নিজস্ব প্রতিবেদন : বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী এলাকায় হিসাবে পশ্চিমবঙ্গ, বাংলাদেশ, ওড়িশা সহ বেশ কিছু জায়গা মে মাসে দফায় দফায় ঘূর্ণিঝড়ে (Cyclone) তছনছ হয়েছে। পরিসংখ্যানের দিকে নজর রাখলে দেখা যাবে, অন্ততপক্ষে ১৫ বছর আগে মে মাসেই বাংলা তছনছ করেছিল ঘূর্ণিঝড় আয়লা। এরপর টানা ১০ বছর ব্রেক পায় বাংলা। তবে তারপর দফায় দফায় ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ে কেবলমাত্র মে মাসেই। এরপর ফণী, আমফান, ইয়াসের ঘূর্ণিঝড়ের মুখোমুখি হয়েছে বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী বিভিন্ন এলাকা।
মে মাসে যখন দফায় দফায় একের পর এক ঘূর্ণিঝড়কে ভয় দেখাতে দেখা গিয়েছে, ঠিক সেই সময় আবার ২০২৪ সালের মে মাসেই আরও একটি ঘূর্ণিঝড় ভূভাগে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই নতুন করে যে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে তাতে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বাংলার বাসিন্দারা। আর এই বিষয়েই বৃহস্পতিবার শেষ আপডেট (Cyclone Latest Update) দিয়েছে হাওয়া অফিস।
নতুন করে যে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে সেই ঘূর্ণিঝড়ের দাপট পশ্চিমবঙ্গে কেমন দেখা যাবে তা নিয়ে হাওয়া অফিসের তরফ থেকে যে আপডেট দেওয়া হয়েছে সেই আপডেট অনুযায়ী, হয়তো খুব একটা আঁচড় নাও পড়তে পারে বাংলার বুকে। স্বাভাবিকভাবেই হাওয়া অফিসের এই শেষ আপডেট এখন রাজ্যের বাসিন্দাদের কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে। তবে এরই সঙ্গে একটি নয়, দুটি নিম্নচাপের ইঙ্গিতও মিলেছে।
দু’সপ্তাহের আউটলোকে আবহবিদরা জানিয়েছেন, শুধু বঙ্গোপসাগর নয়, বঙ্গোপসাগরের পাশাপাশি আরব সাগরেও নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে। এক্ষেত্রে সম্ভাব্য দিন হিসেবে বলা হয়েছে, ২২ মে আরব সাগর এবং ২৩ মে বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরি হবে। এখন সেই নিম্নচাপ শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয় কিনা তার দিকেই তাকিয়ে আবহাওয়াবিদরা। কেননা নিম্নচাপ শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার জন্য বেশ কিছু শর্তের প্রয়োজন হয়।
নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার ক্ষেত্রে শক্তি বৃদ্ধির জন্য যে সকল শর্তের প্রয়োজন হয় তার মধ্যে অন্যতম হলো, সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা অন্ততপক্ষে ২৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে হয় এবং তা ৫০ মিটার পর্যন্ত বিরাজ করতে হয়। এক্ষেত্রে এখন বঙ্গোপসাগরের সমুদ্রপৃষ্ঠের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩০ থেকে ৩১ ডিগ্রি রয়েছে। সুতরাং নিম্নচাপ শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার ক্ষেত্রে অনুকূল পরিবেশ পাচ্ছে।
হাওয়া অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৩ মে নিম্নচাপ তৈরি হওয়ার পর ২৪ মে তা শক্তি বৃদ্ধি করে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। পরবর্তীতে আরও শক্তি বৃদ্ধি করার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া এই সিস্টেম ধীরে ধীরে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে এগোতে পারে। আর এমনটা যদি হয় তাহলে বাংলার বুকে খুব একটা আঁচড় ফেলতে পারবে না এই ঘূর্ণিঝড়। এছাড়াও হাওয়া অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, আমফান অথবা ইয়াসের মত শক্তিশালী হবে না এই ঘূর্ণিঝড়।