেন রতন টাটা (Ratan Tata)। যিনি নিজের সম্পত্তির বেশ কিছু অংশ দেশের মানুষদের জন্য কাজে লাগিয়ে থাকেন।

তবে এই সকল মানুষদের বাইরেও ভারতে এমন একজন রয়েছেন যিনি আম্বানি-আদানি-টাটাদের মত শিল্পপতিকেও হার মানিয়েছেন। যার কথা বলা হচ্ছে তিনি নিজের রোজগারের ৯০ শতাংশই দান করে থাকেন। তার এমন কীর্তির জন্য তিনি দেশের সবচেয়ে সেরা দাতা হিসাবে পরিচিত লাভ করেছেন। এই ব্যক্তিটি আবার কোন বড় শিল্পপতি নন, তার কাছে অঢেল টাকা নেই, কিন্তু তার মন বড়।

এমন বড় মনের মানুষটি হলেন ফকির চাঁদ (Fakir Chand)। তিনি হরিয়ানার কৈথাল জেলার বাসিন্দা। ৫৩ বছর বয়সী এই মানুষটি ২৫ বছর ধরে স্ক্র্যাপ ডিলার হিসাবে কাজ করছেন। তিনি তার রোজগারের ৯০ শতাংশ আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষদের জন্য দাতব্য প্রতিষ্ঠানে দান করে থাকেন। নিজে এক কামরার একটি ঘরে থাকেন আর প্রয়োজনের বাইরে একটুকুও খরচ করেন না নিজের রোজগার থেকে।

একেবারে সাদামাটা জীবন-যাপন করা ফকির চাঁদের তরফ থেকে জানা গিয়েছে, তারা মোট পাঁচ ভাইবোন ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে তিনি কেবল একা। তিনি তার রোজগারের অংশ থেকে ১১ লক্ষ টাকা এবং তার ভাই বোনেদের অংশ থেকে ২৪ লক্ষ টাকা ইতিমধ্যেই সাধারণ মানুষদের জন্য দান করেছেন। তিনি চাইলে এই বিপুল অংকের টাকা দিয়ে ভালোভাবে জীবনযাপন করতে পারতেন। কিন্তু তিনি কষ্টার্জিত অর্থে বিশ্বাস করেন।

Fakir chand haryana

আর সেই বিশ্বাস থেকেই গত ২৫ বছর ধরে তিনি বিভিন্ন জায়গা থেকে কার্ডবোর্ড সংগ্রহ করে থাকেন এবং সেগুলি ভাংরি দোকানে বিক্রি করেন। প্রতিদিন পায়ে হেঁটে তিনি এই কাজ করেন এবং এখান থেকে তার গড়ে প্রতিদিন রোজগার হয় ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। কিন্তু সেই টাকার দেড়শ টাকার মতো তিনি নিজের কাছে রাখেন এবং বাকি দান করে দেন। ফকির চাঁদ এই পর্যন্ত পাঁচ জন দরিদ্র মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। প্রত্যেক জনকে বিয়ের সময় প্রায় ৭৫ হাজার টাকার জিনিসপত্র কিনে দিয়েছেন। এছাড়াও ধর্মশালা, গরু থাকার জন্য একটি ছাউনি, গোশালা ইত্যাদি তৈরি করেছেন এবং কুরুক্ষেত্রের অরুণায় মন্দিরের ধর্মশালার জন্য ছাউনি তৈরি করে দিয়েছেন। এছাড়াও ২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা ব্যয় একটি ঘর বানিয়ে দিয়েছেন যেখানে বৃদ্ধরা থাকেন। পাশাপাশি একটি খাটু শ্যাম মন্দির কৈথালে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে শেড বানিয়ে দিয়েছেন।