Gour Express: ভারতীয় রেল হলো দেশের পরিবহন ব্যবস্থার বৃহত্তম একটি মাধ্যম। বলা চলে এটি দেশের মেরুদন্ড। ধনী হোক কিংবা দরিদ্র সকলেই অনায়াসে এই পরিবহন ব্যবস্থার পরিষেবা নিতে পারে। যেকোনো গন্তব্যস্থলে সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায় রেলের সাহায্যে। আশির দশকে তৎকালীন রেলমন্ত্রী এবিএ গনিখান চৌধুরীর হাত দিয়ে উদ্বোধন হয়েছিল গৌড় এক্সপ্রেসের। আজকে রেলের উদ্যোগে এক নয়া চমক অপেক্ষা করছে সকলের জন্য।
নতুন বছর ভালোই কাটবে মালদাবাসীর। নয়া ট্রেন পেয়ে রীতিমতো উৎসবের মরসুম গোটা মালদা জুড়ে। ৮০ দশকের পর থেকে মালদা-শিয়ালদা রুটে যে ট্রেনটি চলছিল তার রীতিমতো মান্ধাতার আমলের ট্রেন। এই ট্রেনটি নিয়ে মালদা জেলার অধিবাসীদের ক্ষোভের কোন শেষ ছিল না। দিনকে দিন পারদ চড়ছিল জেলাবাসীদের মধ্যে। অবশেষে ভারতীয় রেলের তত্তাবধানে মালদার ঐতিহ্যের গৌড় এক্সপ্রেস নতুনভাবে সেজে উপস্থিত হতে চলেছে যাত্রীদের সামনে। রেলমন্ত্রকের এই পরিকল্পনাকে সত্যিই কুর্নিশ জানাতে হয়। চলতি বছরের ২৮ ডিসেম্বর অত্যাধুনিক এলএইচবি কোচ যুক্ত হচ্ছে গৌড় এক্সপ্রেসে (Gour Express)। যেদিন থেকে পূর্ব রেলের মালদা ডিভিশনের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে মালদা জেলাতে যেন খুশির হাওয়া বয়ে গেছে।
মালদা ডিভিশন সূত্র মারফত অবশ্য জানা গেছে যে এই গৌড় এক্সপ্রেস এর পথ চলা শুরু হয়েছিল ১৯৮০ সালের ২০ এপ্রিল মাসে। দীর্ঘবছর ধরে ২২ কামরা বিশিষ্ট আইএফসি কোচ (ইন্ট্রিগাল কোচ ফ্যাক্টরি) নিয়ে চলাচল করত ট্রেনটি। চলতি বছরেই গৌড় এক্সপ্রেসের (Gour Express) সাথে যুক্ত হতে চলেছে জার্মানি পদ্ধতিতে তৈরি এলএইচবি (লিংক হপম্যান বুস) কোচ। ট্রেনের ২১টি বগিকেই পাল্টে ফেলে এলএইচবি কোচ সংযুক্ত করা হচ্ছে। ভারতীয় রেলের এই প্রচেষ্টার ফলে খুশি মালদাবাসী।
এবার থেকে গৌড় এক্সপ্রেস (Gour Express) এ থাকবে একটা প্রথম শ্রেণি, দু’টো দ্বিতীয় শ্রেণি, তিনটে তৃতীয় শ্রেণি, ন’টি সংরক্ষিত কামরা এবং চারটি জেনারেল কামরা। পাশাপাশি থাকছে পাওয়ার গার্ডের আরও দু’টো বগি। এই গৌড় এক্সপ্রেস প্রতিদিন মালদা টাউন স্টেশন থেকে ছাড়ে রাত ৯টা ৩০ মিনিটে। পরের দিন ভোর ৪টা ৪০ মিনিটে শিয়ালদহ স্টেশনে পৌঁছায়। অনুরূপভাবে শিয়ালদহ স্টেশন থেকে গৌড় এক্সপ্রেস ছাড়ে রাত ১০টা ১৫ মিনিটে। মালদা টাউন স্টেশনে পৌঁছানোর সময় ভোর ৬টা ১৫ মিনিট।
আরও পড়ুন:Confirm Train Tickets: কিভাবে কনফার্ম করবেন ট্রেনের ওয়েটিং টিকিট, শিখে নিন পদ্ধতি
পূর্ব রেলের মালদা ডিভিশনের এক আধিকারিক অবশ্য এই বিষয়ে জানিয়েছেন যে, এলএইচবি কোচ আগেকার কোচের থেকে অনেক বেশি উন্নত। বর্তমান সময়ে ট্রেন দুর্ঘটনা অনেকাংশের বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এই বিশাল সমস্যা থেকে যাতে যাত্রীদের রক্ষা করা যায় তার জন্যই এই নতুন ধরনের কোচের সংযোজন করা হচ্ছে। যাত্রীদের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম। এই কচি ঝাঁকুনি অনেকটা কম হয়। এলএইচবি কোচে থাকবে সেফটি চার্জ, অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা এবং পাশাপাশি অ্যাডভান্স ব্রেকিং সিস্টেম প্রতিটি কামরায় যুক্ত রয়েছে।
যাত্রীদের জন্য এই কোচটি অনেক বেশি সুরক্ষিত। গৌড় এক্সপ্রেস এর সূচনা ঘটেছিল বরকত সাহেবের হাতেই এবং এই ট্রেনের টিকিটের চাহিদা প্রচুর। ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরেই উন্নতমানের কোচ সংযুক্ত করার দাবি জানানো হচ্ছিল। রেলমন্ত্রক (Indian Railways) অবশেষে সেই ডাকে সাড়া দিয়েছে। মালদার ডিআরএম মনীষকুমার গুপ্তা এই প্রসঙ্গে বলেছেন যে, গৌড় এক্সপ্রেসকে (Gour Express) নিয়ে শুধুমাত্র মালদাবাসীর নয় অনেক মানুষেরই আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। রেলমন্ত্রক এই ট্রেনটির পরিকাঠামো উন্নত করে মালদাবাসীকে এক নয়া উপহার দিয়েছে। এখন থেকে এই ট্রেনের যাত্রা আগের থেকেও হবে আরো অনেক বেশি আরামদায়ক।