Traffic congestion in Kolkata: রাস্তা-ঘাট, স্কুল-কলেজ, অফিস-কাছারি সব জায়গাতেই চলছে দুই চাকার দৌরাত্ম্য। সিগন্যাল সবুজ হলেই দে ছুট! স্কুল বা অফিস টাইম ছাড়াও সারাদিনের সব সময়ই রাস্তায় ঝড় তুলে চলে বাইক ও স্কুটার। শহরবাসীর কাছে এই অস্বাভাবিক দৃশ্য নতুন নয়। রাস্তায় চলতি পথে সবারই নজরে পড়ে এই দিচক্র যানের দৌরাত্ম্য। এবার এই তত্বতে স্বীকৃতি দিলো লালবাজারের তরফে প্রকাশিত এই নতুন রিপোর্ট। রিপোর্ট অনুযায়ী কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় অতিরিক্ত যানজট অথবা ধীর গতির ট্রাফিক পরিষেবার মূলে রয়েছে দ্রুত গতিতে বাড়তে থাকা এই দিচক্র যানের সংখ্যা। সঙ্গে দোসর হিসেবে ছোট গাড়ির কথাও অস্বীকার করা যায়না।
রিপোর্টটির মূল কথা হলো ঝড়ের গতিতে কলকাতার রাস্তায় বেড়ে চলেছে যানবাহনের সংখ্যা। কলকাতার আয়তন একই রকম থাকলেও বাড়তে থাকা যানবাহনের সংখ্যা (Excessive Vehicle Problem in Kolkata) কার্যত তিলোত্তমার রাস্তাঘাটে ঝড় তুলছে। তথ্য অনুযায়ী গত বছর থেকে চলতি বছরে শুধুমাত্র কলকাতাতে যানবাহনের সংখ্যা বেড়েছে ১ লক্ষ ৩০ হাজারটির বেশি। যার মধ্যে নতুন বাইক বা স্কুটির সংখ্যাই ৮৫ হাজারের কাছে। সব থেকে বড় দুশ্চিন্তার বিষয় হলো রোজ গড়ে ২৩৩টির বেশী নতুন স্কুটার বা বাইক নামছে কলকাতার রাস্তায়।
আরো পড়ুন: এবার আরও সহজ সিউড়ি থেকে বর্ধমানের পথ এলো নতুন বাস পরিষেবা
সম্প্রতি কলকাতার রাস্তাঘাট এবং তার যানজটের কারণ নিয়ে কলকাতা পুলিশের তরফে একটি বিশেষ সমীক্ষার আয়োজন করা হয়। যেখানে উঠে এসেছে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য। যা মানুষ তো বটেই সঙ্গে প্রশ্নের মুখে আসছে পরিবেশের স্বাস্থ্যের চিন্তা (Traffic congestion in Kolkata)। জানা যাচ্ছে বর্তমানে সরকারি ভাবে সব মিলিয়ে ২২লক্ষ ২৯হাজার ৫৯৪টি গাড়ি চলাচল করছে মহানগরীর রাস্তায়। এছাড়াও প্রতিবেশী কিছু ভিনরাজ্যের পণ্যবাহী এবং যাত্রীবাহী গাড়িও ক্রমাগত যাতায়াত করে কলকাতার রাস্তায়। রিপোর্ট বলছে গতবছর যেখানে যানবাহনের সংখ্যা ছিল ২০ লক্ষ ৯৯ হাজার ৭১৫টি সেখানেই এবছর সেই সংখ্যা বেড়েছে প্রায় দেড় লক্ষের কাছে।
আরো পড়ুন: তিলপাড়া ব্রিজের নিচে রয়েছে এমন এক জিনিস, যা আপনিও কোনদিন দেখেননি
যানবাহনের পরিমাণ বাড়লেও শহরের আয়তন রয়ে গেছে একই। ফলে ক্রমাগত বাড়ছে যানজট এবং দূষণের মতো সমস্যা (Traffic congestion in Kolkata)। এই বিশাল যানজটের সমুদ্র ভবিষ্যতে আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছে লালবাজার। অফিসের সময় আরও বাড়বে স্টপেজ টাইম এমনটাই খবর। এই প্রসঙ্গে একজন যাত্রী জানান চার বছর আগেও মোমিনপুর ক্রসিংয়ে স্টপেজ টাইম থাকতো ২৫-৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই। অন্যদিকে অফিসের সময়ে হাজরা, গড়িয়াহাট ও রাসবিহারিতে সর্বাধিক স্টপেজ টাইম থাকতো ৫০-৫৫ সেকেন্ড। তবে বর্তমানে এই বড় বড়ো ক্রসিংগুলোতেই ১২০ সেকেন্ডের বেশি সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে অফিসের সময়।
ফলে বোঝাই যাচ্ছে দ্রুত বাড়ছে ক্রসিংয়ের অপেক্ষার সময়ও। চার বছরে এই সময় বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় এক মিনিট। ফলে ভবিষ্যতে যে এই যানবাহনের সমস্যা (Traffic congestion in Kolkata) আরও ভোগান্তি আনতে চলেছে সেই বিষয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছে কলকাতা পুলিশ। তবে যানজটের থেকে মুক্তি পেতে সিগন্যালিং ব্যবস্থা আরও উন্নত করার চেষ্টা চলছে। এবার স্মার্ট সিগন্যালিং, অপটিক্যাল ফাইবারের মতো উন্নত প্রযুক্তি আনার কথা ভাবা হচ্ছে। এছাড়াও নূন্যতম স্টপেজ টাইম বেঁধে দেয়ার চেষ্টাও করা হচ্ছে লালবাজারের তরফে। কিন্তু এর পরেও চিন্তা কমছেনা প্রশাসনের। কারণ দুই চাকার চালকদের মধ্যে সিগন্যাল ভাঙার প্রবণতা বেশি থাকে ফলে কিভাবে সমস্ত পরিস্থিতি সামলানো যাবে সেই নিয়ে চিন্তার এখনই শেষ নেই।