নিজস্ব প্রতিবেদন : দীর্ঘ দু’বারের ব্যর্থতার পর অবশেষে তৃতীয়বার সফলতা অর্জন করতে পেরেছে ভারত। চাঁদের মাটিতে চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan 3) কে সফল ভাবে সফট ল্যান্ডিং করিয়ে এমন সাফল্য এসেছে। ইসরোর (Isro) এই কৃতিত্বের জন্য বিশ্ব এখন প্রশংসায় পঞ্চমুখ। প্রশংসায় পঞ্চমুখ হওয়ার পিছনে আরও বড় কারণ হলো চাঁদের দক্ষিণ মেরু। যেখানে এই প্রথম কোন দেশ হিসাবে ভারত চন্দ্রযান সফলভাবে ল্যান্ডিং করিয়েছে।
মহাকাশ দখলের জন্য স্নায়ুর ঠান্ডা লড়াইয়ে একাধিক দেশকে নামতে দেখা গিয়েছে। একাধিকবার মহাকাশের বিভিন্ন জায়গায় মহাকাশযান পাঠানোর পাশাপাশি চাঁদের মাটি দখলেও নামতে দেখা গিয়েছে বহু দেশকেই। তবে চাঁদের মাটি দখল করা কারো পক্ষেই এতটা সহজ হয়নি। একের পর এক মিশন বিফলে যেতে দেখা গিয়েছে। ভারতের প্রথম দুটি অভিযান বিফলে যাওয়ার পর তৃতীয় অভিযান সফল। ঠিক একইভাবে পাশ্চাত্যের উন্নত দেশগুলির ক্ষেত্রেও এমন ঘটনা ঘটেছে। তবে এই কঠিন লড়াইয়ে এখনো পর্যন্ত হাতে গোনা কয়েকটি মহাকাশযানই চাঁদের মাটিতে সফলভাবে অবতরণ করতে সক্ষম হয়েছে।
১) শেষ মহাকাশযান হিসাবে চন্দ্রযান-৩ এমন সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণাগারের এই মহাকাশযানটি গত ২৩ আগস্ট সন্ধ্যা ৬:০৪ মিনিটে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফলভাবে সফট ল্যান্ডিং করাতে সক্ষম হয়। বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসাবে ভারত চাঁদের মাটিতে মহাকাশযান সফলভাবে অবতরণ করাতে সক্ষম হলো। তবে এরই সঙ্গে সঙ্গে ভারত বিশ্বের প্রথম কোন দেশ যারা চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে মহাকাশযান সফলভাবে ল্যান্ডিং করিয়েছে।
২) অন্যান্য যে সকল মহাকাশযান চাঁদের মাটিতে সফলভাবে সফট ল্যান্ডিং করিয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো লুনা ২। বিশ্বের প্রথম মহাকাশযান হিসেবে USSR এর লুনা ২ চাঁদের মাটি ছুঁয়েছিল। তারা এই সাফল্য অর্জন করেছিল ১৯৫৯ সালেই।
৩) ১৯৬৯ সালে চাঁদের মাটিতে প্রথম মানুষ পাঠায় আমেরিকা। অ্যাপেলো ১১ সফলভাবে চাঁদের মাটিতে মানুষ অবতরণ করাতে সক্ষম হয় এবং সেখানে প্রথম আমেরিকার পতাকা প্রতিষ্ঠিত হয়। এই মহাকাশযানটিতে চড়েই প্রথম চাঁদের মাটিতে নেমেছিলেন নীল আর্মস্ট্রং। আর তার সঙ্গে ছিলেন এডউইন অলড্রিন। এই সফরে আরও একজন নভোচারী মাইকেল কলিংক্স থাকলেও তিনি চাঁদের মাটিতে পা রাখেননি।
৪) ২০১৩ সালে চীনের মহাকাশযান চ্যাংই-৩ সফলভাবে চাঁদের মাটিতে অবতরণ করতে সক্ষম হয়। তৃতীয় দেশ হিসাবে চীন ২০১৩ সালে এই খ্যাতি অর্জন করে।
৫) ২০০৭ সালে আর্টিমিস নামে একটি মহাকাশযান পাঠানো হয় চাঁদ এবং সূর্যের মধ্যে সম্পর্ক বোঝার জন্য। নাসার তরফ থেকে পাঠানো এই মহাকাশযান ২০১১ সালে চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছায়। তবে এখানেই সেটি যাত্রা শুরু করে। এরপর ২০২২ সালে আর্টিমিস-১ নামে একটি মহাকাশযান পাঠাই নাসা। এটি এখনো চাঁদের কক্ষপথে রয়েছে।
সম্প্রতি চাঁদের মাটি ছোঁয়ার লড়াইয়ে যে সকল দেশ ময়দানে নেমেছিল তার মধ্যে ব্যর্থতার মুখ দেখতে হয়েছে রাশিয়ার লুনা ২৫ কে। এর আগে একইভাবে ব্যর্থতার মুখে পড়তে হয়েছিল ভারতকে। ভারতের চন্দ্রযান ১, চন্দ্রযান ২ ব্যর্থতার মুখে পড়েছিল।