Mahakumbh Mela: ১৪৪ বছর বাদে প্রয়াগরাজে চলছে মহাকুম্ভ মেলা। লক্ষ-লক্ষ পুণ্যার্থী এখানে এসে হাজির হয়েছে পুণ্য অর্জনের আশায়। তবে সম্প্রতি যে ঘটনা ঘটেছে তা সত্যিই অলৌকিক। ১৫ বছর আগে এক ব্যক্তি নিখোঁজ হয়েছিলেন স্মৃতি হারিয়ে যাওয়ার কারণে। আশ্চর্যজনকভাবে, মহাকুম্ভ শব্দ শুনেই তার স্মৃতি ফিরে আসলো হঠাৎ করে। এমনকি দেখা হলো পরিবারের সঙ্গে। এমনই ঘটনা ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের কোডারমায়।
এই পৃথিবীতে অনেক আশ্চর্য ঘটনায় ঘটে যার সত্যিই কোন ব্যাখ্যা দেওয়া যায় না। তেমনি একটি ঘটনা ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের কোডারমায়, ব্যক্তির নাম হলো প্রকাশ মাহাতো। তিনি মারকাচো থানা এলাকার কাদোদিহের বাসিন্দা। তার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে তাকে খুঁজে পাচ্ছিল না, ইসমাইল সরকারের কাছে ডেথ সার্টিফিকেটের আবেদন জানায়। ঠিক সেই সময় প্রকাশকে খুঁজে পেয়েছেন আত্মীয়রা। সূত্র মারফত জানা গেছে যে, প্রকাশ মাহাতো আগে কলকাতা পুরসভায় কর্মরত ছিলেন। তিনি রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন ২০১০ সালের ৯ই মে। কলকাতায় কাজে যাওয়ার সময় ঘটে এই ঘটনা। মারকাচো থানায় তার পরিবার নিখোঁজ ডায়েরি করে। কিন্তু শেষ অবধি তাকে খুঁজে পাওয়া যায় না।
কিন্তু কিছুদিন আগেই মারকাচো পুলিশ বাংলার রানিগঞ্জের হোটেল অপারেটর সুমিত সাও নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ফোন পায়। সেই ব্যক্তি ফোনে পুলিশকে প্রকাশের ব্যাপারে জানায়। পুলিশ প্রকাশের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং তার পরিচয় নিশ্চিত করতে রানিগঞ্জে ছুটে যান। পুনর্মিলনের এই ঘটনা ঘটেছে গত মাসের ৭ তারিখে। দীর্ঘদিন পর আপনজনকে খুঁজে পেয়ে আনন্দের শেষ ছিল না পরিবারের সদস্যের। অদ্ভুতভাবে এই পুনর্মিলনের অন্যতম কারণ হলো মহাকুম্ভ (Mahakumbh Mela)।
১৫ বছর আগে প্রকাশকে হোটেলে চাকরির প্রস্তাব দিয়েছিলেন সুমিত সাও। সুমিত আরো বলেন যে, হোটেলে কুস্তিগির নামে পরিচিত প্রকাশ। সেই সময় থেকেই তিনি হোটেলেই ছিলেন এবং এখানেই কাজ করতেন। সুমিত জানান, তাঁর বাবা প্রকাশকে আশ্রয় এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছিলেন। বলা চলে একপ্রকার পরিবারের সদস্য হয়ে উঠেছিল প্রকাশ।
আরও পড়ুন: মহাকুম্ভের সঙ্গমে পবিত্র স্নান সারলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
কিন্তু আশ্চর্য ঘটনা ঘটে যায় হঠাৎ করেই, যখন তাঁর পরিবার মহাকুম্ভের তীর্থযাত্রা নিয়ে আলোচনা করছিল, প্রকাশের হারিয়ে যাওয়া স্মৃতি ফিরে আসে সেই মুহূর্তে। প্রকাশ জানান, তাকেও যেতে হবে কুম্ভমেলাতে (Mahakumbh Mela)। তার বাড়ি নাকি সেই জায়গাতে যাওয়ার পথেই পড়ে। এরপর সুমিত তাঁকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রকাশের তাঁর পরিবারের কথা মনে পড়ে যায়। সুমিত বিষয়টিকে স্থানীয় পুলিশের কাছে জানায়। পরে পুলিশের তরফে মারকাচো থানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
শুক্রবার মারকাচো থানার ওসি আনুষ্ঠানিকভাবে ৫২ বছর বয়সি প্রকাশ মাহাতোকে তাঁর স্ত্রী গীতা দেবী এবং তাঁদের সন্তান সুজল (১৮) এবং রানির (১৬) পুনরায় মিলিয়ে দেন। স্বামীকে হারিয়ে তার স্ত্রী গীতা শ্রমিকের কাজ করে একা সন্তানদের বড় করেছিলেন। এত বছর বাদে স্বামীকে ফিরে পেয়ে তিনি সত্যিই আপ্লুত। প্রকাশ যখন তার পরিবারের সঙ্গে মিলিত হয় তার ১০ দিন আগে কলকাতা পুরসভা তাঁর অনুপস্থিতিতে বকেয়া অর্থ প্রদানের বিষয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছিল। শোনা গেছে মানুষ কুম্ভমেলাতে (Mahakumbh Mela) হারিয়ে যায় কিন্তু এরকম ঘটনা এর আগে কখনো ঘটেনি।