নিজস্ব প্রতিবেদন : ব্যবসা করতে হলে টাকা দিতে হবে আর সেই টাকার পরিমাণ ২ লাখ টাকা। এমনই বিপুল পরিমাণ টাকা কাটমানি (Money Extortion by TMC) হিসাবে এক ব্যবসায়ীর থেকে দাবি করলেন বীরভূম জেলা পরিষদের এক সদস্য সহ তৃণমূলের বেশ কয়েকজন। ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে ওই ব্যবসায়ী থানা থেকে শুরু করে এসপির দ্বারস্থ হয়েছেন। রীতিমত ছোটাছুটি শুরু হয়েছে তার।
যে ব্যবসায়ীর সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটেছে তিনি বীরভূমের আহমেদপুরের বড়বাজার এলাকার বাসিন্দা অমিতাভ ঘোষ। তার একটি অ্যাস ব্রিক ফ্যাক্টরি রয়েছে। ওই ব্যবসায়ীর থেকে ২ লক্ষ টাকা দাবি করার অভিযোগ উঠেছে বীরভূম জেলা পরিষদের সদস্য বিশ্বনাথ দাসের বিরুদ্ধে। এছাড়াও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে তৃণমূল নেতা রাজিব ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে সুশান্ত দাস, সুরেশ দাস, সোম অঙ্কুর সহ আরও বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে।
অমিতাভ ঘোষের অভিযোগ, ব্যবসা করার ক্ষেত্রে হামেশায় নানান ধরনের কাটমানি ঝঞ্ঝাট রয়েছে। এরই মধ্যে গত ১৪ আগস্ট সুশান্ত দাস তাকে ফোন করে তার এবং বিশ্বনাথ দাসের সঙ্গে দেখা করতে বলেন। দেখা করার পর তারা তার থেকে ২ লক্ষ টাকা দাবি করেন এবং যদি টাকা না দেওয়া হয় তাহলে ব্যবসা বন্ধের পাশাপাশি তার সঙ্গে যা খুশি করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। এই হুমকির পাশাপাশি এলাকার তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি রাজিব ভট্টাচার্যের নাম করেও হুমকি দেওয়া হয়।
ঘটনার পর তিনি আহমেদপুর ফাঁড়িতে বিষয়টি জানালে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি বলেও অভিযোগ। পরবর্তীতে তিনি সাঁইথিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। যে অভিযোগ দায়ের করা হয় ৫ সেপ্টেম্বর। এই অভিযোগের পাশাপাশি তিনি বীরভূম জেলা পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হন এবং সেখানেও বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানান। ঘটনার পর থেকেই ওই ব্যবসায়ী রীতিমতো আতঙ্কে রয়েছেন। কেননা এরই মধ্যে কয়েকজন দুষ্কৃতী তার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বলে দাবি তার।
আরও পড়ুন : Sangita Sandip Villa: সঙ্গীতা সন্দীপ ভিলার মালিকই নন সন্দীপ ঘোষ, রেখেছেন অন্যজনের নামে
অন্যদিকে এমন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহা জানিয়েছেন, “তোলাবাজি আর তৃণমূল সমার্থক শব্দ। যার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করা হচ্ছে তিনি সবে সবে বীরভূম জেলা পরিষদের সদস্য হয়েছেন আর তার জন্য ২ লক্ষ টাকা তোলা চেয়েছেন। ওদের দলের নির্দেশ রয়েছে ৭৫ শতাংশ টাকা দিয়ে ২৫ শতাংশ টাকা নিজের কাছে রাখতে পারবেন।”
অন্যদিকে এমন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূলের তরফ থেকে মলয় মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “প্রশাসনের কাছে গেলে প্রশাসন অবশ্যই নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করবে। অন্যদিকে আমরা দলগতভাবে বিষয়টি দেখব আর যদি সত্যিই ঘটে থাকে তাহলে দল নিশ্চয়ই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।” পুলিশ প্রথমে অভিযোগ নেয়নি এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি জানিয়েছেন, “পুলিশ তো প্রথমে তদন্ত করে দেখবে। যদি দেখে সত্যিই অভিযোগের সর্বত্তা রয়েছে তাহলে অবশ্যই অভিযোগ নেবে। তবে কোন বিজেপি নেতা কি বলল তা নিয়ে কিছু এসে যায় না। কারণ বিজেপি এখন ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করছে।”