Know the Success Story of Murshidabad Judicial Magistrate Rahul Sheikh: কম-বেশি বহু মধ্যবিত্ত, গরিব পরিবারের ছেলেদের ইঞ্জিনিয়ার, উকিল, শিক্ষক প্রভৃতি বড় বড় কিছু হওয়ার স্বপ্ন থাকে। কিন্তু অনেকেরই মেরিট থাকলেও অর্থের অভাবে সেই স্বপ্ন পূরণ করতে পারে না। তবে অর্থ আর স্বপ্ন পূরণে বাধা নয়। যা প্রমাণ করে দেখালেন মুর্শিদাবাদের রাহুল শেখ। অত্যন্ত গরিব পরিবারের ছেলে রাহুল। সেই পরিবার থেকে কিভাবে আজ বিচারক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করলেন তিনি? আজকের প্রবন্ধে সেই সফলতার গল্প (Success Story of Rahul) তুলে ধরা হয়েছে। যা বর্তমান প্রজন্মের মধ্যবিত্ত, গরিব ছেলে-মেয়েদের অনুপ্রেরণা জোগাবে।
জঙ্গিপুরের মঙ্গলজোন এলাকার বাসিন্দা রাহুল শেখ। বাবা পেশায় রাজমিস্ত্রি। মা গৃহবধূ। তবে বসে থাকে না। অভাবের সংসারে অর্থ জোগাড় করতে অবসর সময় বাঁধেন বিড়ি। চার ভাই, এক বোন ও মা-বাবাকে নিয়ে অত্যন্ত কষ্টের সংসার রাহুল শেখের। তবে বোনের বিয়ে হয়েছে। পরিবারের দ্বিতীয় সন্তান তিনি। পড়াশোনায় ভালোই মেধাবী। তবে অর্থের অভাবে একটা সময় পড়াশোনা থামিয়ে দেওয়ার অবস্থা হয়েছিল। কিন্ত থেমে থাকেননি। সেই আর্থিক প্রতিকূলতাকে জয় করে বর্তমানে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হয়ে তাক লাগালেন রাহুল (Success Story of Rahul)। খবর প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল এলাকা জুড়ে।
সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে পশ্চিমবঙ্গ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষার ফলাফল। যে পরীক্ষায় ১২ নম্বর স্থানে র্যাঙ্ক করেছেন রাহুল শেখ। আহিরনের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তিনি। তার কথায়, আইন নিয়ে পড়াশোনা করার স্বপ্ন তার প্রথম থেকেই। অত্যন্ত দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এলেও তিনি লক্ষ্যভ্রষ্ট করেননি। লক্ষ্য স্থির রেখেই এগিয়ে গিয়েছে। সেইমতো সাফল্য পেয়েছে। যে সাফল্যে গর্বিত মুর্শিদাবাদসহ বাংলাবাসী।
আরও পড়ুন ? Indrajit Dan: বাবা গ্যাস গোডাউনের অস্থায়ী কর্মী! ছেলের উচ্চমাধ্যমিকে ৪৮১, লক্ষ্য UPSC
সূত্রের খবর, রাহুলের উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা জঙ্গিপুর মহকুমার বারালা রাম দাস সেন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। তারপর B.A L.L.B ডিগ্রী অর্জন করার জন্য ভর্তি হয় আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের মুর্শিদাবাদ শাখায়। ২০১৮ সালে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস আউট হয়ে L.L.MZএর জন্য ভর্তি হয় পাঞ্জাব সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে পিএইচডি সম্পন্ন করে বসেন জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষায়। আর সেই পরীক্ষাতে ১২নম্বর স্থানে উত্তীর্ণ হন রাহুল শেখ। যে খবর শুনে খুশি রাহুলের পরিবারসহ প্রতিবেশী মহল। এলাকাবাসীর মতামত রাহুল শেখ বর্তমান প্রজন্মের উদাহরণ।
রাহুলের এই অসামান্য সাফল্যে (Success Story of Rahul) গর্বিত রাহুলের পুলিশ অফিসার বড়দা। নাম সাহিবুল শেখ। প্রথম দিকে রাহুলের পড়াশোনার পিছনে খরচ জুগিয়েছেন তার মা। পরবর্তীতে রাহুলের পড়াশোনার জন্য আর্থিক কৃতিত্ব রয়েছে তার পুলিশ অফিসার বড় দাদা সাহিবুল শেখের। মূলত বড়দার চাকরি পাওয়ার পরেই সচ্ছলতা এসেছে তাদের সংসারে। উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পর বোনের বিয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে ভাইদের পড়াশোনা সব কিছুতেই রয়েছে তার কৃতিত্ব। ফলে ভাইয়ের দুর্দান্ত ফলাফলে অত্যন্ত আনন্দ প্রকাশ করেছে বড়দা। তার কথায় ভাই তার লক্ষে স্থির থেকেছে। পাশাপাশি তাদের সংসারেও আধার কেটে গিয়ে আলো এসেছে। ভাইয়ের এই গর্বে তিনি অত্যন্ত গর্বিত বলে জানিয়েছেন। রাহুলের অন্য দুই ভাইও পড়াশোনা করছেন। একজন স্নাতক অধ্যায়নরত এবং অপরজন দশম শ্রেণীতে পড়ছে।