নিজস্ব প্রতিবেদন : দেশ তথা রাজ্যে উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। আর এই আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি যেমন নাগরিকদের কপালে ভাঁজ ফেলছে, ঠিক তেমনি একইভাবে কপালে ভাঁজ ফেলছে প্রশাসনেরও। কারণ এই সংক্রমণের জেরে সরকারি বিভিন্ন কাজের গতি মন্থর হয়েছে। ফলে উন্নয়ন আটকে রয়েছে রাজ্যজুড়ে। তবে এমত অবস্থায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার করোনা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আশার আলো দেখালেন। মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক থেকে তিনি জানিয়েছেন, সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে। তিনি আরও জানান, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন ২০-২৫ তারিখ নাগাদ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে। আর এর পরেই তিনি জানান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে জেলায় জেলায় যাবেন প্রশাসনিক কাজকর্ম তদারকি করতে।
মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে প্রশাসনিক ভার্চুয়াল মিটিং ছিল রাজ্যের পাঁচটি জেলার। যে পাঁচটি জেলা হল বীরভূম, বাঁকুড়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান এবং পুরুলিয়া। এই প্রশাসনিক ভার্চুয়াল মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করেন জেলার জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, মন্ত্রী এবং স্থানীয় তৃণমূল নেতা-নেত্রীরা। আর এই ভার্চুয়াল মিটিং-এই মুখ্যমন্ত্রী জানান রাজ্যের ২০ লক্ষ কৃষককে কিষান ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হবে। যাদের মধ্যে ১২ লক্ষ কার্ড দেওয়ার কাজ ইতিমধ্যে হয়ে গেছে আর বাকি রয়েছে ৮ লক্ষ। আর এই ৮ লক্ষ কৃষক যাতে তাড়াতাড়ি এই কিষান ক্রেডিট কার্ড পান তার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এদিন প্রশাসনিক কর্তাদের নির্দেশ দেন করোনা দেখিয়ে কোন কাজ বন্ধ করে রাখা যাবে না। সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে বকেয়া প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত করতে হবে।
করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি নিয়ে এর আগেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, জুলাই আগস্ট মাসে রাজ্য তথা দেশে সংক্রমণের মাত্রা চরমে উঠবে। সে সময় তিনি বিশেষজ্ঞদের কথা অনুযায়ী এই কথা জানিয়েছিলেন। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছিলেন এই সময় নমুনা পরীক্ষার হার বাড়বে বলেই সংখ্যাটা বাড়বে। আর এরপর থেকেই দেখা গিয়েছে রাজ্যে লাগামছাড়া সংক্রমণ। আর এই সংক্রমণ নিয়ে সোমবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠক চলাকালীন উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে সোমবার উদ্বেগ প্রকাশ করলেও মঙ্গলবার আশা প্রকাশ করলেন পরিস্থিতির বদল নিয়ে। তিনি জানিয়েছেন, “কোভিডের ব্যাপারটা সেপ্টেম্বর মাসের ২০-২৫ তারিখ নাগাদ অনেকটাই সেটলড হয়ে যাবে। বিশেষজ্ঞরা এমনটাই বলছেন।”
এছাড়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবারের সাংবাদিক বৈঠকে করোনা রোগীদের হাসপাতাল থেকে ছাড়া নিয়ে আইসিএমআর-এর গাইডলাইন মেনে চলতে বলেছেন। আইসিএমআর-এর গাইডলাইন উল্লেখ করে তিনি জানিয়েছেন, টানা তিন দিন জ্বর না হলে কোন করোনা রোগীকে হাসপাতালে রাখা হবে না। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ দিয়েছেন এই গাইডলাইন সকলকে মানতে হবে।