Stampede in Mahakumbh: প্রয়াগরাজে বসেছে মহাকুম্ভের আসর। যা মকর সংক্রান্তির সময় থেকে ১ মাস জুড়ে চলে। তবে চলতি বছরে ১৪৪ বছর পর মহাকুম্ভ অনুষ্ঠিত হওয়ায় জনমানুষের ঢল নেমেছে ত্রিবেণী সঙ্গমে। আনাগোনা ঘটছে বহু পুণ্যার্থীর। বিশেষ বিশেষ শুভক্ষণে এতটাই ভিড় হচ্ছে যে চাপ সামাল দিতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে প্রশাসন। আর এই পরিস্থিতিতেই মৌনী অমাবস্যার সময়ে প্রয়াগরাজে ঘটে গেল এক অপ্রীতিকর ঘটনা। শুভক্ষণে পুণ্য স্নানের সময় হুড়োহুড়িতে পদপৃষ্ঠ হয়ে মৃত্যু হল বহু পুণ্যার্থীর। কিন্তু কি কারনে মৃত্যু হুড়োহুড়ি নাকি কোনো ষড়যন্ত্রের শিকার? প্রশ্ন উঠতেই সত্য ঘটনা উদঘাটনে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিলেন যোগী সরকার। এই দুঃখজনক ঘটনা নিয়ে কি বললেন তিনি?
গত বুধবার মৌনী অমাবস্যায় মহাকুম্ভে ঘটে এই শোকপূর্ণ ঘটনা। মৌনী অমাবস্যার দিন শুভক্ষণে পুণ্য স্নানের সময় হুড়োহুড়ি লেগে যায় প্রয়াগরাজে। আর সেই সময়েই পদপৃষ্ঠ (Stampede in Mahakumbh) হয়ে মৃত্যুবরণ করে ৩০ জন পুণ্যার্থী। মৃত্যুর খবর আসতেই সর্বত্র প্রশ্ন ওঠে উত্তর প্রদেশে সরকারের ব্যবস্থাপনা নিয়ে। অনেকেরই অনুমান এটা কোনো ষড়যন্ত্র হতে পারে। আবার কারো কারো দাবি এই স্থানে বোমা আছে বলে গুজব ছড়ালে হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েই পদদলিত হয় পুণ্যার্থীরা। আর এইসব প্রশ্ন, দাবি উঠতেই তদন্তের নির্দেশ দেন উত্তরপ্রদেশ সরকার যোগী আদিত্যনাথ। তিনি নির্দেশ দেন ১ মাসের মধ্যে যেন এই বিষয়ে রিপোর্ট জমা করে প্রশাসন। পাশাপাশি ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ না করে তিনি বলেন গুজবে কান না দেওয়ার কথা।
প্রসঙ্গত বুধবার সকাল থেকেই চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে প্রয়াগরাজে পুণ্যার্থীদের পদদলিত (Stampede in Mahakumbh) মৃত্যুর ঘটনা। তবে কতজনের মৃত্যু হয়েছে সেই নিয়ে প্রাথমিকভাবে সরকার তরফে কোনো কিছু জানানো হয়নি। এদিন সকালে উত্তরপ্রদেশ সরকার তরফে এটাই জানানো হয়েছিল যে বেড়া টপকাতে গিয়ে বেশ কিছু তীর্থযাত্রী আহত হয়েছেন। যা নিয়ে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিন বহুবার যোগীর সাথে ফোনালাপ চলে প্রধানমন্ত্রীর। তারপর বুধবার সন্ধ্যাবেলায় খবর আসে মৃতের সংখ্যার। জানা যায় এদিন পুণ্য স্নানে পদদলিত হয়ে মৃত্যু হয় ৩০ জনের। যে ঘটনাটি ঘটে প্রয়োগরাজের নিকটবর্তী আখড়া মার্গে।
আরও পড়ুন: মহাকুম্ভ যাত্রার জন্য কলকাতা থেকে বিশেষ ভারত গৌরব ট্রেন, ছাড়বে ২০শে ফেব্রুয়ারি
আর এই মৃত্যু সংখ্যা সামনে আসার পরই খানা তল্লাশি চালানোর নির্দেশ দেন উত্তর প্রদেশ সরকার। শোকাহত হয়ে যোগী সরকার এই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন প্রশাসনকে। বিচার বিভাগীয় কমিশনকে বলেন কি কারণে এই পদপিষ্ট (Stampede in Mahakumbh) হয়েছে তা খুঁজে বের করতে। এমন ভাবে সুপারিশ করতে বলা হয়েছে যাতে আগামীতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে। পাশাপাশি এদিন তিনি আবেগপ্রবণ হয়ে বলেন ত্রিবেণীর এই শোকপূর্ণ ঘটনা শুধুমাত্র হৃদয়বিদারক নয়, এটি একটি শিক্ষাও বটে। পাশাপাশি এদিন মৃতদের পরিবারকে ২৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন উত্তর প্রদেশ মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
প্রয়োগরাজের এই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত বেশ কিছু অফিসার। এই তদন্তের নেতৃত্বে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি হর্ষ কুমার। আছেন প্রাক্তন আইএএস অফিসার ডিকে সিং, অবসরপ্রাপ্ত ডিজিপি ভিকে গুপ্ত সহ আরো অনেকে। এই পদপিষ্ঠ হওয়ার কারণ জানতে পুলিশ তদন্ত হবে বলেও জানিয়েছেন যোগী সরকার। শুধু তাই না, চলতি বছরের মহাকুম্ভের আগামী পুণ্য স্নানের দিনগুলিতে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে তার জন্য ভিড় ব্যবস্থাপনায় বৃহস্পতিবার প্রয়াগরাজে যাবেন ডিজিপি প্রশান্ত কুমার এবং মুখ্যসচিব মনোজ কুমার সিং।