নিজস্ব প্রতিবেদন : স্বাধীনতার ছিয়াত্তর বছর পার হয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত রাজ্যের অন্যতম হাই ভোল্টেজ এলাকা নন্দীগ্রামে (Nandigram Rail project) কোন রেল প্রকল্প বাস্তবায়িত করা সম্ভব হয়নি। অথচ নন্দীগ্রামে রেল প্রকল্প চালু করার জন্য ২০১০ সালেই তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি প্রকল্পের শিলান্যাস করেছিলেন। কিন্তু সেই প্রকল্প শিলান্যাস হয়ে শিল্যান্যাসের জায়গাতেই থেকে গিয়েছে দীর্ঘদিন।
নন্দীগ্রামের এই রেল প্রকল্পের জন্য নন্দীগ্রামে একটি রেল স্টেশন এবং প্লাটফর্মও তৈরি হয়ে গিয়েছে। তবে লাইন পাতার কাজ সম্পূর্ণ করা সম্ভব হয়নি। তবে সম্প্রতি আশার আলো জুগিয়ে দক্ষিণ পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার অনিল কুমার মিশ্রা দাবি করেছেন, দুই থেকে আড়াই বছরের মধ্যেই এই প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়িত হয়ে ট্রেন ছুটতে শুরু করবে।
ভারতীয় রেলের (Indian Railways) তরফ থেকে কাঁথির দেশপ্রাণ থেকে নন্দীগ্রাম পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণের এই প্রকল্পের কাজ পুনরায় দ্বিতীয়বারের জন্য চালু করা হয়েছে। আর এই দ্বিতীয়বারের কাজেই আশা করা হচ্ছে পুরো প্রকল্প শেষ করবে কেন্দ্র সরকার। এই রেলপথের ১৮.৫ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে দুটি বড় সেতুর কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। আর এসবের পরিপ্রেক্ষিতেই আশা করা হচ্ছে আগামী দু’বছর বা আড়াই বছরের মধ্যেই হয়তো নন্দীগ্রাম ভারতীয় রেলের মানচিত্রে জুড়ে যাবে।
আরও পড়ুন ? Digha Jaleswar Rail line: আর ঘুরপথে নয়, এবার দীঘা থেকেই সোজা ট্রেনে জলেশ্বর, সুখবর দিল রেল
তবে একটি প্রশ্ন অনেকের মধ্যেই ঘোরাফেরা করছে আর সেই প্রশ্নটি হল, ২০১০ সালে ১৮৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেও কেন ১৪ বছরেও এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করা সম্ভব হলো না? নন্দীগ্রাম, রাজ্যের যে জায়গা বার বার রাজনৈতিক থেকে শুরু করে সামাজিক বিভিন্ন কারণে শিরোনামে আসে সেই জায়গায় রেল পরিষেবা নিয়ে কেন এমন অবহেলা? কেন সরকার পরিবর্তনের পরেও এখানে রেল পরিষেবা চালু করা সম্ভব হলো না?
আসলে নন্দীগ্রাম পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণের কাজ বিলম্বিত বা বাধা পাওয়ার পিছনে যে কারণ লুকিয়ে রয়েছে রয়েছে তা হল নিচু জমি। এখানকার জমি এতটাই নিচু যে তা ভরাট করার জন্য যে পরিমাণ মাটির প্রয়োজন তা আশেপাশে পাওয়া যাচ্ছে না। রেলের হিসেব অনুযায়ী এখানকার নিচু জমি ভরাট করার জন্য প্রয়োজন ১৮ লক্ষ কিউবিক মিটার মাটি। এটি এখন রেলের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়। তবে অমৃত ভারত স্টেশন প্রকল্পের আওতায় নতুন করে নন্দীগ্রাম পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণের বিষয়টি উঠে এসেছে এবং হাল ফেরানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। রেলের তরফ থেকেও বিভিন্ন ঠিকাদারদের সঙ্গে কন্টাক্ট করে ১০ কিলোমিটার দূর থেকে মাটি আনার কাজ চালানো হবে। ৬ মাস ধরে মাটি ভরাটের কাজ হওয়ার পর লাইন পাতার কাজ শুরু হবে বলেই জানা যাচ্ছে রেল সূত্রে।