নিজস্ব প্রতিবেদন : লাভপুর বিধানসভার বিধায়ক মনিরুল ইসলাম ২০১৯ সালেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু যোগ দেওয়ার পর দলীয় বিরুদ্ধাচরণের কারনে তিনি ছিলেন অন্তরালে। যদিও এমন অন্তরালে থাকা কারণ হিসেবে মনিরুল ইসলাম দাবি করেছেন শারীরিক অসুস্থতা। আর এরপর গত সপ্তাহের শুক্রবার ভোট ঘোষণা হওয়ার পরেই তাকে পা রাখতে দেখা যায় রাজ্য বিজেপি দপ্তরে। যার পরেই জল্পনা শুরু হয় প্রার্থী হওয়া নিয়ে। আর এবার সেই জল্পনাকে আরও একটু উস্কে তিনি পা রাখলেন কেষ্ট গড়ে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যাবেলায় হঠাৎ তাকে বোলপুরের বিজেপি দপ্তরে দেখা যায়। দেখা যায় বললে ভুল হবে, রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূল সরকার এবং শাসক দলের বীরভূমের একাধিক নেতা নেত্রীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে কড়া বার্তা দেন। যদিও তিনি প্রার্থী হতে চলেছেন তার সম্পর্কে কিছু মুখ খোলেননি। বরং দাবি করেন, “আমাদের লড়াইটা মানুষের স্বার্থে। লাভপুরে যে প্রার্থী হোক ৫০ হাজার ভোটে জিতবে। বোলপুরে যেই প্রার্থী হোক জান লাগিয়ে দেবো।”
এর পাশাপাশি তিনি মুসলিমদের উন্নয়ন প্রসঙ্গে কটাক্ষ করে বলেন, “কোথায় মুসলমানদের উন্নয়ন। মাথায় একটা টুপি পড়ে, মাথায় একটা পর্দা দিয়ে মুসলমানের মেয়ে সেজে মুসলমানদের পিছিয়ে দিয়েছে। চোর-ডা’কাত গু’ন্ডা বানিয়েছে। যদি রাউড়ি বানিয়েছে তাহলে সব থেকে বেশি করেছে এই সরকার। বাম আমলে থেকেও এই সরকারের আমলে মুসলমানরা অনেক পিছিয়ে গেছে। এরা মুসলমান সেজে সবথেকে বেশি মুসলিম সমাজের ক্ষতি করেছে। সহানুভূতি শিখতে হলে শিখুক মোদিজীর কাছে। মোদীজি এই ধরনের ভাওতা দেয়নি।”
পাশাপাশি তিনি নাম না করেই বীরভূমের একাধিক তৃণমূল নেতা নেত্রীদের বিরুদ্ধে কাটমানি খাওয়ার অভিযোগ তোলেন। জানান, “এখন হয়তো আইন নেই, কিন্তু আইন এলে সবাই শাস্তি পাবেন।” তার কথায়, “এত খেয়েছে সব বুড়ি হয়ে গেছে। তাদেরকে তো জেলে থাকতে হবে। এমনিতেই স্টোক হয়ে মরে যাবে। পায়খানা ফিরবে কোথায়? ওখানে তো কোমট নাই।”
[aaroporuntag]
এদিন মনিরুল ইসলাম তৃণমূলের কোন নেতার নাম না করলেও তিনি যে আকার-ইঙ্গিত দিয়েছেন তাতে রাজনৈতিক মহলের বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন তিনি বারংবার অনুব্রত মণ্ডলের কথাকেই তুলে ধরেছেন। আর এই অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে তিনি জয় ছিনিয়ে নেবেন এমন হুংকারও দিলেন এদিন। অন্যদিকে মনিরুল ইসলাম যখন বিজেপিতে যোগ দেন সে সময় অনুব্রত মণ্ডল লাভপুরের একটি সভা থেকে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছিলেন ভোটে দাঁড়ালে মনিরুলকে হারানোর।
আর এদিনও পাল্টা মনিরুলের ৫০ হাজার ভোটে জেতার দাবিকে চ্যালেঞ্জ করলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তিনি জানান, “তুলে এনে এমএলএ করেছিলাম। প্রথমবার ৩০০০ আর পরের বার ২৫০০০ ভোটে জিতে ছিলাম। আমাকে ৫০ হাজার ভোটে হারাবে? চ্যালেঞ্জ করলাম।” পাশাপাশি দুর্নীতির যে প্রসঙ্গ মনিরুল ইসলাম তুলেছেন তা নিয়ে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “লাভপুরের মানুষকে যে জিজ্ঞাসা করুন তাহলে বুঝতে পারবেন।”
আর এমন প্রেক্ষাপটে বীরভূমের লাভপুরের রাজনীতির পারদ চড়ছে বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।