কত টাকার সম্পত্তি রেখে গেলেন লতা মঙ্গেশকর, কে হবেন মালিক

Shyamali Das

Published on:

নিজস্ব প্রতিবেদন : গত রবিবার সঙ্গীত জগত যা হারাল, তা আর কোনদিন পূরণ হবে কিনা সন্দেহ আছে। সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকরকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে সঙ্গীত জগত। কয়েক দিন ধরে অসুস্থ হয়ে হাসপাতলে ভর্তি থাকার পর ৯২ বছরে প্রয়াত হন। দেশের কোটি কোটি মানুষের প্রার্থনাও তাকে ফের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হলো না।

লতা মঙ্গেশকর একজন সাধারণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করে এমন কিংবদন্তি হয়ে উঠেছিলেন। তার বাবা দীননাথ মঙ্গেশকর ছিলেন একজন নাট্যকার। সেই সুবাদে ছোট বয়স থেকেই লতা মঙ্গেশকরকে নাটক এবং গানের দুনিয়ায় নিয়ে আসেন। এরপর দিদিমার থেকে লোকগানের তালিম শুরু করেন এবং বিভিন্ন মঞ্চে গাইতে শুরু করেন।

লতা মঙ্গেশকরের জীবনের প্রথম উপার্জনই হল গান গেয়ে। যখন তিনি মাত্র ১৩ বছর বয়সী একজন কিশোরী ছিলেন সেই সময় মঞ্চে গান গেয়ে প্রথম উপার্জন করেছিলেন ২৫ টাকা। এর পরেই তার জীবনে আসে নতুন মোড়। পা দেন বলিউডে। বাকি সব ইতিহাস।

তবে একজন কিংবদন্তি হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে বলিউডে পা দেওয়ার পরেই প্রথম ধাক্কার সম্মুখীন হতে হয় তাকে। প্রথমেই সঙ্গীত পরিচালক তাকে বাতিল করে দেন মিহি সরু গলা হওয়ার জন্য। পরে অবশ্য এই গলার দৌলতেই তিনি বিশ্ব জয় করে ফেলেন। তার গলার যাদুতে মুগ্ধ হয়ে পড়ে গোটা বিশ্ব। অধ্যাবসায় এবং একের পর এক কৃতিত্ব তুলে ধরার দৌলতে তিনি ভারতরত্ন পান।

লতা মঙ্গেশকরের জীবনের প্রথম রোজগার মাত্র ২৫ টাকা হলেও দেখতে দেখতে এই কিংবদন্তি নিজের প্রতিভার জোরে ১০০ কোটি টাকার সম্পত্তি করে ফেলেন। যদিও এই সম্পত্তির পরিমাণ নিয়ে নানান জল্পনা রয়েছে বিভিন্ন মহলে। তার শেষ জীবনের উপার্জন নিয়ে বিভিন্ন মহলে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া লক্ষ্য করা যায়।

কেউ কেউ দাবি করেন, জীবনের শেষ পর্যায়ে তার মাসিক উপার্জন ছিল ৪০ লক্ষ টাকা এবং বছরে গড়ে ৬ কোটি টাকা রোজগার করতেন। তার এই রোজগার ছিল তাঁর গানের রয়্যালটি থেকে। কেউ কেউ আবার দাবি করেছেন, সুরের এই দেবীর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৩৭০ টাকা। তবে কেউ কেউ এই দাবি নস্যাৎ করে দিয়ে মনে করেন, তার কাছে মোট সম্পত্তি ছিল ১০৭-১১৫ কোটি টাকা।

তবে সম্পত্তির পরিমাণ যাই হোক না কেন চিরকুমারী লতা মঙ্গেশকরের এই বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির মালিক কে হবেন তা নিয়েই আমজনতার মধ্যে কৌতূহল। সম্পত্তি নিয়ে আম জনতার মধ্যে এই কৌতুহল থাকলেও এখনও এর সদুত্তর পাওয়া যায়নি। তবে দ্রুত এই বিষয়ে মুখ খুললেন তার আইনজীবী, এমনটাই জানা যাচ্ছে। পাশাপাশি এটাও জানা যাচ্ছে তার এই বিপুল সম্পত্তির মালিক হতে পারেন তার ভাই হৃদয়নাথ মঙ্গেশকর।

তবে লতা মঙ্গেশকর এই বিপুল সম্পত্তির মালিক হলেও খুব সাধারণভাবে জীবনযাপন করতেন। তিনি যখন বীরভূমের শান্তিনিকেতন এসেছিলেন সেই সময়েও তার সাধারণভাবে জীবনযাপনের ধরা পড়েছিল। তবে লতাজি নিজের গাড়ি নিয়ে ছিলেন বেশ সৌখিন। তার বাড়ি প্রভুকুঞ্জে রয়েছে বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির ব্র্যান্ডের গাড়ি। ক্যারিয়ার শুরু করার প্রথম দিকে তার কাছে ছিল শেভারলে, পরে গ্যারেজে জায়গা পায় বুইক, মার্সিডিজ, ক্রিসলারের মত গাড়িও। এমনকি তিনি নিজে একটি একটি সাক্ষাৎকারে গাড়ির প্রতি তার দুর্বলতার কথা স্বীকার করেছিলেন।