৩টে নয়, আরও আগে লকডাউন শুরু করার সিদ্ধান্ত নিলো জেলা প্রশাসন

হিমাদ্রি মণ্ডল : দুদিন আগেই বীরভূম জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে জেলায় করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ২৪শে জুলাই থেকে ৩১শে জুলাই পর্যন্ত জেলার ৬ পৌরসভায় বিকাল ৩টে থেকে টানা ৭ দিনে লকডাউন শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়। আর এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের পাশাপাশি লক্ষ্য করা যায় জেলায় দিন দিন আরও বাড়ছে সংক্রমণ। আর এই সংক্রমণ যেকোনো উপায়ে ঠেকানোর প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে এবার লকডাউনের সময়সীমা বাড়ালো বীরভূম জেলা প্রশাসন।

শুক্রবার বীরভূম জেলা পরিষদের কনফারেন্স হলে একটি প্রশাসনিক বৈঠক হয়। যে বৈঠক উপস্থিত ছিলেন বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং, বীরভূম জেলা জেলা পরিষদ পরামর্শদাতা অভিজিৎ সিংহ এবং জেলা প্রশাসনিক স্তরের অন্যান্য উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। আর এই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় লকডাউনের সময়সীমা বাড়ানো নিয়ে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঠিক করা হয়, দুপুর ৩টে থেকে নয়, লকডাউন শুরু হবে দুপুর ১২টা থেকে। আর সেই লকডাউন চলবে রাত্রি ১০টা পর্যন্ত। রাত্রি ১০টা থেকে আবার শুরু হচ্ছে নাইট কারফিউ, যা চলবে সকাল ৫টা পর্যন্ত।

বৈঠক শেষে বীরভূম জেলা জেলা পরিষদ পরামর্শদাতা অভিজিৎ সিংহ জানান, “আমরা ২৪ শে জুলাই থেকে ৩১ শে জুলাই পর্যন্ত বীরভূমের যে ৬টি পৌরসভায় (সিউড়ি, সাঁইথিয়া, দুবরাজপুর, রামপুরহাট, বোলপুর, নলহাটি) যে দুপুর ৩টে থেকে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল তার সময়সীমা পরিবর্তন করা হলো। আগামী ২৬ শে জুলাই থেকে ৩১ শে জুলাই পর্যন্ত এই সকল এলাকায় দুপুর ১২ টা থেকে শুরু হবে লকডাউন এবং চলবে রাত্রি ১০ টা পর্যন্ত।”

আর এই লকডাউন চলাকালীন জরুরী পরিষেবা বলতে দমকল, জল, কৃষি ক্ষেত্র, ওষুধের দোকান, স্বাস্থ্য সম্পর্কিত পরিষেবা, বিদ্যুৎ পরিষেবা, ই-কমার্স, বিবাহ অনুষ্ঠান (অনধিক ৫০ জন) ছাড়া প্রায় সমস্ত কিছু বন্ধ থাকবে। অর্থাৎ আগের লকডাউনের সময় যেমন মুদিখানার দোকান, অত্যাবশ্যকীয় কিছু দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল এক্ষেত্রে সেই অনুমতিও দেওয়া হচ্ছে না। সংক্রমণ ঠেকাতে জেলা প্রশাসন যে কঠোর মনোভাব নিয়ে চলছে তা বলাই বাহুল্য। পাশাপাশি এই লকডাউন চলাকালীন কেউ আইন লঙ্ঘন করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে আগেই জানিয়েছেন বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং।

প্রসঙ্গত, বীরভূমে ইতিমধ্যেই মোট সংক্রমণের সংখ্যা ৪০০ ছাড়িয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যাও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪। অন্যদিকে আবার গতকাল বীরভূম জেলা শাসকের বাংলোয় কর্মরত ৩ অস্থায়ী কর্মী শরীরে করোনার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। আর এই ঘটনার পর স্বাভাবিকভাবেই উদ্বিগ্নতা বাড়ে জেলা প্রশাসনের অন্দরমহলে। যার পরেই এমন কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।