শর্মিষ্ঠা চ্যাটার্জী : সুরের জগতের কিংবদন্তি গায়িকা লতা মঙ্গেশকরের মহাপ্রয়াণ ঘটেছে। গতকালই দিদিকে দেখার জন্য হাসপাতালে গিয়েছিলেন বোন আশা ভোঁসলে। তবে দুই বোনের যে সম্পর্ক মোটেই ভালো ছিল না ছোট থেকেই সে কথা সামনে এনেছিলেন ঐতিহাসিক রাজু ভারতন।
ঐতিহাসিক রাজু ভারতন দুই বোনকে নিয়ে একটি বই রচনা করে ফেলেছেন যেখানে দুই মহারথীর জীবনের বহু স্মৃতি উঠে এসেছে। ছোট থেকে দুই বোনের সম্পর্ক থেকে শুরু করে, বলিউডের ক্ষেত্রে পেশাগত জীবন, দুজনের মধ্যে যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা সেই প্রসঙ্গও ওই বইতে লিখেছেন তিনি।
ওই ঐতিহাসিক রাজু ভারতন একবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, আশা ও লতা মঙ্গেশকরের সম্পর্ক ছোট থেকে বেশ নির্মম ছিল, এমনকি ছোট থেকে তাঁরা একই বাড়িতে বড়ো হয়ে উঠেছিলেন। বয়সের মাত্র তিন বছরের পার্থক্য থাকলেও দুই বোনের মধ্যে ছিল চরম প্রতিযোগিতা।
লতা মঙ্গেশকর একসময় যখন গানের জগতে সমস্ত শিল্পীকে পেছনে ফেলে নিজে একচ্ছত্র অধিকারী হয়ে উঠেছিলেন সেইসময় বোন আশা ভোঁসলে ও তাই করতেই চাইতেন। ১৯৫০-৬০ এর দশকে লতাজি যেখানে একটি গান রেকর্ডে নিতেন ৫০০ টাকা সেখানে আশাজী নিতেন মাত্র ১০০ থেকে ১৫০ টাকা।
লতা মঙ্গেশকরের নিকট সর্বদাই বহু বিলাসিতার সুযোগ থাকত যেমন তিনি কোন গান গাইবেন, কার জন্য গাইবেন যদিও আশাজির কাছে এরকম ধরনের কোনো সুযোগ আসেনি। দিদির গান শুনে অনুপ্রাণিত হওয়ার পরিবর্তে অত্যন্ত বিরক্তবোধ করতেন তিনি।
সঙ্গীত জগতে আশাজি ওই সময় নিজেকে মরিয়াভাবে প্রমাণ করতে উঠে পড়ে লেগেছিলেন। যদিও সঙ্গীত জগতের সম্রাজ্ঞী চিরকাল লতা মঙ্গেশকরই রয়ে গেলেন। গীতা দত্ত যেসব গান গাইতেন সেগুলি একমাত্র লতাজি গাইতেন না যদিও পরবর্তী সময় গুরু দত্তের সাথে সমস্যার কারণে তিনি আশা ভোঁসলেকে দিয়ে গান গাওয়াতেন।
পরবর্তী সময়ে আরডি বর্মণের সাথে পরিচয় বাড়লেও অনেক ভালো গান তিনি লতাজিকে দিয়ে গাওয়াতেন। আর তাতেই রাগ ছিল আশাজীর। দিদির মত গান গাইবেন এই আবদার করেছিলেন কিন্তু তাতে রাজি ছিলেন না আরডি বর্মন। আজ এই সুরের জাদুকরের মহাপ্রয়ানে স্মৃতি রোমন্থন করছেন বহু বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব।