নিজস্ব প্রতিবেদন : এক সময় ছিলেন তৃণমূলে, পরে দলের সঙ্গে বনিবনা করে নাম লেখান বিজেপিতে। বিজেপিতে এসে তার শিকেয় প্রথম বিধায়ক হওয়ার ভাগ্যে জোটে। তবে বিধায়ক হওয়ার পরে আবার গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হলে ফের ফিরে আসেন তৃণমূলে। এখানেই শুরু হয় জটিলতা।
বিজেপি থেকে বিধায়ক হয়ে তৃণমূলে নাম লেখানোর পর তার বিধায়ক পদ খারিজ করার জন্য গেরুয়া শিবির আইনি পথে হাঁটে। অন্যদিকে আবার এই জটিলতা তৈরি হয় বিধানসভার স্পিকার তাকে পিএসি চেয়ারম্যান করলে। শুভেন্দু অধিকারী বারংবার মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ এবং পিএসি চেয়ারম্যান পদ খারিজ করার জন্য সরব হন। আর এসবের পরিপ্রেক্ষিতেই মুকুল রায় বিধায়ক থাকবেন কিনা তা সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সময়সীমা বেঁধে দিল সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে যে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে তা আগামী বছরের ২১ জানুয়ারি। এই সময়ের মধ্যেই বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে জানিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। আদালতের নির্দেশ মেনে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলেও জানিয়েছেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দোপাধ্যায়। অন্যদিকে সুপ্রিমকোর্টের এই পর্যবেক্ষণকে ঐতিহাসিক বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
বিজেপি প্রার্থী হিসেবে কৃষ্ণনগর উত্তর থেকে ভোটে জয়লাভ করার পর মুকুল রায় দলত্যাগ করে তৃণমূলে নাম লেখান। এরপর পিএসি চেয়ারম্যান বেছে নেওয়ার সময় বিজেপির তরফ থেকে ছয় জনের নাম পাঠানো হয়। সেই ছয়জনের মধ্যে মুকুল রায়ের নাম ছিল না। বিধানসভার রীতি অনুসারে পিএসি চেয়ারম্যান একজন বিরোধীদলের বিধায়ককে বেছে নেওয়া হয়।
সেক্ষেত্রে বিজেপির তরফ থেকে মুকুল রায়ের নাম না দেওয়া সত্ত্বেও মুকুল রায় নিজে এই চেয়ারম্যানের দাবীদার হিসেবে নাম নথিভুক্ত করলে বিধানসভার অধ্যক্ষ তাকেই পিএসি চেয়ারম্যান করেন। এর পরেই শুরু হয় তুমুল বিতর্ক। সেই বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে বিধানসভার সব হাউস ও স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন বিজেপি বিধায়করা। পাশাপাশি মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের দাবিতে হাই কোর্টে মামলা করেন বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায়।
এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্ট অধ্যক্ষের কাছে জানতে চান তার কি সিদ্ধান্ত। তবে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। তার দাবি বিধানসভার কোন কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারে না আদালত। তবে সুপ্রিম কোর্ট এই মামলার শুনানি আগামী ২২ জানুয়ারি হবে বলে জানিয়ে দেয় এবং তার আগেই বিধানসভার অধ্যক্ষকে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বার্তা পাঠানো হয়।