Lohagarh Fort: জানলে অবাক হবেন, গোটা ভারত দখল করলেও ব্রিটিশরা এই দুর্গে পৌঁছাতে পারেনি!

রাজস্থানের (Rajasthan) প্রায় প্রতিটি শহরকে দুর্গের (Fort) বাড়ি বললে দোষের কিছু নেই। কারণ এই রাজ্যের প্রায় প্রতিটি শহরেই রয়েছে এক থেকে এক বিশ্ব বিখ্যাত দুর্গ। আগ্রা ফোর্ট, পুষ্কর ফোর্ট, আমের ফোর্ট, যোধপুর ফোর্ট ইত্যাদির মতো অনেক দুর্গ বিখ্যাত। রাজস্থানের ঐতিহাসিক শহর ভরতপুরও (Bharatpur) লোহাগড় দুর্গের (Lohagarh Fort) জন্য বিখ্যাত। মধ্যযুগে নির্মিত এই দুর্গটি অনেক ঐতিহাসিক তথ্যের জন্যও বিখ্যাত।

লোহাগড় দুর্গ (Lohagarh Fort) রাজস্থানের ভরতপুর শহরের একটি কৃত্রিম দ্বীপে অবস্থিত। যা পুরো শহরের আকর্ষণের প্রধান কেন্দ্র। এই বিশ্ব বিখ্যাত দুর্গটি ১৭২১ সালের দিকে রাজা সুরজমল দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। কথিত আছে যে এই বিশাল দুর্গটি তৈরি করতে প্রায় ৬০ বছর সময় লেগেছিল। এই দুর্গ সম্পর্কে আরও বলা হয় যে ব্রিটিশ বাহিনী কয়েকবার এটি আক্রমণ করেছিল কিন্তু কখনও সফল হয়নি। এই দুর্গ ব্রিটিশদের কাছে ছিল অজেয় (invincible)।

কথিত আছে যে ১৮০৫ সালে ব্রিটিশরা লর্ড লেকের নেতৃত্বে ৬ সপ্তাহ জুড়ে যখন এই দুর্গ অবরোধ করে আক্রমণ চালিয়েছিল। সেই আক্রমণের ফলে ৩ হাজারেরও বেশি লোক প্রাণ হারায়। কিন্তু পরেও ব্রিটিশরা লোহাগড় দুর্গ দখল করতে পারে নি। লোহাগড় দুর্গের দেয়াল প্রায় ৭ মিলিমিটার দীর্ঘ এবং এটি তৈরি করতে প্রায় ৬০ বছর সময় লেগেছিল। দুর্গের দেয়াল এমনভাবে তৈরি করা হয়েছিল যে এটি সহজেই হাজার হাজার গুলি শুষে নিতে পারে।

দুর্গ কমপ্লেক্সটিতে বেশ কয়েকটি স্থাপনা রয়েছে বলে জানা যায়, যার অধিকাংশই বিজয়ের প্রতীক হিসেবে নির্মিত হয়েছিল। দুর্গের দুটি দরজার মধ্যে উত্তরেরটি অষ্টধাতু (আটটি ধাতুযুক্ত) দরজা এবং দক্ষিণমুখীটি চৌবুর্জা (চার স্তম্ভযুক্ত) ফটক নামে পরিচিত। দুর্গের স্মৃতিস্তম্ভের মধ্যে রয়েছে কিশোরী মহল, মহল খাস এবং কোঠি খাস।দুর্গের এই অংশগুলিকে রাজস্থানের রাজ্য সুরক্ষিত সৌধের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে – কামারা খাস, কিশোরী মহল, হংসরানি মহল, কাছাহারী কালা, চমন বাগিচি, হাম্মাম এবং মাটিওয়াল গেটগুলি যেমন মথুরা গেট, বিনারাইন গেট, অটল বাঁধ গেট, আনাহ গেট, কাতুম। গেট, গোবর্ধন গেট, নিমদা গেট, চাঁদপোল গেট এবং সুরজ পোলের কাছে বুরুজ।

লোহাগড় দুর্গ তিনটি অংশে বিদ্যমান যা মহল খাস, কামরা মহল এবং বদন সিং মহল নামে পরিচিত। এই দুর্গের সবচেয়ে বিখ্যাত টাওয়ার হল জওহর বুর্জ এবং ফতেহ বুর্জ। এই দুর্গের ভিতরে একটি জাদুঘরও (Musium) রয়েছে। জাদুঘরে মধ্যযুগীয় জৈন ভাস্কর্য, যক্ষের খোদাই, অস্ত্রের সংগ্রহ এবং বেশ কিছু পাণ্ডুলিপি রয়েছে। কথিত আছে, এখানে প্রাচীন শিবের নটরাজ মূর্তি ও শিবলিঙ্গও রয়েছে।