নিজস্ব প্রতিবেদন : রাজনীতিতে পা রাখার পর এই প্রথম ‘বীরভূমের বাঘ’ অনুব্রতকে ছাড়া কোন ভোট হচ্ছে বীরভূমে (Vote Without Anubrata Mondal)। ভোট এলেই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে সবার মধ্যে যার কথা প্রথমেই ঘোরাফেরা করে তিনি হলেন অনুব্রত মন্ডল (Anubrata Mondal)। ভোট এলেই নেতা নেত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন মিডিয়া অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ি থেকে শুরু করে পার্টি অফিসে ভিড় জমাতো। কিন্তু এখন সেসব দিন শেষ।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময় বীরভূমের এই দাপুটে তৃণমূল নেতা স্লোগান তুলেছিলেন ‘ভয়ঙ্কর খেলা হবে’। কিন্তু এখন সেই ‘ভয়ঙ্কর খেলা’র দিনও শেষ হয়ে গিয়েছে তার তিহার যাত্রায়। পাশাপাশি নেই ‘চরাম চরাম’ আওয়াজ, নেই গুড় বাতাসা। অন্যদিকে বোলপুরের নিচুপট্টির তৃণমূল কার্যালয় এখন ভোটের আগেও খাঁ খাঁ করছে।
অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেপ্তার হওয়া এবং তার তিহার যাত্রার পর তার বাড়ি থেকে শুরু করে নিজের তত্ত্বাবধানে তৈরি করা দলীয় কার্যালয়ের অবস্থা দেখে এখন চোখে জল আসবে। যেখানে দেখা যাচ্ছে হাতেগোনা ৩-৪ জন পাহারাদার পুলিশ কর্মী ছাড়া আর কেউ নেই। যেখানে এই দলীয় কার্যালয় ভোট বাদেও সবসময়ই গমগম করতো সেখানে এমন পরিস্থিতি হবে কেউ ভেবে উঠতে পারেন নি। আর এসবের মধ্যেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে এবার কেষ্টহীন বীরভূমে ভোট করাবেন কোন নেতা? নতুন কাউকে খুঁজে পেল নাকি দল?
জেলা তৃণমূলের তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে, একজন সংগঠক হিসাবে অনুব্রত মন্ডল যা করে দিয়ে গিয়েছেন তাতে তার বিকল্প আর কেউ হবেন না বা হতেও পারবেন না। রাজ্য তৃণমূল জেলার জন্য কোর কমিটি গঠন করে দিয়েছে, সেই কোর কমিটি সবকিছু দেখছে। এছাড়াও কেষ্টহীন বীরভূমের ভোটের কথা মাথায় রেখে বারবার মমতা ব্যানার্জি থেকে অভিষেক ব্যানার্জির মতো নেতা নেত্রীদের আগমন হচ্ছে। অন্যদিকে অনুব্রত মণ্ডলের অনুপস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে বিজেপির তরফ থেকে জোরদার প্রচার চালানো হচ্ছে বীরভূমে। কেন্দ্রীয় নেতা অমিত শাহ থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, যোগী আদিত্যনাথ সহ অন্যান্যদের আগমন হচ্ছে।
আগামী ১৩ মে অর্থাৎ সোমবার চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণের সময় বীরভূমের দুটি লোকসভা কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ হবে। এক্ষেত্রে দেখার বিষয়, কেষ্টহীন বীরভূমে কেউ গুড় বাতাসা অফার করেন কিনা অথবা কেউ চরাম চরাম আওয়াজ তোলেন কিনা! যদিও জেলা তৃণমূল নেতাদের তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে, অনুব্রত মণ্ডল না থাকলেও তার হাতে তৈরি করা সংগঠন এখন জেলার ভোট করাবে।