নিজস্ব প্রতিবেদন : যত দিন এগোচ্ছে ততই দেশের পাশাপাশি রাজ্যেও লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রামিতদের সংখ্যা। এর অন্যতম মূল কারণ অন্যান্য রাজ্য থেকে মানুষ এবং পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে ফেরা। এই সংক্রমণ আটকাতে যে পরিমাণ হাসপাতালের প্রয়োজন তা নেই রাজ্যের কাছে। তাই এবার বিকল্প ব্যবস্থা নিচ্ছে রাজ্য সরকার। এই সংক্রমণের চিকিৎসার জন্য শুক্রবার স্কুল বাড়ি থেকে টুরিস্ট লজকে হাসপাতালে পরিণত করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলো স্বাস্থ্য দপ্তর।
জানা গিয়েছে, মালদহের মানিকচক মর্ডান স্কুল ভবনে ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে ৫০ বেডের হাসপাতাল তৈরির, যেখানে তীব্র শ্বাসকষ্ট জনিত উপসর্গের চিকিৎসা হবে। অন্যদিকে দার্জিলিংয়ের লামাহাটা ত্রিবেণী টুরিস্ট লজেও ১৫০ বেডের হাসপাতাল তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যারা তীব্র শ্বাসকষ্টে ভুগছেন সেইসব মানুষদের এই হাসপাতালে রাখা হবে বলেই জানা যাচ্ছে।
শুধু তাই নয়, করোনা সংক্রমণ রুখতে শুক্রবার আরও কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য ভবনের তরফ থেকে। রাজ্যে কোরোনা সংক্রমণ ঠেকাতে আরও ১১ টি কোভিড হাসপাতাল গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে এইরকম হাসপাতালের সংখ্যা ৬৯। এই হাসপাতালগুলিতে করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত চিকিৎসা ও তীব্র শ্বাসকষ্ট থাকা রুগীদের চিকিৎসা করা হচ্ছে।
এই হাসপাতালগুলির মধ্যে ১৫টিকে লেভেল ২ (শ্বাসকষ্ট জনিত উপসর্গের চিকিৎসা) থেকে লেভেল ৪ (করোনা সংক্রমণজনিত চিকিৎসা) এ উন্নীত করার কথা বলা হয়েছে। এর ফলে রাজ্য জুড়ে বেডের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানে যেখানে রাজ্যে মোট বেডের সংখ্যা ৮ হাজার ৭০০, সেখানে আগামী এক সপ্তাহে সেই বেডের সংখ্যা আরও দেড় হাজার বাড়ানো হবে। শুধু তাই নয়, টেস্টিং সেন্টারের সংখ্যা বৃদ্ধি, মূলত জেলা ও মহকুমাস্তরে যাতে টেস্টিং সেন্টারের সংখ্যার বৃদ্ধি ঘটানো যায় সেই দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।
রাজ্যের কোভিড হাসপাতালের তালিকা
কলকাতা : এম আর বাঙ্গুর হাসপাতাল- বেডের সংখ্যা বৃদ্ধি ৬৭০ বেডের কোরোনা ভাইরাস চিকিৎসার হাসপাতাল।
হাওড়া : লিলুয়ার টি.এল.জি. হাসপাতাল – করোনা ভাইরাস চিকিৎসার হাসপাতাল।
মুর্শিদাবাদ : ওল্ড মাতৃ সদন – ১২০ বেডের করোনা ভাইরাস চিকিৎসা কেন্দ্র।
মুর্শিদাবাদ : জিয়াগঞ্জের খৃস্টীয় সেবা সদন – ১০০ বেডের কোরোনা ভাইরাস চিকিৎসার হাসপাতাল।
রামপুরহাট : মধু মমতা লজ – ১৬০ বেডের SARI উপসর্গ চিকিৎসার হাসপাতাল।
রামপুরহাট : আর.এম.ওয়াই.এফ. হাসপাতাল – ৫০ বেডের করোনা ভাইরাস চিকিৎসার হাসপাতাল।
মালদহ : মানিকচকের মর্ডান স্কুল – ৫০ বেডের SARI উপসর্গের চিকিৎসার হাসপাতাল।
শিলিগুড়ি : ডিসান হসপিটাল – আগে এখানে SAARI এর চিকিৎসা হলেও এখন থেকে এটি করোনা চিকিৎসার হাসপাতাল।
আলিপুরদুয়ার : তপশীকান্ত আয়ুস হাসপাতাল – ১০০ বেডের করোনা ভাইরাস চিকিৎসা কেন্দ্র।
দার্জিলিং : লামাহাটা ত্রিবেণী টুরিস্ট লজ – SARI (শ্বাসকষ্ট জনিত উপসর্গের জন্য) উপসর্গ চিকিৎসার জন্য ১৫০ বেডের হাসপাতাল।
পশ্চিম মেদিনীপুর : শালবনী সুপার স্পেশাললিটি হাসপাতাল – ১৫০ বেডের কোরোনা ভাইরাস চিকিৎসার হাসপাতাল।
নদিয়া : গ্লোবাল হাসপাতাল – ১৫০ বেডের নভেল করোনা ভাইরাস চিকিৎসা কেন্দ্র।
নদীয়া : এস.এন.আর. কার্নিভাল হসপিটাল – ১২০ বেডের নভেল করোনা ভাইরাস চিকিৎসা কেন্দ্র।
উত্তর ২৪ পরগনা : কলেজ অফ মেডিসিন অ্যান্ড সাগর দত্ত হাসপাতাল – ৫০০ বেডের করোনা ভাইরাস চিকিৎসার হাসপাতাল।
পূর্ব বর্ধমান : ক্যামরি হাসপাতাল – ১২০ বেডের করোনা ভাইরাস চিকিৎসার হাসপাতাল।
পশ্চিম বর্ধমান : সনকা হাসপাতাল – ৪০০ বেডের কোরোনা ভাইরাস চিকিৎসার হাসপাতাল।
কল্যাণী : টিবি হাসপাতাল – ৩০০ বেডের SARI উপসর্গ চিকিৎসার হাসপাতাল।
উত্তর দিনাজপুর : মিককি মেঘা হাসপাতাল – ৫০ বেডের করোনা চিকিৎসার হাসপাতাল।
দক্ষিণ দিনাজপুর : প্রয়াস আত্রেয়ী হাসপাতাল – ৩০ বেডের করোনা ভাইরাস চিকিৎসার হাসপাতাল।
পূর্ব মেদিনীপুর : বড়মা হাসপাতাল – ১৫০ বেডের করোনা ভাইরাসের চিকিৎসা কেন্দ্র।
হুগলি : আরামবাগের ব্লু ভিউ নার্সিংহোম – ৩০ বেডের করোনা চিকিৎসা কেন্দ্র।
কোচবিহার : মিশন হাসপাতাল – ১১০ বেডের করোনা ভাইরাস চিকিৎসার হাসপাতাল।