Metro Tickets: বর্তমানে তিলোত্তমনগরীতে যাতায়াতের ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন এনেছে কলকাতা মেট্রো। তবে পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে যে, ভারতীয় রেলের অধীনে থাকা জোনগুলির মধ্যে সবথেকে বেশি লোকসান দেখা দিয়েছে কলকাতা মেট্রোতে। কেন এই কথা বলা হচ্ছে তা জানতে হলে মনোযোগ সহকারে পড়ুন এই প্রতিবেদনটি। অভ্যন্তরীণ ক্ষতির বহর বাড়ানোর অন্যতম কারিগর হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে টোকেন। প্রথম ২০১০ সালে নর্থ সাউথ করিডরে কাগজের টিকিটের বদলে চালু হয়েছিল এই টোকেন ব্যবস্থা।
প্রায় এক যুগ বাদে কলকাতা মেট্রো সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হল যে তুলে দেওয়া হবে টোকেনের ব্যবস্থা (Metro Tickets)। মেট্রো ভবনের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, এই ১৪ বছর ধরে তৈরি করা হয়েছে প্রায় ৫৩ লক্ষ টোকেন। কিন্তু বিগত বছরের সবথেকে দুঃখজনক ঘটনা হলো নষ্ট হয়েছে প্রচুর টোকেন। তার মধ্যে প্রায় ৩১ লক্ষ টোকেন খোয়া গিয়েছে। তিনি এই বিষয়ে আরো বলেন যে, যাত্রীরা চুরি করার উদ্দেশ্য নিয়ে টোকেন বাড়ি নিয়ে গেছে বহুবার। অনেকে আবার মেট্রো চলার প্রথম স্মৃতি হিসেবে টোকেন রেখে দিয়েছে নিজের কাছেই।
যাত্রীদের মধ্যেকার এই মানসিকতার জন্যই মেট্রোর ভাঁড়ারে এখন টোকেন ‘বাড়ন্ত’। শুধু লোকসান বেড়েই চলেছে কলকাতা মেট্রোতে। বর্তমানে এক-একটি টোকেন তৈরি করতে খরচ পড়ে যাচ্ছে প্রায় ৪৫ টাকা। এদিকে টোকেন চুরির ঘটনায় রীতিমতো দুর্বল হয়ে পড়েছে মেট্রোর রাজকোষ। সেই কারণেই বাতিল করা হচ্ছে টোকেন ব্যবস্থা। বিকল্প হিসেবে কবি সুভাষ-দক্ষিণেশ্বর রুটে কিউআর কোড ছাপা কাগজের টিকিট (Metro Tickets) চালু করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর প্রতিটি স্টেশনের স্মার্ট গেটগুলিতে কিউআর কোড প্রযুক্তি যুক্ত করা হয়েছে।
যাত্রীদের মধ্যে অনেকেই অভিযোগ করেছে যে, নতুন এই ব্যবস্থা (Metro Tickets) চালু করার আগে কোনরকম প্রচার চালায়নি মেট্রো কর্তৃপক্ষ। যারা মেট্রোতে নতুন যাতায়াত করছে তাদের পক্ষে খুবই অসুবিধা সৃষ্টি হয়েছে। কলকাতার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এমনকি দূর জেলাগুলো থেকেও বহু মানুষ কলকাতা এসে মেট্রো রেলে ওঠেন। কারণ শীতের মরশুমে কলকাতা ঘোরার সুযোগ কেউ হাতছাড়া করতে চায় না। কিন্তু যেসব যাত্রীরা নিত্যদিন যাতায়াত করছে তাদের পক্ষে এই নতুন ব্যবস্থা সত্যিই অসুবিধা সৃষ্টি করেছে।
স্মার্ট গেট সম্পর্কে আসুন প্রথমেই ধারণা নিয়ে নিই। যাত্রীরা প্ল্যাটফর্মে যাওয়ার ছাড়পত্র লাভ করেন এই স্মার্ট গেটের মাধ্যমে। সফর শেষ হয়ে গেলে সেই টোকেন ফের স্মার্ট গেটের নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলে দিতে হয়। স্মার্ট গেট আপনা আপনি খুলে যায়। অবশ্য নির্দিষ্ট দূরত্বের যাত্রা শেষে উপযুক্ত মূল্যের টোকেন মেশিনে জমা পড়লে তবেই দরজা খোলে এবং যাত্রীরা স্টেশনের বাইরে যেতে পারেন। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, টোকেন মূল্য কম কিংবা বেশি হলে গেট খোলে না। সেক্ষেত্রে যাত্রীদের জরিমানা করা হয়। নতুন পদ্ধতি অনুসারে কিউআর কোডভিত্তিক কাগজের টিকিটে (Metro Tickets) যাতায়াত করছে সাধারণ মানুষ। এই পদ্ধতি অনুসারে, মেশিনের নীচের দিকে বিশেষ একটি স্ক্যানারের সামনে ওই টিকিট ধরতে হয়। তাহলে কিন্তু গেট খোলা-বন্ধ হয়। বহু যাত্রী বুঝতেই পারছে না কোথায় রয়েছে সেই স্ক্যানার? ফলে তাদের রীতিমতো হাতড়ে বেড়াতে হচ্ছে। কলকাতা মেট্রোর আরেকটি বড় অসুবিধা হল অপর্যাপ্ত কর্মী। নিত্যযাত্রীদের প্রতিদিন যাতায়াতের পথে সাহায্য করতে হচ্ছে কর্মীদের।