নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারতীয় রেলের (Indian Railways) পরিষেবার উপর নির্ভর করে প্রতিদিন দেশের প্রায় দু’কোটি মানুষ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়াত করে থাকেন। এই বিপুলসংখ্যক যাত্রীদের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা সুষ্ঠুভাবে পৌঁছে দেওয়া ভারতীয় রেলের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব। আবার ভারতীয় রেলের সবচেয়ে বড় এই দায়িত্ব পালন করার ক্ষেত্রে যাদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি তারা হলেন লোকো পাইলট অর্থাৎ ট্রেনের চালক গার্ড অথবা মোটরম্যান।
ট্রেনের চালক, মোটর ম্যান, গার্ড এই সকল দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা সবসময় সচেষ্ট মনোভাব নিয়ে যাত্রীদের সুষ্ঠুভাবে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরু দায়িত্ব নিয়ে থাকেন। যে কারণে তারা যখনই ডিউটিতে যোগ দেন তখন থেকেই তাদের রোবটের মতো কাজ করতে হয়। যতক্ষণ না তারা কাজ থেকে ছুটি পাচ্ছেন ততক্ষণ তারা নিজেদের মানুষ বলে মনে করতে পারেন না।
ট্রেনে চালক, মোটর ম্যান, গার্ডরা যতক্ষণ ডিউটির মধ্যে থাকেন ততক্ষণ তারা না পান সেই ভাবে খাওয়ার সময়, না পান টয়লেট যাওয়ার সুযোগটুকুও। আর এই ভাবেই বছরের পর বছর ধরে কাজ করতে করতে তারা এখন অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন। তবে এই রকম কষ্ট করে আর তাদের কাজ করতে হবে না, কেননা এবার তাদের জন্য রেলের তরফ থেকে নতুন পরিকল্পনা (Indian Railways New Plan) নেওয়া হচ্ছে।
কেননা রেলের তরফ থেকে তাদের জন্য ডিউটির মাঝে টিফিন ব্রেক এবং টয়লেট ব্রেক দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। আর এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে তাদের অবস্থার কিছুটা হলেও উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ট্রেনের চালক ও গার্ডদের জন্য এমন সুখবর আসতে চলেছে মূলত কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের উদ্যোগে। শ্রম মন্ত্রকের উদ্যোগে ১৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। যে কমিটিতে পাঁচ জন রেল বোর্ডের সদস্য থাকার পাশাপাশি একজন রয়েছেন নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এবং বাকি সাতজন রয়েছেন শ্রমিক সংগঠনের সদস্য।
ওই কমিটির হাত ধরেই এবার স্বাচ্ছন্দ আসতে চলেছে ট্রেনের চালক থেকে শুরু করে মোটর ম্যান, গার্ডদের। ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন ১৯১৯ সালে একটি কাজের সময় সংক্রান্ত প্রস্তাব এনেছিল। ভারত পরবর্তীতে ওই প্রস্তাবের অনুমোদন পায়। শিল্পক্ষেত্রে এই নিয়ম চালু হলেও অজ্ঞাত কারণে ট্রেনের চালক, মোটর ম্যান এবং গার্ডদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম চালু হয়নি। তবে এরপর ২০০৯ সাল থেকে মোটর ম্যানদের সংগঠনের তরফ থেকে বারবার বিষয়টি নিয়ে সরব হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রক নড়েচড়ে বসে এবং শেষমেশ এই বছর তাদের স্বাচ্ছন্দ্য দিতে কমিটি গঠন করা হলো।