শর্মিষ্ঠা চ্যাটার্জী : দু’বছর যাবৎ করোনা পরিস্থিতির দাপটে সারা বিশ্ব আতঙ্কে শিহরিত হয়ে দিন কাটাচ্ছিল। সারা বিশ্ব তথা ভারতেও বিশেষজ্ঞদের একটাই প্রধান চিন্তা হয়ে দাঁড়িয়েছিল কিভাবে এই অতিমারি থেকে মুক্তি মিলবে জনজাতির।
নিত্যনতুন গবেষণার ফল হিসেবে এই ভাইরাসের সাথে লড়তে কখনও ইনজেকশন কখনও আবার ওষুধ প্রয়োগ চলছে। তবে এই প্রথমবার বাড়িতে খাওয়া যাবে করোনার ওষুধ প্রথম ভারতে অনুমোদন পেলো। যদিও আগেই বিশ্বের একাধিক দেশে Molnupiravir অনুমোদন পেয়েছে কিন্তু ভারতে এই প্রথম।
এবার জেনে নেওয়া যাক Molnupiravir আসলে কি ওষুধ? পূর্বে আমেরিকা, ব্রিটেন সহ নানা দেশে ইতিমধ্যেই এই ওষুধের ব্যবহার চালু হয়েছে। এই বিশেষ ওষুধটি যেকোনো উপসর্গের ক্ষেত্রেই প্রয়োগ করা যাবে রোগীর ওপর। তবে এক্ষেত্রে কেবলমাত্র প্রাপ্তবয়স্করাই এই ওষুধ নেওয়ার যোগ্য। রোগীর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ৯৩ শতাংশের নিচে নেমে গেলে চিকিৎসকের অপারেশন মতো এই ওষুধ নিতে হয়। প্রয়োগের ফলে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়।
ওষুধ খাওয়ার ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট বয়সসীমার সাথে সাথে কিছু নিয়ম রয়েছে। অনূর্ধ্ব ১৮ রা এই ওষুধ খেতে পারবেন না। যদি রোগীকে তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে তবে সেক্ষেত্রে এই ওষুধ প্রয়োগ করা যাবেনা। আক্রান্ত ব্যক্তি বাড়িতে থাকলে দিনে দু বার Molnupiravir নিতে পারবেন তবে মনে রাখতে হবে দুটি ওষুধ নেওয়ার ক্ষেত্রে মাঝে ১২ ঘণ্টার সময় ব্যবধান থাকা জরুরি।
প্রসঙ্গত বলে রাখা ভালো, ১৮ বছরের কম কেউ এই ওষুধ খেতে পারবেন না। বিশেষজ্ঞদের মতে এই ওষুধ হাড়ের বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে তাই শিশুদের জন্য এই ওষুধ প্রয়োগ করা উচিত নয়। সন্তানসম্ভবা মহিলাদের জন্যও এই ওষুধ ক্ষতিকারক। বাচ্চার ওপর প্রভাব পড়তে পারে তাই এই ওষুধ প্রয়োগ করা যাবেনা।
ইউএস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের থেকে প্রাপ্ত নির্দেশ অনুযায়ী, করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত এই ওষুধ প্রয়োগ করা যায়না। রোগীর দেহে উপসর্গ দেখা দেওয়ার পাঁচ দিনের মধ্যে এই ওষুধ খাওয়া সবথেকে ভালো। এই ওষুধের ক্ষেত্রে একটি বাড়তি সুবিধা হলো যেকোনো ভ্যারিয়েন্ট এর ক্ষেত্রেই এই ওষুধ কার্যকর হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। মার্কিন সংস্থা মার্ক এন্ড রিজব্যাক বায়োথেরাপিউটিকস প্রথম এই ওষুধ বাজারে নিয়ে এসেছিলেন।