নিজস্ব প্রতিবেদন : আর্থিক সংকট কাটিয়ে দেশকে নতুন করে স্থিতিশীল করার পর পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে রনিল বিক্রমাসিংহ রাষ্ট্রপতি থেকে তৃতীয় স্থানে নেমে আসেন। এবার উল্লেখযোগ্য ভাবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয় যুক্ত হয়ে শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলেন জনতা বিমুক্তি পেরামুনার বৃহত্তর জোট ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ারের নেতা অনুরা কুমারা দিসানায়েকে (Anura Kumara Dissanayake)। যিনি একজন দিনমজুরের ছেলে আর সেই দিনমজুরের ছেলে থেকেই আজ শ্রীলঙ্কার প্রধান হয়ে উঠলেন।
অনুরা কুমারার জন্ম কলম্বো থেকে ১৭০ কিলোমিটার দূরে অনুরাধাপুরা জেলার থাম্বুতেগামা গ্রামে। তার বাবা দিনমজুর এবং মা গৃহবধূ হলেও ছেলেকে শিক্ষিত করতে পেরেছিলেন। দিনমজুরের ছেলে হলেও অনুরা ভালোভাবে পড়াশুনা করে উচ্চশিক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি কেলানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান ডিগ্রী অর্জন করে স্নাতক হন। উচ্চশিক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি অনুরা ছাত্র জীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন।
১৯৮৭ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত শ্রীলঙ্কায় তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জয়াবর্ধনে ও আর প্রেমাদাসার সাম্রাজ্যবাদী ও পুঁজিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে যে সশস্ত্র আন্দোলন হয়েছিল সেই সশস্ত্র আন্দোলন পরিচালিত করেছিলেন অনুরা কুমারা দিসানায়েকে। শ্রীলংকার পরবর্তী রাষ্ট্রপতি অর্থাৎ অনুরা মূলত মার্কসবাদী একজন নেতা। ১৯৯৫ সালে তিনি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র সমিতির জাতীয় সংগঠক পদে উন্নীত হওয়ার পাশাপাশি পরবর্তীতে জেভিপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটিতে নিযুক্ত হন। ১৯৯৮ সালে তিনি পলিট ব্যুরোর সদস্য হন।
অনুরা কুমারা দিসানায়েকের আগে যিনি রাষ্ট্রপতি ছিলেন অর্থাৎ রনিল বিক্রমাসিংহকে ভারত বন্ধু হিসাবেই মনে করা হয়। তবে অনুরা ভারত বিরোধী নাকি ভারত বন্ধু তা নিয়ে সাধারণ মানুষদের মধ্যে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। এক্ষেত্রে বলা যায় অনুরা মার্কসবাদী একজন দলের প্রতিনিধি হওয়ার কারণে ভারতের সঙ্গে তার সম্পর্ক আগামী দিনে কতটা গভীর হবে তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়।
এমনিতেও অনুরা ভারত থেকে যাওয়া তামিল বংশোদ্ভূত এস্টেট শ্রমিকদের ভারতীয় সম্প্রসারণবাদের হাতিয়ার বলে নিন্দা করেছিলেন। এছাড়াও তার দল বাণিজ্য সম্পর্কিত অর্থনৈতিক চুক্তির বিরোধিতা করেছে। এছাড়াও কাচাথিভু দীপকে ভারতে ফিরিয়ে দেওয়ার যে প্রচেষ্টা, সেই সমস্ত প্রচেষ্টার বিরোধিতা করেছেন তিনি। সুতরাং এসবের পরিপ্রেক্ষিতে বলা যেতেই পারে, শ্রীলংকার নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতির হাত ধরে নতুন করে মালদ্বীপের মত পরিস্থিতি তৈরি না হয়।