পরিযায়ী শ্রমিকরা রাজ্যে ফিরলেও কোথায় ঢুকতে পারবেন আর না, জানালেন মুখ্য সচিব

নিজস্ব প্রতিবেদন : পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজেদের রাজ্যে ফেরাতে পারেন রাজ্য সরকার। বুধবারই এবিষয়ে সবুজ সংকেত দেয় কেন্দ্র। তবে এই পুরো ব্যাপারে কি কি সতর্কতা গ্রহণ করতে হবে রাজ্যগুলিকে সেগুলিও উল্লেখ করে দেয় কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।

বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা ভিডিও কনফারেন্সে সকল রাজ্যের মুখ্যসচিবকে বিষয়টি ডিটেলিং করে বলেন। এই ভিডিও কনফারেন্সের পরই এদিন বিকালে নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে আমাদের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা বলেন, “আমরা কেন্দ্রকে বলেছি, এ বিষয়ে যেন তাড়াহুড়ো না করা হয়। তাতে এতদিন মানুষ যে এত কষ্ট করে লকডাউন পালন করলেন, সে সবটাই বিফলে চলে যাবে। নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে সবটা করতে হবে।” এ ছাড়া এদিন মুখ্যসচিব আরো বলেন, “বাইরে থেকে যারাই আসুন তাদের কন্টেনমেন্ট জোনে ঢুকতে দেওয়া হবে না।”

এখন প্রশ্ন উঠছে যে পরিযায়ী শ্রমিকদের কন্টেনমেন্ট জোনে রাখা না হলে তাদের কি সরকারি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রাখা হবে? যদিও বিষয়টা এখনই খোলসা করে বলেনি নবান্ন।

রাজ্য সরকার সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আমাদের রাজ্যে কন্টেনমেন্ট জোনের সংখ্যা ৪৪৪টি। এর মধ্যে কলকাতায় এখন কন্টেনমেন্ট জোনের সংখ্যা ২৬৪টি, হাওড়ায় ৭২টি ও উত্তর ২৪ পরগনায় ৭০টি। আগামী দিনে এই জোনের সংখ্যা আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে পরিস্থিতি ইতিবাচক হলে এই সংখ্যা কমতেও পারে। সবটাই পরিস্থিতির সাপেক্ষে নির্ভর করছে। এছাড়া হুগলির শেওড়াফুলি, সিঙ্গুরের কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত, ডানকুনি পৌর এলাকার কয়েকটি ওয়ার্ড, নদিয়ার তেহট্ট, চাকদহ, ফুলিয়া, তাহেরপুরের কন্টেনমেন্ট জোন।

লোকসভায় কংগ্রেস দলনেতা অধীর চৌধুরী থেকে শুরু করে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও বিধানসভার বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী সকল বিরোধীরাই এখন একযোগে ডাক দিচ্ছেন পরিযায়ী শ্রমিকদেরকে ফিরিয়ে আনা হোক। এরকম অবস্থায় শয়ে শয়ে পরিযায়ী শ্রমিককে রাজ্যে ফিরিয়ে আনা কেন্দ্র ও রাজ্য উভয়ের কাছেই একটি বড় অগ্নিপরীক্ষার মত। হাজার হাজার শ্রমিক নানা রাজ্য থেকে ফিরে এলে তাদের রাজ্যে প্রবেশের আগে যথাযথভাবে স্ক্রিনিং করাতে হবে, করাতে হবে নমুনা পরীক্ষা ও এই বিষয়টি সত্যি জটিল ও সময়সাপেক্ষ এবং সরকারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়।কিন্তু প্রশাসনকে না জানিয়েই কেউ যদি রাজ্যে প্রবেশ করতে চান সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও জটিল দিকে মোড় নেবে।

এই কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে এদিন পরিযায়ী শ্রমিকদের উদ্দেশ্য রাজ্যের মুখ্যসচিব বলেন, “প্রশাসনকে অবগত না করেই যদি শয়ে শয়ে লোক বর্ডারে চলে এসে বলেন ‘আমরা এই রাজ্যের লোক, আমাদেরকে ঢুকতে দিন’ তাহলে কিন্তু অসুবিধে হবেই। কারণ আমাদের এক এক জন ধরে ধরে পরিকল্পনা করতে হচ্ছে।”