স্কুলের রাঁধুনি অঙ্কের দিদিমণি হয়ে অবাক করে দিলেন পড়ুয়াদের

Shyamali Das

Updated on:

Advertisements

নিজস্ব প্রতিবেদন : কথায় আছে, যিনি রাঁধেন তিনি চুলও বাঁধেন। প্রচলিত এই প্রবাদকেই প্রমাণ করে দেখালেন মুর্শিদাবাদের ফারাক্কার বিশাখা পাল। আনুমানিক ৫০ ঊর্ধ্ব এই মহিলা স্কুলে রান্না করার পাশাপাশি অংকের দিদিমনি হয়ে সম্প্রতি চমকে দিয়েছেন স্কুলের শিক্ষক থেকে শুরু করে পড়ুয়াদের।

Advertisements

ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার। সেদিন অন্যান্য দিনের মতোই তিনি রান্নার জন্য পৌঁছে যান তার স্কুল ফারাক্কার নয়ন সুখ শ্রীমন্ত পাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এই স্কুলে আনুমানিক ৩৬০ জন পড়ুয়া রয়েছে। তাদের প্রত্যেকের মিড ডে মিলের খাবার তিনি রান্না করেন। রান্না করার ক্ষেত্রে তার পারদর্শিতা নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই, তবে এর পাশাপাশি তিনি যে একজন শিক্ষিকা হয়ে উঠতে পারেন তা দেখেই অবাক প্রত্যেকে।

Advertisements

বৃহস্পতিবার ওই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর পড়ুয়ারা ঠিকমতো অংক করতে না পারার কারণে তাদের শিক্ষক বকুনি দিচ্ছিলেন। সেই বকুনি শুনে বিশাখা মাসির মনে লাগে এবং তিনি পড়ুয়াদের অংক শেখানোর জন্য ক্লাসের মধ্যে প্রবেশ করেন। এরপর শিক্ষকের থেকে চক নিয়ে ধাপে ধাপে পড়ুয়াদের অংক শিখিয়ে প্রত্যেককে অবাক করে দেন।

Advertisements

এই ঘটনার সময় ওই ক্লাসে থাকা শিক্ষক সেই মুহূর্তকে তার মোবাইলে ক্যামেরাবন্দি করেন এবং পরে ফেসবুকে আপলোড করেন। শিক্ষক পরেশ দাসের ক্যামেরাবন্দি করা সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড হওয়ার পরে ভাইরাল হয়ে যায়। মূলত শুক্রবার সকাল থেকে এই ভিডিও ঝড়ের গতিতে ছুটে চলেছে সোশ্যাল মিডিয়ার এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে।

বিশাখা মাসি বেশ কয়েক বছর ধরেই ওই স্কুলে মিড ডে মিলের রান্নার সঙ্গে যুক্ত। ছোট থেকে তার পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ থাকলেও আর্থিক অনটনের কারণে তিনি দশম শ্রেণীর বেশি পড়াশোনা করতে পারেন নি। তবে স্কুলে মিড ডে মিলের রান্না করার পাশাপাশি পড়ুয়াদের পড়ানো তিনি মনোযোগ দিয়ে শুনতেন বলেই জানা যাচ্ছে শিক্ষকদের সূত্রে।

শিক্ষক পরেশ দাস জানান, “বৃহস্পতিবার চতুর্থ শ্রেণীর পড়ুয়াদের অংকের ক্লাস নিচ্ছিলাম। অনেক ছাত্র-ছাত্রী ঠিকঠাক অংক করতে পারছিল না। যে কারণে তাদের একটু বকাঝকা করি। সেই সময় বিশাখা মাসি ক্লাসে এসে চক ডাস্টার নিতে চান এবং অঙ্ক শেখাতে চান। বিশাখা মাসির এই উৎসাহ দেখে আমি তার হাতে চক ডাস্টার তুলে দিই এবং দেখি দিব্যি অংক করাচ্ছেন। সেই মুহূর্তকেই ক্যামেরাবন্দি করি।”

Advertisements