নিজস্ব প্রতিবেদন : পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই রাজ্য রাজনীতি বেশ উত্তাল হয়ে আছে। পরিযায়ী শ্রমিকরা নিজেদের পথের ক্লান্তিকে উপেক্ষা করে রাস্তার পর রাস্তা মাইলের পর মাইল হেঁটে চলে যাচ্ছেন এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে। কেউ হাঁটছেন চারশো কিমি কারোর গন্তব্য ১০০০ বা তারও বেশি। পথের মধ্যেই কেউ মারা যাচ্ছেন। কেউ হয়ে পড়ছেন অসুস্থ। কিন্তু পথ চলা থামছে না। রাজ্য সরকার কেন্দ্র সরকার পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য তাদের সাধ্যমত ব্যবস্থা করছেন। কিন্তু এই সাহায্য পাওয়ার জন্য অনেকটা সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে সেই কারণে অনেক মানুষই এই সাহায্যের আশায় বসে না থেকে হাঁটা শুরু করছেন।
এতদিন শ্রমিকদের অভিযোগ ছিল যে টিকিট দ্বিগুণ দামে বিক্রি করা হচ্ছে। তাদের কাছে যেখানে কেন্দ্র সরকার শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনের ৮৫% ভাড়া আগেই মুকুব করে দিয়েছিল। যে ১৫ শতাংশ ভাড়া শ্রমিকদের দিতে হতো সেই ক্ষেত্রে ও নানারকম দুনম্বরি চলছিল। শ্রমিকদের কাছ থেকে অনেক বেশি ভাড়া চাওয়া হচ্ছিল। এই নিয়ে কেন্দ্র রাজ্য সরকারকে দোষারোপ করে। বিরোধীপক্ষরা সরকারপক্ষের দিকে আঙ্গুল তোলে। রাজ্য রাজনীতির নানা উত্তপ্ত এই সকল আলোচনার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন যে পরিযায়ী শ্রমিকদের যাতায়াতের খরচ সরকার বহন করবে। পরিযায়ী শ্রমিকদের আর ট্রেন ভাড়া দিতে হবে না।
এখন ভিন্ন রাজ্যে আটকে পড়া বিভিন্ন শ্রমিকদের কিভাবে বাড়ি ফেরানো হবে তা নিয়ে কেন্দ্র সরকার এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে আলোচনা চলছে। তা নিয়ে অবশ্য নানা ক্ষেত্রে মতভেদ তৈরি হয়েছে।
শ্রমিক স্পেশাল যে ট্রেন রয়েছে তার জন্য কেন্দ্র সরকার একটি নতুন নির্দেশিকা জারি করল। যে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে স্বরাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করেই শ্রমিক ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেবে রেল দপ্তর।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের থেকে আরও বলা হয়েছে, রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের চাহিদা অনুযায়ী রেল দপ্তর শ্রমিকদের জন্য স্পেশাল ট্রেনের স্টপেজ নির্ধারণ করবে। অর্থাৎ শ্রমিকদের জন্য নির্ধারিত ট্রেনটি কোন কোন স্টপেজে দাঁড়াবে তা নির্ধারণ করা হবে পরিযায়ী শ্রমিকদের চাহিদা অনুযায়ী।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে শ্রমিকদের স্ক্রিনিংয়ের ব্যাপারেও এই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। এই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে সকল যাত্রী উপসর্গহীন একমাত্র তারাই ট্রেনে চাপতে পারবেন। আর রাজ্য সরকার কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং রেলওয়ে দপ্তর এরা প্রত্যেকে দায়িত্ব নিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করবে।
ট্রেন ধরার আগে ও পরে দুবার স্ক্রিনিং হবে পরিযায়ী শ্রমিকদের। ট্রেন ধরার জন্য পরিযায়ী শ্রমিকদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। গন্তব্যে পৌঁছানোর পর তাদের একবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে এবং এরপর তাদের বাড়ি ফেরানোর কী ব্যবস্থা করা হবে তা রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলই সিদ্ধান্ত নেবে।